বরিশাল অফিস :: জনবল সংকটে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে ভোলার মনপুরা উপজেলার একমাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। দশ চিকিৎসকের স্থলে কর্মরত আছেন চারজন। ৩০ জন নার্সের দায়িত্ব পালন করছেন মাত্র ৬ জনে। জনবল সংকটে রোগীর সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এমন সংকটের মধ্যে হাসপাতালটিতে চলছে অনেকটা নামমাত্র চিকিৎসা সেবা। কঠিন রোগের চিকিৎসা তো হয়ই না বরং সামান্য রোগবালাই নিয়ে দুর্গম এলাকার মানুষদের ছুটতে হয় ঢাকা বরিশালসহ দূর-দূরান্তে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রুমের সামনে রোগীর দীর্ঘ লাইন। অপেক্ষমাণ রোগীদের সেবা দিচ্ছেন কর্তব্যরত দুজন নার্স। নার্সের সংখ্যা কম থাকায় এ দুজনকে একই সময়ে ইনডোর ও আউটডোরে সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে পারছেন না তারা। একই অবস্থা কর্তব্যরত চিকিৎসকদের; একইসঙ্গে ইনডোর ও আউটডোরে রোগীর চিকিৎসা দিচ্ছেন মেডিকেল অফিসার ডা. খালেদ হাসান তানিম। বছরের পর বছর এমন অবস্থায় থাকে মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
জানা গেছে, সাগরকূলের বিচ্ছিন্ন মনপুরার বাসিন্দাদের জন্য ১৯৮৬ সালে কার্যক্রম শুরু হয় ৩১ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির। ২০১৮ সালে হাসপাতালটিকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করে আধুনিক ভবন নির্মাণ করা হলেও বাড়ানো হয়নি জনবল।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ১০ চিকিৎসকের বিপরীতে বর্তমানে কর্মরত আছেন তিনজন মেডিকেল অফিসার। তবে বেশিরভাগ সময় একজন চিকিৎসকই রোগীর সেবা দিতে দেখা যায়। বাকি দুজন ছুটি বা প্রশাসনিক কাজে ব্যস্ত থাকেন। গাইনি ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ নেই অনেক বছর। ৩০ জন নার্সের মধ্যে আছেন মাত্র ৬ জন। টেকনিশিয়ান, ওয়ার্ডবয়সহ তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ৬১টি পদের মধ্যে ৪১টি পদ শূন্য পরে আছে দীর্ঘদিন। প্রয়োজনের চেয়ে জনবল কম থাকায় চিকিৎসক ও নার্সদের ৮ ঘণ্টার পরিবর্তে দিনে ১৬ থেকে ১৮ ঘণ্টা ডিউটি করতে হয়। এতে রোগী সামলাতে যেমন হিমশিম খেতে হয়, তেমনি কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকেও বঞ্চিত হন তারা।
আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. খালেদ হাসান তানিম জানান, চিকিৎসক সংকটে তাদের ১৪ থেকে ১৮ ঘণ্টা ডিউটি করতে হয়। তারপরও রোগী সামলাতে হিমশিম খেতে হয়।
এ দিকে জনবল সংকটের কারণে চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন মনপুরার মানুষ। প্রত্যাশিত চিকিৎসার অভাবে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে দুর্গম এলাকার বাসিন্দাদের। তাই দীর্ঘ বছরের এ সংকট দূর করে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতের জন্য চিকিৎসক ও নার্স পদায়নের দাবি চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগী ও ১নং মনপুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমানত উল্যাহ আলমগীরের।
সিভিল সার্জন ডা. কেএম শফিকুজ্জামান বলেন, জনবল সংকট দূর করে রোগীদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে কাজ করা হচ্ছে। এ হাসপাতালের ইনডোর ও আউটডোরে প্রতিদিন দুই শতাধিক রোগী চিকিৎসা নেন।