শিরোনাম

শেষ দিকে ক্ষতির মুখে বাউফলের তরমুজ চাষিরা

Views: 58

পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: রমজানের প্রথমে বাজার দর ভালো পেতে আগে ভাগে অপরিপক্ব পাকা, আধা পাকা তরমুজ বাজারজাত করছে চাষিরা। রমজানে তরমুজের চাহিদা বাড়ায় তরমুজের দাম ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যায়। ফলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তরমুজের দাম ক্রয় ক্ষমতার নাগালে না আসা পর্যন্ত তরমুজ বয়কটের ডাক দেন ভোক্তারা।  ব্যাপক সাড়াও মেলে তাতে। ফলে তরমুজের চাহিদা কমে যাওয়ায় বাজার দর পড়ে যায়। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ৬ শতাধিক তরমুজ চাষি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আগের তুলনায় তরমুজের আবাদ বেড়েছে পটুয়াখালীর বাউফলের চন্দ্রদ্বীপের চরকচ্ছবিয়া, চরওয়াডেল, রায়সাহেবে, চরঈশান, মমিনপুর, বাসুদেবপাশা, চরশৌলাসহ বিভিন্ন চরে।

আরো পড়ুন : গলাচিপায় ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব

কালাইয়া শৌলা চরে প্রায় ১৮ একর জমি লিজ নিয়ে করা তরমুজ চাষি শৌলা গ্রামের বাদল গাজী (৩০) জানান, এবার ১৮ একর জমিতে তরমুজের চাষ করেছি। ক্ষেত তৈরি, বীজ, সার-ওষুধ, বছর হিসেবে জমি কেনা, পরিবহনসহ আগের তুলনায় সবকিছুর দাম বেড়েছে হু-হু করে। ফলে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৮ একর জমিতে তরমুজ চাষে আমার ২০ লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়েছে। এ পর্যন্ত তরমুজ বিক্রি হয়েছে ১২-১৩ লাখ টাকার মতো। মাঠে যা আছে তাতে আরো ২-১ লাখ টাকা হাতে পেতে পারি। সবমিলিয়ে আমার ৫ লাখ টাকা ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।

তিনি আরো বলেন, আমাদের এখনকার উৎপাদিত তরমুজ চলে যায় রাজশাহী, বগুড়া, ঝিনাইদহ, নাটোর, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ এলাকায়। ওখানের নিয়মানুযায়ী আমার ক্ষেতের ১০-১২ কেজি ওজনের তরমুজ কেজি হিসেবে ৫০-৬০ টাকা দরে, মধ্যম মানের ৮-১০ কেজি ওজনের তরমুজ কেজি হিসেবে ৩০-৩৫ টাকা ও ছোট মানের তরমুজ ১৮-২৫ টাকা কেজি হিসেবে বিক্রি শুরু হইছিল। অন্যান্য এলাকার আড়তে দেড়শ’ থেকে ২শ’ টাকা পিস হিসেবেও বিক্রি হয়।

চাষিদের দাবি, মধ্যস্বত্বভোগীদের মুনাফাখোরি মানসিকতা বদলাতে হবে। দাম চড়িয়ে ভোক্তাদেরও বঞ্চিত করা যাবে না। এক শ্রেণির ব্যবসায়ীরা বাজারে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করেছেন। কৃষিতে একমাত্র তরমুজ চাষেরই দায়ভার সরকার নেয় না। দুঃসময়ে চাষিদের পাশে থাকতে হবে।

উপজেলা কৃষি অফিস থেকে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় মোট ৩ হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে তরমুজ আবাদ হয়েছে। গত বছরের চেয়ে ৩৮৯ হেক্টর জমিতে বেশি আবাদ হয়েছে।

বাউফল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অনিরুদ্ধ দাস বলেন, চাষিরা বেশি লাভের আশায় পরিপক্ব তরমুজ বাজারজাত করেছে। এতে ভোক্তারা তরমুজের স্বাদ থেকে বঞ্চিত হওয়ায় ক্রেতা কমে গেছে। ফলে তরমুজের চাহিদা কমে যায়। এ কারণে দামও কমে যাওয়ায় চাষিরা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে কৃষি কর্মকর্তারা সবসময়ই চাষিদের খোঁজখবর নিচ্ছে।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *