চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক: স্প্যানিশ লা লিগায় এবারের শিরোপা জয়ের দৌড়ে আগে থেকেই এগিয়ে ছিল রিয়াল মাদ্রিদ। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনার চেয়ে তাদের সেই দূরত্ব আরও বেড়ে গেছে। শুরুর দিকে টক্কর দিলেও বার্সার মতোই বেশ পিছিয়ে রয়েছে জিরোনাও। স্পেনের সর্বোচ্চ এই প্রতিযোগিতায় সর্বশেষ ৬ ম্যাচেই জিতেছে রিয়াল। সর্বশেষ গতকাল (শুক্রবার) একাদশে ব্যাপক পরিবর্তনের পরও রিয়াল সোসিয়েদাদকে তারা ১-০ গোলে হারিয়েছে।
এদিন তারা নেমেছিল প্রতিপক্ষ সোসিয়েদাদের মাঠে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ আছে আগামী মঙ্গলবার। তাই তো লা লিগার ম্যাচটিতে ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, জ্যুড বেলিংহ্যামসহ বেশ কয়েকজন প্রধান তারকাকে বেঞ্চে রেখেই কার্লো আনচেলত্তি একাদশ সাজান। এর আগে ক্লাসিকোয় বার্সেলোনাকে ৩-২ গোলে হারানোর ম্যাচ থেকে সোসিয়েদাদের বিপক্ষে ৯টি পরিবর্তন করে রিয়াল। তাই হয়তো দাপুটে অবস্থান থেকেও কিছুটা পিছিয়ে ছিল সফরকারীরা।
রিয়ালের হয়ে এদিন একমাত্র গোলটি করেছেন ‘তুরস্কের মেসি’খ্যাত তরুণ ফুটবলার আর্দা গুলার। এই মিডফিল্ডার খুব বেশি ম্যাচটাইম পাচ্ছিলেন না সাম্প্রতিক সময়ে, এই ম্যাচে যে তাকে খেলানো হবে সেটি আগেই জানিয়েছিলেন আনচেলত্তি। গোল পাওয়া ছাড়া কার্যত অর্থে সোসিয়েদাদকে সেভাবে চাপে রাখতে পারেনি রিয়াল। পুরো শক্তি যেন তারা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের জন্য জমিয়ে রেখেছে। ৪৪ শতাংশ বল দখলের পাশাপাশি ৫ শটের মধ্যে কেবল ৩টি লক্ষ্যে রাখতে সক্ষম হয় বার্নাব্যু ফুটবলাররা। অন্যদিকে সোসিয়েদাদ ৯ শটের মধ্যে ৩টি রাখে লক্ষ্যে।
শুরু থেকে বল দখলে অনেক পিছিয়ে থাকা রিয়াল প্রথম ২০ মিনিটে এক শটও নিতে পারেনি। বরং তাদের রক্ষণে স্বাগতিকরা মাঝেমধ্যে ভীতি ছড়িয়ে যাচ্ছিল। রিয়াল ম্যাচের ২৯তম মিনিটে গোলে প্রথম শট নিতে পারে, আ তাতেই এগিয়ে যায় তারা। মাঝমাঠ থেকে সতীর্থের উঁচু করে বাড়ানো বল বক্সের ডান দিকে পেয়ে প্রথম স্পর্শে ভেতরে পাস দেন দানি কারভাহাল। ছুটে গিয়ে ছয় গজ বক্সের বাইরে থেকে প্রথম স্পর্শে বাঁ পায়ের শটে জালে পাঠান গুলার।
১৯ বছর বয়সী এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার এ নিয়ে রিয়ালের জার্সিতে আট ম্যাচে দ্বিতীয় গোল করলেন। দুর্দান্ত ড্রিবলিংয়ের জন্যই তিনি ‘তুরস্কের মেসি’ নামে পরিচিত। তবে রিয়ালের আনন্দ ম্লান করে চার মিনিট পরই গোল উৎসবে মাতে সোসিয়েদাদ। তবে জাপানের মিডফিল্ডার তাকেফুসা কুবোর করা গোলটি বাতিল করে দেন রেফারি। কারণ আক্রমণের শুরুতে তারই আরেক সতীর্থ বক্সের বাইরে অহেলিয়া চুয়ামেনিকে ফাউল করার ঘটনা রেকর্ড হয় মনিটরে, সেই রিপ্লে দেখে রেফারি নতুন এই সিদ্ধান্ত দেন।
বিরতির পরও রিয়াল ১-০ গোলের সেই লিড ধরে রাখে। যদিও দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই একটি সুযোগ তৈরি করে সোসিয়েদাদ। তবে বেনাত তুরিয়েন্তের শট ফিরিয়ে জাল অক্ষত রাখেন গোলরক্ষক কেপা আরিসাবালাগা। ৬০তম মিনিটে ব্রাহিম দিয়াজের শট বক্স ঘেঁষে তুরিয়েন্তের হাতে লাগলে পেনাল্টির আবেদন করে রিয়াল, তবে সাড়া মেলেনি রেফারির। এরপর ৬৮তম মিনিটে দানি সেবাইয়োসের জায়গায় ফেদে ভালভের্দে আর গুলারকে তুলে ভিনিসিয়ুসকে নামান আনচেলত্তি। যদিও শেষ পর্যন্ত আর কোনো গোল হয়নি।
এই জয়ে রিয়াল দ্বিতীয় স্থানে থাকা বার্সেলোনার চেয়ে ১৪ পয়েন্টে এগিয়ে গেল। শিরোপা পুনরুদ্ধার করতে বাকি ৫ ম্যাচে তাদের মাত্র ৪ পয়েন্ট প্রয়োজন। ৩৩ ম্যাচে ২৬ জয় ও ৬ ড্রয়ে রিয়ালের পয়েন্ট ৮৪। এক ম্যাচ কম খেলা বার্সেলোনার পয়েন্ট ৭০। দুই পয়েন্ট কম নিয়েই তাদের পরই অবস্থান জিরোনার।