শিরোনাম

নিউইয়র্ক টাইমস : ইসরায়েলের পাল্টা হামলায় পদে পদে ঝুঁকি

Views: 56

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক : ইরানের নজিরবিহীন হামলার জবাব কীভাবে সর্বোচ্চ উপায়ে দেওয়া যায়– এ নিয়ে মঙ্গলবার ইসরায়েল সরকারের কর্মকর্তারা আলোচনা করেছেন। ভিন্ন ভিন্ন কৌশলগত ফলাফলের লক্ষ্যে তারা বেশ কিছু বিকল্প নিয়েও কথা বলেছেন। এর মধ্যে আছে ভবিষ্যতে একই ধরনের হামলার প্রসঙ্গ, ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা ও বৃহত্তর যুদ্ধ পরিস্থিতি মোকাবিলা।

ইসরায়েলের কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে বুধবার নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এতে বলা হয়, ইসরায়েলে ইরানের হামলা ছিল ব্যাপক। কয়েকশ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন দিয়ে এ হামলা হয়েছে। এর মাধ্যমে দীর্ঘদিনের ছায়াযুদ্ধ গতি পরিবর্তন করেছে। ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা যখন বৈঠক করছে, তখন অন্য দেশগুলো তেল আবিব ও তেহরানকে উস্কানি থেকে বিরত থাকতে বলেছে। ইরান যেসব ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছিল, তা ইসরায়েল ও তার দুই প্রধান মিত্র– যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের সৃষ্টি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ঠেকিয়ে দিয়েছে।

ইরান বলছে, ছায়াযুদ্ধের শর্ত লঙ্ঘন করেছে ইসরায়েল। এ কারণে তারা পাল্টা হামলা চালাতে বাধ্য হয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, হামলার পেছনে তেহরানের কট্টর সমর্থক ও প্রক্সি সংগঠনগুলোর চাপ ছিল। ইসরায়েলের কর্মকর্তারা জানান, তারা চান না বিষয়টি এভাবে শেষ হোক যে– তৃতীয় কোনো দেশে ইরানের স্বার্থের ওপর (মূলত সরাসরি ইরানের কর্মকর্তাদের ওপর) হামলার জবাবে তেহরান ইসরায়েলের ভূখণ্ডে হামলা চালিয়ে তা নিষ্পত্তি করুক। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী মুখপাত্র রিয়াল অ্যাডমিরাল দানিয়েল হাগেরি বলেন, তারা এ ধরনের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে থাকবেন না।

তবে বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করছেন, ইরানের সঙ্গে একটি দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ চালাতে চাইবে না ইসরায়েল। কারণ, তারা গাজায় যুদ্ধ করছে। এ অবস্থায় ইসরায়েলে যুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রিসভার সদস্যরা চান ইরানকে এমন বার্তা দিতে– এ ধরনের হামলা জবাবের বাইরে থেকে যাবে না। তবে তারা কোনো বড় ধরনের উস্কানিও চান না। ইরানের যেসব স্থানে হামলা নিয়ে ইসরায়েলের আলোচনা হয়েছে সেগুলো হলো– সিরিয়া ও ইরাকের বাইরে ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের ঘাঁটি; বিভিন্ন লক্ষ্যে গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের মাধ্যমে সাইবার হামলা ইত্যাদি। তবে গুঞ্জন আছে, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা করছে ইসরায়েল। এরই মধ্যে সেসব স্থাপনা বন্ধ করেও দেওয়া হয়েছে।

বৈঠকে মন্ত্রিসভার অন্তত দুই সদস্য অতি দ্রুত পাল্টা আঘাতের পরামর্শ দিয়েছেন। তা সত্ত্বেও তিন দিনের বৈঠকে এখনও কোনো পাকা সিদ্ধান্ত হয়নি। কারণ, পাল্টা আঘাতের জন্য ইসরায়েলের সামনে যেসব বিকল্প আছে, তার প্রতিটিতেই রয়েছে ঝুঁকি। গতকাল বুধবার তারা আবারও বৈঠকে বসেন।

যা বললেন এরদোয়ান

ইসরায়েলের ভূখণ্ডে হামলার জন্য সরাসরি তেল আবিবকেই দায়ী করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান। তিনি বলেন, নেতানিয়াহুর কারণেই ইরান এ হামলা চালিয়েছে।

তিনি বলেন, ১৩ এপ্রিল সন্ধ্যায় আমাদের হৃদয়ে যে উত্তেজনা গ্রাস করেছিল, তার জন্য প্রধানত দায়ী নেতানিয়াহু ও তাঁর নিষ্ঠুর প্রশাসন। যারা ইসরায়েলের আগ্রাসী মনোভাব সম্পর্কে কয়েক মাস ধরে নীরব ছিলেন, তারা ইরানের প্রতিশোধমূলক হামলার পরপরই নিন্দা জানিয়েছেন। কিন্তু এ ঘটনার জন্য নেতানিয়াহুকেই প্রথমে নিন্দা করা উচিত।

গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েল সরকার বিভিন্নভাবে উস্কানি সৃষ্টির চেষ্টা করেছে, যাতে পুরো অঞ্চলকে আগুনের কুণ্ডলীতে পরিণত করা যায়। ইসরায়েল দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেট ভবনে হামলা চালিয়েছে, যার মাধ্যমে তারা আন্তর্জাতিক আইন ও ভিয়েনা কনভেনশন লঙ্ঘন করেছে। একে কেন্দ্র করেই ইরান-ইসরায়েল সংঘাত শুরু হয়।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *