পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: পটুয়াখালী জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের বরিশাল বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল ও বাংলাদেশের একটি উপকূলীয় জেলা। অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত পটুয়াখালী বরিশাল বিভাগের একটি সম্ভাবনাময় জেলা। পর্যটন নগরী কুয়াকাটা এ জেলার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ। এখানে রয়েছে একসাথে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার অপরূপ দৃশ্য যা বিশ্বে বিরল। তাই পর্যটকদের কাছে পটুয়াখালী “সাগরকন্যা” নামে পরিচিত। উপজেলা সংখ্যানুসারে পটুয়াখালী বাংলাদেশের একটি“এ”শ্রেণীভুক্ত জেলা। মেঘনা নদীর অববাহিকায় পললভূমি এবং কিছু চরাঞ্চল নিয়ে এই জেলা গঠিত। পটুয়াখালী জেলা শহর একটি পূর্নাঙ্গ প্রশাসনিক অঞ্চল। এই জেলায় বিভিন্ন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজসহ আছে প্রচুর সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। পাকিস্তান আমলে ১৯৬৯ সালে পটুয়াখালী মহুকুমাকে একটি জেলায় উন্নীত করা হয়। দেশের সর্ববৃহৎ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, তৃতীয় বৃহৎ সমুদ্র বন্দর পায়রা বন্দর, সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা, দক্ষিণাঞ্চলের সর্বপ্রথম বিশ্ববিদ্যালয় পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, শেখ হাসিনা সেনানিবাস সহ এশিয়ার প্রথম পানি জাদুঘর পটুয়াখালী জেলায় অবস্থিত।
তাই এই ঈদের লম্বা ছুটি কিংবা ঝটিকা সফরের জন্য বেছে নেওয়া যেতে পারে পটুয়াখালী।
দর্শনীয় স্থান :
১/ কুয়াকাটা
স্থান :- পটুয়াখালী
কিভাবে যাওয়া যায় :- ঢাকা থেকে সরাসরি একাধিক পরিবহনের গাড়ীতে গাবতলী কিংবা সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে কুয়াকাটায় আসতে পারবেন। এছাড়া যে কোন স্থান থেকে রেন্ট-এ-কার যোগেও আসতে পারেন। লঞ্চের উঠে সকালের মধ্যে পটুয়াখালী কিংবা কলাপাড়া নেমে রেন্ট-এ-কার যোগে বা পটুয়াখালী-কুয়াকাটা রুটের বাসে চড়ে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা পৌঁছাতে পারেন। ঢাকা থেকে উল্লেখিত রুট সমূহের লঞ্চ গুলো বিকাল ৫ থেকে সন্ধ্যা ৭ টার মধ্যে লঞ্চ ঘাট ত্যাগ করে থাকেন।
বিস্তারিত :- অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি সাগর কন্যা কুয়াকাটা। একই স্থানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় ওসূর্যাস্ত অবলোকন করার মনোমুগ্ধকর পর্যটন স্পট। বঙ্গোপসাগরের ১৫ কিলোমিটারদৈর্ঘ্যের বিশাল সমুদ্র সৈকত পৃথিবীর বিরল। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষাসহ সকলঋতুতেই মৌসুমী পাখিদের কলরবে মুখোরিত থাকে সমুদ্রতট। একমাত্র কুয়াকাটা পর্যটন কেন্দ্রে এসেই প্রকৃতির সৃষ্ট সাগরের নানা রূপ বিভিন্ন ঋতুতে উপভোগ করা সম্ভব। তাইতে দেশ-বিদেশের অসংখ্য পর্যটন পিপাসুরা বছরের বিভিন্ন ঋতুতে বার বার ছুটে আসে কুয়াকাটায়। কৃত্রিমতার কোন ছাপ নেই এখানে। সে কারণেই পর্যটকরা কুয়াকাটায় এসে প্রকৃতির নিয়মের সাথে নিজের মনকে একাকার করে। প্রকৃতির স্বাদ নিজ উপলব্ধিতে আত্মস্ত করতে মরিয়া হয়ে উঠে। বিজড়িত দৃশ্য, যা পর্যটকদের আকর্ষণ করে। একই স্থানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তেরদৃশ্য অবলোকন করা ছাড়াও রাখাইন সম্প্রদায়ের প্রায় দুইশত বছরের পুরানোঐতিহ্য শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহারে প্রতিষ্ঠিত অপতার “গৌতম বুদ্ধের” বিশাল আকৃতির মূর্তিসহ শ্বেত পাথরের নির্মিত ছোট-বড় অসংখ্য মূর্তি রয়েছে। আরাকান রাজ্য থেকে বিতারিত হয়ে আসা রাখাইন সম্প্রদায়ের লোকেরা তাদের রাজা মং এর নেতৃত্বে সাগর পাড়ি দিয়ে প্রথমে চট্রগ্রাম এবং পরে পটুয়াখালীর এ জঙ্গলাকীর্ণ এলাকায় তাদের বসতি স্থাপন করে। নিজস্ব ঐতিহ্য ও কৃষ্টে গড়ে তোলে নিজেদের আবাসস্থল। তৎকালীন সরকার রাখাইন সম্প্রদায়ের সদস্যদের ওই সময় ৩একর এবং তাদের নিজস্ব পল্লীব জন্যে ১২ একর করে সম্পত্তি প্রদান করেন। এখনও তাদের ঐতিহ্যবাহী কলাপাড়ায় বিদ্যমান আছে।
২/ কুয়াকাটার কুয়া
স্থান :- পটুয়াখালী জেলার কলাপারা উপজেলায়।
কিভাবে যাওয়া যায় :– কুয়াকাটা থেকে ভ্যানে বা পায়ে হেটে ।
বিস্তারিত :- কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতের কাছে রাখাইন পল্লী কেরানীপাড়ার শুরুতেই একটা বৌদ্ধ মন্দিরের কাছে রয়েছে প্রাচীন কুপ গুলোর মধ্যে একটি কুপ। তবে বারবার সংস্কারের কারণে এর প্রাচীন রূপটা এখন আর খুঁজে পাওয়া যায় না। জনশ্রুতি আছে ১৭৮৪ সালে বর্মী রাজা রাখাইনদের মাতৃভূমি আরাকান দখল করলে বহু রাখাইন জায়গাটি ছেড়ে নৌকাযোগে আশ্রয়ের খোঁজে বেড়িয়ে পড়েন। চলতি পথে তারা বঙ্গোপসাগরের তীরে রাঙ্গাবালি দ্বীপের খোঁজ পেয়ে সেখানে বসতি স্থাপন করেন। সাগরের লোনা জল ব্যবহারের অনুপযোগী বলে মিষ্টি পানির জন্য তারা এখানে একটি কূপ খনন করেন। এরপর থেকে জায়গাটি ‘কুয়াকাটা’ নামে পরিচিতি পায়।
৩/ কেরানীপাড়া রাখাইনপল্লী
স্থান :- পটুয়াখালী জেলার কলাপারা উপজেলায়।
কিভাবে যাওয়া যায় :– কুয়াকাটা থেকে বাইকে বা ভ্যানে
বিস্তারিত :- সীমা বৌদ্ধ মন্দির থেকে সামনেই ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী রাখাইনদের আবাসস্থল কেরানীপাড়া। এখানকার রাখাইন নারীদের প্রধান কাজ কাপড় বুনন। রাখাইনদের তৈরি শীতের চাদর বেশ আকর্ষণীয়। শীত মৌসুমে পোশাক তৈরির ধুম পড়ে কুয়াকাটার রাখাইন পল্লীগুলোতে। দিন-রাত পরিবারের সবাই মিলে মনের মাধুরী মিশিয়ে তৈরি করে বাহারি ডিজাইন ও নানা রঙের পোশাক। আর এই পোশাক কিনতে ভিড় করে বেড়াতে আসা পর্যটকরা।
৪/ ক্র্যাব আইল্যান্ড
স্থান :- পটুয়াখালী জেলার কলাপারা উপজেলায়।
কিভাবে যাওয়া যায় :– কুয়াকাটা থেকে বাইকে
