প্রসঙ্গত, ফিলিস্তিন ইস্যুতে ইসরায়েলের সঙ্গে চরম দ্বন্দ্ব রয়েছে ইরানের। সেই দ্বন্দ্ব আরও ব্যাপকভাবে বেড়েছে গত ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান শুরুর পর থেকে।
চলমান এই বৈরীতার মধ্যেই গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি দূতাবাসে বোমা হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। এতে নিহত হন ১৩ জন। নিহতদের মধ্যে ইরানের সামরিক বাহিনীর এলিট শাখা ইসলামিক রেভোল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) দুই জ্যেষ্ঠ কমান্ডার মোহাম্মদ রেজা জাহেদী এবং মোহাম্মদ হাদি হাজি রাহিমিও ছিলেন।
হামলার দায় এখন পর্যন্ত ইসরায়েল স্বীকার করেনি। তবে সাক্ষ্য-প্রমাণ যা পাওয়া গেছে,তাতে হামলাটি যে আইডিএফ করেছিল— তা পরিষ্কার।
গত সপ্তাহে ইরানের সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছিলেন— এই হামলার জন্য ইসরায়েলকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।
তারপর শনিবার রাত ও রোববার ইসরাইলকে লক্ষ্য করে ৩ শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরানের সামরিক বাহিনী। হামলায় হতাহতের কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। বেশিরভাগ ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার আগেই ধ্বংস করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। তবে ইসরায়েলের ৯টি স্থাপনায় ইরানি ড্রোন আঘাত হানতে সফল হয়েছে বলে জানা গেছে।
সোমবার রাতে ওয়াং ই’র সঙ্গে ফোনালাপে আবদুল্লাহিয়ান নালিশ জানিয়ে বলেন, ইরানের দূতাবাসে হামলার ঘটনায় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ কোনো কার্যকর প্রতিক্রিয়া জানায়নি এবং ইরানের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলকে সতর্কবার্তা দেওয়ার জন্য ‘সংক্ষিপ্ত’ এবং ‘প্রতীকী’ এই হামলা চালিয়েছে ইরানের সেনা বাহিনী।
জবাবে ওয়াং ই বলেন, সিরিয়ায় ইরানের দূতাবাসে হামলা ঘটনায় চীন ইসরায়েলের প্রতি কঠোর নিন্দা জানিয়েছে এবং বেইজিং মনে করে, এই হামলার মধ্যে দিয়ে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘণ করেছে, যা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।
পাশাপাশি ইসরায়েলে ব্যাপক বিধ্বংসী হামলা না চালানোর জন্য ইরানের প্রশংসা করে তিনি বলেন, তেহরান যে (হামলা পরিচালনার সময়েও) সংযম হারায়নি এবং স্থানীয় ও প্রতিবেশী দেশগুলোর প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ নীতি বজায় রেখেছে, তা সত্যিই অভিনন্দনযোগ্য।
পরে চীনের সরকারি সংবাদমাধ্যম সিনহুয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওয়াং ই বলেন, ‘বেইজিং মনে করে, ইসরায়েলে ইরানের সাম্প্রতিক হামলা আসলে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নিষ্ঠুর অভিযানের ফলাফল। সেই সঙ্গে বেইজিং বিশ্বাস করে, আঞ্চলিক অস্থিরতা উসকে না দিয়েই ইরান নিজেদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে সক্ষম।’
সূত্র : এএফপি/ বিএসএফ