অনলাইন ডেস্ক : ডেঙ্গু মৌসুম শুরুর আগেই এ বছরের ১২ মে পর্যন্ত ২৯ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে গেছেন ২ হাজার ৪৬০ জন। এ পরিসংখ্যানই বলছে, এবারও মানুষের মনে কাঁপন ধরাবে ডেঙ্গু। গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সরকারের গণনাতেই সারাদেশে প্রাণ যায় ১ হাজার ৭০৫ জনের। তবে প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা এর চেয়ে বেশি।
গত বছর ৬৪ জেলাতেই এডিস মশার অস্তিত্ব ও ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গিয়েছিল। এবারও দেশজুড়ে এডিস মশার বিস্তার থাকলেও জেলা-উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থা বসে আছে হাত গুটিয়ে। মশা নিয়ন্ত্রণে ২০২১ সালে একটি জাতীয় নির্দেশিকা প্রকাশ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। বিস্ময়কর হলেও সত্য, সেই জাতীয় নির্দেশিকার নামই শোনেননি বেশির ভাগ জনপ্রতিনিধি।
আর রাজধানী ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মধ্যে উত্তরে দায়সারাভাবে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ, ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান আচকা দেখা গেলেও দক্ষিণে এসবের কিছুই নেই। এরই মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তরফ থেকে একটি মাঠ জরিপ চালানো হয়েছে। সেই জরিপেও এডিস মশার ঘনত্ব পাওয়া গেছে বেশি। তবে অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব ও রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, মহাপরিচালক আগামী সপ্তাহে আনুষ্ঠানিকভাবে উপস্থাপন করবেন জরিপের তথ্য। তিনি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ারও সুপারিশ করবেন।
তৃণমূলে মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে নিরাশা
‘ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত অন্যান্য রোগ প্রতিরোধে জাতীয় নির্দেশিকা’য় বলা হয়, ইউনিয়নের ওয়ার্ড পর্যায় থেকে শুরু করে পৌরসভা, উপজেলা, জেলা পরিষদ, সিটি করপোরেশন প্রতি মাসে মশা পরিস্থিতির ওপর প্রতিবেদন পেশ করবে। প্রতিটি পর্যায়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ব্যক্তির সমন্বয়ে এ-সংক্রান্ত কমিটিও আছে। তবে প্রতিবেদন পাঠানো দূরের কথা, এ ধরনের একটি কমিটি আছে শুনে অনেকেরই ‘আকাশ থেকে পড়ার’ দশা!
২০২১ সালের আগস্টে জাতীয় নির্দেশিকাটি প্রকাশের পর তা জেলা-উপজেলা পর্যায়ে পাঠানো হয়। নির্দেশিকাটি পাওয়ার এক মাসের মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ার্ড থেকে জেলা পর্যায়ের কমিটি গঠন ও প্রতি মাসে একটি করে সভা করার কথা বলা হয়। পাশাপাশি প্রতিবছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ইউনিয়ন, পৌরসভা, উপজেলা ও জেলা পরিষদ মশার মাত্রা বিবেচনা করে পরবর্তী কর্মপরিকল্পনা তারা প্রণয়ন করে জমা দেবেন। প্রতিবছরের ১৫ জানুয়ারির মধ্যে তাদের তথ্যের ভিত্তিতে পরবর্তী ছয় মাসের জন্য মশক নিয়ন্ত্রণের কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করে সে অনুযায়ী স্থানীয় সরকারের প্রতিটি পর্যায়ে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হবে। তবে এ-সংক্রান্ত কোনো কর্মপরিকল্পনাও কোনো পর্যায় থেকে স্থানীয় সরকার বিভাগে আসে না।