বিস্তারিত :- কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের পূর্ব দিকে গঙ্গা-মতির জঙ্গল ছাড়িয়ে আরও সামনে গেলে আছে ক্র্যাব আইল্যান্ড বা কাঁকড়ার দ্বীপ। এ জায়গায় আছে লাল কাঁকড়ার বসবাস। নির্জন পরিবেশে দূর থেকে লাল কাঁকড়ার দলের আনাগোনা দেখলে সৈকতে লাল গালিচা পাতা আছে ভেবে ভুল হয়। ভ্রমণ মৌসুমে (অক্টোবর-মার্চ) কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে স্পিড বোটে যাওয়া যায় ক্রাব আইল্যান্ডে।
৫/ গঙ্গা-মতির জঙ্গল
কিভাবে যাওয়া যায় :- কুয়াকাটা থেকে বাইকে বা ভ্যানে
বিস্তারিত :- কুয়াকাটার সমুদ্র সৈকত শেষ হয়েছে পূর্ব দিকে গঙ্গা-মতির খালে। এখান থেকেই শুরু হয়েছে গঙ্গা-মতির জঙ্গল। অনেকে একে গজমতির জঙ্গলও বলে থাকেন। উল্লেখ্য যে, কুয়াকাটা যে অংশ থেকে সূর্যোদয় সবচেয়ে ভালো দেখা যায়, তাহলো এই গঙ্গামতির বাঁক। নানান রকম বৃক্ষরাজি ছাড়াও এ জঙ্গলে রয়েছে বিভিন্ন রকম পাখি, বন মোরগ-মুরগি, বানর ইত্যাদি।
৬/ চর বিজয়
স্থান :- পটুয়াখালী জেলার কলাপারা উপজেলার কুয়াকাটাতে ।
কিভাবে যাওয়া যায় :- কুয়াকাটা থেকে ট্রলারে
বিস্তারিত :- কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এর গঙ্গামতী থেকে দক্ষিণ-পূর্ব কোণে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে গভীর সাগরে জেগে উঠা মনোমুগ্ধকর এক দ্বীপ চর বিজয়। দ্বীপটির আয়তন আনুমানিক ৫ হাজার একর। লাল কাঁকড়া আর হাজারো অতিথি পাখির বিচরণে আকাশ আর চর মিলে একাকার হয়ে থাকে এই দ্বীপ। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে এই চরের নামকরন করা হয় চর বিজয়; যা স্থানীয়দের কাছে হাইরের চর নামেও পরিচিত।
বছরের ৬ মাস জেগে থাকে এই চর। মূলত এ চরে জেলেদের অস্থায়ী বসবাস। চর বিজয়ের চারপাশে জেলেরা মাছ শিকার করেন। তারা তিন মাসের জন্য চরে অস্থায়ী আবাস তৈরী করে মাছের শুঁটকি প্রস্তুত ও বিক্রি করেন। কুয়াকাটা থেকে মাত্র দেড় ঘণ্টায় এই অনিন্দ সুন্দর বিজয় দ্বীপে পৌঁছানো যায়।
৭/ মিশ্রিপাড়া বৌদ্ধ মন্দির
স্থান :- পটুয়াখালী জেলার কলাপারা উপজেলায়।
কিভাবে যাওয়া যায় :- কুয়াকাটা সৈকত থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায় রাখাইনদের একটি গ্রামের নাম মিশ্রিপাড়া।
বিস্তারিত :- কুয়াকাটা সৈকত থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায় রাখাইনদের একটি গ্রামের নাম মিশ্রিপাড়া। এখানে রয়েছে বড় একটি বৌদ্ধ মন্দির। কথিত আছে, এ মন্দিরের ভেতরে রয়েছে উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় বুদ্ধ মূর্তি। এছাড়া এখান থেকে সামান্য দূরে আমখোলা গ্রামে রয়েছে এ অঞ্চলে রাখাইনদের সবচেয়ে বড় বসতি।
৮/ পানি জাদুঘর
স্থান :- কলাপাড়া উপজেলায় কুয়াকাটা-ঢাকা মহাসড়কের পাশে
কিভাবে যাওয়া যায় :- কলাপাড়া উপজেলায় কুয়াকাটা-ঢাকা মহাসড়কের পাশে পাখিমারা নামক জায়গায়
বিস্তারিত :- নদী ও পানিসম্পদ রক্ষায় জনসচেতনাতা বৃদ্ধের উদ্দেশ্য নিয়ে ২০১৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলায় কুয়াকাটা-ঢাকা মহাসড়কের পাশে একটি দ্বিতল ভবনে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম পানি জাদুঘর যাত্রা শুরু করে। একশন এইড নামের এনজিও কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত এই জাদুঘরে বাংলাদেশের নদী-কেন্দ্রিক মানুষের জীবন-জীবিকা ও সংস্কৃতি, বাংলাদেশের সকল হারিয়ে যাওয়া ও বর্তমান নদ-নদীর পরিচিতি, ছবি, নদীর ইতিহাস এবং নদীর ভবিষ্যৎ সম্পর্কিত তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। পানি জাদুঘরে যমুনা, বুড়িগঙ্গা, পদ্মা, আন্ধারমানিক, মেঘনাসহ ৯০ টির অধিক নদীর পানির নমুনা সংরক্ষিত আছে।
৯/ ফাতরার বন
স্থান :- পটুয়াখালী জেলার কলাপারা উপজেলায়।
কিভাবে যাওয়া যায় :- কুয়াকাটা থেকে ট্রলারে।
বিস্তারিত :- আন্ধারমানিক নদীর মোহনার পশ্চিম দিকে রয়েছে সুন্দরবনের শ্বাসমূলীয় বনাঞ্চল, নাম তার ফাতরার বন যা বইয়ের ভাষায় টেংরাগিরি বনাঞ্চল নামেও পরিচিত। ভৌগোলিকভাবে বরগুনা জেলায় বাগানটির অবস্থান থাকলেও কুয়াকাটায় আগত পর্যটকরা বিনোদনের জন্য সেখানে ট্রলার যোগে যাতায়াত করেন। তবে সুন্দরবনের অংশ হলেও এ বনে নেই তেমন কোন হিংস্র প্রাণী। দিনে দুইবার এটি জোয়ার- ভাটায় প্লাবিত হয়। জোয়ার- ভাটার উপস্থিতির কারণে, বনে সুন্দরি, কেওড়া, বাইন, গোলপাতা সহ দেখা মিলবে আরো বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষের। ভাগ্য সহায় হলে দেখা মিলবে অজগর, গোখরা গুই সাপের মতো সরীসৃপের। এছাড়া ছোট বড় বিভিন্ন প্রজাতির পাখির ডাকে বিমোহিত হওয়ার সুযোগতো রয়েছেই। বন মোরগ, বানর আছে এ বনে। কদাচিৎ এ বনে বুনো শুকরেরও দেখা মেলে। কুয়াকাটা থেকে ফাতরার বনে যেতে হবে ইঞ্জিন নৌকাযোগে।
১০/ শুঁটকি পল্লী
স্থান :- পটুয়াখালী জেলার কলাপারা উপজেলায়।
কিভাবে যাওয়া যায় :- কুয়াকাটা থেকে বাইকে।
বিস্তারিত :- কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের ৭ কিলোমিটার পশ্চিম প্রান্তে আছে শুঁটকি পল্লী। এখানে প্রচুর জেলেদের বসবাস। মূলত নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত এখানে চলে শুঁটকি তৈরির কাজ। সমুদ্র থেকে মাছ ধরে এনে সৈকতেই শুঁটকি তৈরি করেন জেলেরা। কম দামে ভালো মানের শুঁটকিও কিনতে পাওয়া যায় এখানে। পর্যটকরা তাজা মাছ কেটে শুঁটকি-জাত করার দৃশ্য দেখতে ভিড় জমায়। অবলোকন করে জেলেদের ইলিশ শিকারে সাগরের ঢেউয়ের সঙ্গে মিতালি করা জীবন জীবিকার যুদ্ধ। দেখতে পায় বেড় জালে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ শিকারের অনন্য দৃশ্য।
কোথায় থাকবেন?
থাকার হোটেল, খাবার হোটেল আর দর্শনীয় স্থানগুলো প্রায় একটি নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে অবস্থিত। ৪০০ টাকা থেকে শুরু করে প্রায় ১০ হাজার টাকা মানের অনেক থাকার হোটেল আছে কুয়াকাটা সাগর সৈকতের একদম কাছে। আর খাবার হোটেলগুলোর প্রায় সবগুলোই সৈকত থেকে মাত্র ২-৩ মিনিটের হাঁটা পথ।
আরো পড়ুন : সারা বছরই মুখর থাকে ইয়ার উদ্দীন দরবার