শিরোনাম

রমজানের শেষ দশক নাজাতের

Views: 49

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক : পবিত্র রমজানের শেষভাগে উপনীত আমরা। এই দশককে নাজাত বা মুক্তির দশক হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে হাদিসে। রমজানের শেষ ১০ দিনের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। কারণ এই দশকেই রমজানে প্রকৃত প্রাপ্তি নিশ্চিত হয়। এই দশকের বিজোড় কোনো রাতে লাইলাতুল কদর হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।

এই দশকের গুরুত্বপূর্ণ আমল ইতেকাফ। আল্লাহকে পাওয়ার জন্য এই আমলের কোনো বিকল্প নেই। এই দশকেই আদায় করা হয় সদকাতুল ফিতর। অনেকে রমজানের শেষ দশকে জাকাতও আদায় করে থাকেন। রহমত, বরকত ও মাগফেরাতের বার্তা নিয়ে আসা রমজানুল মোবারকের প্রকৃত প্রতিদান এই দশকেই বুঝিয়ে দেওয়া হয়। এ জন্য আগের দুই দশকের তুলনায় শেষ দশকটি অধিক গুরুত্বপূর্ণ। আমলের ক্ষেত্রে সারা মাসে যেসব ঘাটতি রয়েছে, সেটা এই দশকে পূরণ করা সম্ভব।

নবী করিম (সা.) রমজানের শেষ ১০ দিনের ব্যাপারে খুবই গুরুত্ব দিতেন। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি রমজানের তৃতীয় দশকে এমন কঠোর পরিশ্রম করতেন, যা অন্য সময়ে করতেন না, (মুসলিম)।  হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রতি রমজানে ১০ দিন ইতেকাফ করতেন। কিন্তু যে বছর তিনি ইন্তেকাল করেছেন, সে বছর ২০ দিন ইতেকাফ করেন (বুখারি)। জয়নব বিনতে উম্মে সালমা (রা.) বলেন, রমজানের যখন ১০ দিন বাকি থাকত তখন রাসুলুল্লাহর (সা.) পরিবারের যে কেউ নামাজে দাঁড়াতে সক্ষম হলে তাকে তিনি নামাজে দাঁড় না করিয়ে ছাড়তেন না (তিরমিজি)।  নবীজি রমজানের শেষ দশকে সারাবছরের তুলনায় অনেক বেশি ইবাদত করতেন এবং পরিবারবর্গকেও ইবাদতের প্রতি উৎসাহ দিতেন।

রমজানের শেষ দশকে যথাসম্ভব বেশি ইবাদত করতে হবে। বিশেষত, এই দশকের বিজোড় রাতগুলোতে রমজানের অন্যান্য রাতের তুলনায় বেশি বেশি ইবাদত, নফল নামাজ, তাসবিহ-তাহলিল ও কোরআন তেলাওয়াত করা প্রয়োজন। ২৭ রমজানের রাতকে সম্ভাব্য শবেকদর ধরে ইবাদত-বন্দেগি করা হলেও অন্যান্য বিজোড় রাতে শবেকদর হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

এ জন্য অন্তত এশা ও ফজরের নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করা গেলেও সারারাত নামাজ পড়ার সমান সওয়াব পাওয়া যাবে। হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি এশা ও ফজর জামাতের সঙ্গে পড়ল, সে যেন সারারাত দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ল (মুসলিম)।
রমজানে জামাতে নামাজ পড়ার ব্যাপারে আন্তরিক হতে হবে। এ ছাড়াও প্রতি রাতে তাহাজ্জুদ পড়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ আমল। আট রাকাত না পারলে চার রাকাত। তাও সম্ভব না হলে অন্তত দুই রাকাত তাহাজ্জুদ যেন বাদ না পড়ে। পাশাপাশি এই দশকে বেশি বেশি দোয়া করা ও আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। এই মাসে প্রতিমুহূর্তে আল্লাহর রহমতের ধারা প্রবাহিত হতে থাকে। কখন যে দোয়া কবুল হবে, কেউ বলতে পারে না। এই দশকে দান-সদকাও বেশি বেশি করতে হবে। কেননা, এই মাসে এক টাকা দান করলে ৭০ টাকা দানের সওয়াব পাওয়া যায়।

পবিত্র রমজানের সর্বোচ্চ প্রাপ্তি নিশ্চিত করার চেষ্টা থাকতে হবে। পাশাপাশি নিজের পাপরাশি ক্ষমা করিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে হতে হবে আন্তরিক। তবেই নিশ্চিত হবে রমজানের প্রাপ্তি।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *