বরিশাল অফিস :: মাত্র একটি সাবান চুরির ঘটনায় সাজানো মামলায় ঘটনাস্থলে না থেকেও প্রধান আসামি হয়ে সাতদিন কারাভোগ করতে হয়েছে মোস্তফা কামালকে।
বরিশাল নগরীর ২৮নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃত মোজাফফর খলিফার ছেলে মোস্তফা কামালকে কারাগারে পাঠিয়ে প্রতিপক্ষের লোকজনে বিরোধপূর্ণ জমিতে আদালতের দুই দফার নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তড়িঘড়ি করে দ্রুত ভবন নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে মামলার বাদী আলমগীর হোসেন বলেন, সাবান চুরির ঘটনায় মারামারিটা মোস্তফা কামাল নাকি তার লোকজন দিয়ে করিয়েছে। সে কারনে তাকে আসামি করা হয়েছে। তবে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে মোস্তফাকে দেখিনি।
ওই মামলায় সাতদিন কারাভোগ করে জামিনে বেরিয়ে রবিবার সকালে মোস্তফা কামাল বলেন, যে মামলায় আমি হাজতবাস করেছি, সেই ঘটনার সাথে আমার কোনধরনের সম্পৃক্ততা নেই।পুলিশ প্রশাসন এজাহার গ্রহণের পূর্বে সরেজমিনে তদন্ত করলে আমাকে কারভোগ করতে হতো না। মোস্তফা কামাল অভিযোগ করে বলেন, একই এলাকার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে
বোরহান উদ্দিনের সাথে জমিজমা দিয়ে দীর্ঘদিন থেকে আমার বিরোধ চলে আসছে। ওই বিরোধের জেরধরে আমার জমি দখলের জন্য থানা পুলিশের সাথে আতাত করে সাবান চুরির ঘটনায় সৃষ্ট মারধরের ঘটনায় আমাকে প্রধান আসামি করে এয়ারপোর্ট থানায় মামলা দায়ের করা হয়। সেই সাজানো মামলায় পুলিশ কোনধরনের তদন্ত না করেই গত ৯ এপ্রিল গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। গত ১৫ এপ্রিল জামিনে বেরিয়ে তিনি (মোস্তফা কামাল) দেখতে পান বোরহান উদ্দিন তার জমি দখল করে আদালতের দুইদফা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দ্রæত গতিতে ভবন নির্মান করে আসছেন।
জানা গেছে, গত ২৪ মার্চ নগরীর কাশিপুর আনসার অফিসের বিপরীত পার্শ্বে নির্মাণাধীন ভবনের শ্রমিকরা পাশের একটি পুকুরে গোসল করতে যায়। সেখানে স্থানীয় বাসিন্দা রুবেলের রেখে যাওয়া সাবান নিয়ে যায় শ্রমিকরা। পরে রুবেল এসে সাবান খুজে না পেয়ে শ্রমিকদের সাথে বাগবিতন্ডার একপর্যায়ে হাতাহাতি হয়। এসময় কয়েকজন শ্রমিক মিলে রুবেলকে মারধর করেন। খবর পেয়ে রুবেলের বাড়ির লোকজন আসলে পাল্টাপাল্টি মারামারির ঘটনা ঘটে। সাবান চুরি থেকে মারামারির ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে বোরহান উদ্দিন শ্রমিক আলমগীরকে দিয়ে এয়ারপোর্ট থানায় মামলা করিয়েছেন। ওই মামলায় মোস্তফা কামালকে প্রধান আসামি করা হয়। পুলিশ মামলার অভিযোগের তদন্ত না করেই এজাহারভূক্ত করে ঈদের আগ মুহুর্তে মোস্তফাকে গ্রেপ্তার করেন।
অভিযুক্ত বোরহান উদ্দিন বলেন, জমিতে নিষেধাজ্ঞা আছে কিনা সেটা দেখবে আদালত। মোস্তফা গংরা আমার নির্মাণাধীণ ভবনের শ্রমিকদের উপর হামলা চালিয়ে মালামাল নিয়ে গেছে। এ কারণে আমার শ্রমিক আলমগীর বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলার বাদী আলমগীর হোসেন বলেন, মারামারিটা নাকি মোস্তফা কামালই তার লোকজন দিয়ে করিয়েছেন। সে কারনে তাকে আসামি করা হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এয়ারপোর্ট থানার এসআই সুমন চন্দ্র মজুমদার বলেন, মামলা দায়েরের পর প্রধান আসামি মোস্তফা কামালকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্যান্য আসামিরা জামিনে রয়েছে।
বরিশাল এয়ারপোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম মাসুদ আলম চৌধুরী বলেন, তদন্ত শেষেই অভিযোগটি এজাহারভূক্ত করা হয়েছে। কোন নিরপরাধ ব্যক্তি হেনস্তা হবেনা।