বরিশাল অফিস :: বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতি ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রামে হাজারী খালের উপর নির্মিত সেতুটি কয়েকটি গ্রামের সঙ্গে সংযোগ রয়েছে। সেতুটি এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। সাধারণ মানুষের সেতুটি দিয়ে পার হতে হয় প্রাণ হাতে নিয়ে। গত ১০ বছর ধরে সেতুটি দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ১৯৯৮ সালে সেতুটি নির্মাণ করে নিজ অর্থায়নে মরহুম সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ আলহাজ সৈয়দ মাসুদ রেজার চাচা মরহুম সৈয়দ মোহাম্মদ আলী ৮ লাখ টাকা ব্যয় করেন। বর্তমানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় সেতুর সিমেন্টের ঢালাই দেওয়া স্লিপারের বেশির ভাগই ভেঙে পরে খালে ঝুঁকেছে। ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়েছে সেতুটি।
অথচ ১০ বছর পার হলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সেতুটি সংস্কার ও নতুন করে নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। নিরুপায় হয়ে স্থানীয়রা, সেতুটির উপরে সুপারি গাছ ও বাসের সাঁকো নির্মাণ করে চলাচল করছে। এমন পরিস্থিতিতে ঝুঁকিতে পড়েছে কয়েক গ্রামের হাজার হাজার মানুষ। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে বৃদ্ধ ও শিশুসহ স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা।
ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতিদিন এই সেতু দিয়ে যাতায়াত করা রামনগর, কাফিলা রূপারজোর, গাবুয়া রামনগর, ঢালমারা মহেষপুরসহ কয়েক গ্রামের মানুষের। এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন রামনগর আলিয়া হোসাইনিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা, জনতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, রামনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মধ্য রামনগর রেজিস্ট্রার প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঢালমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মহেশপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মহেশপুর সৈয়দ আফসার আলী ডিগ্রি কলেজের হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীরা নড়বড়ে ও ভেঙ্গে যাওয়া সেতুটি দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রায় দুর্ঘটনার স্বীকার হচ্ছে। সেতুটি দ্রুত সংস্কার বা নতুন করে নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রায় ৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১০ ফুট প্রস্থ নড়বড়ে ও ভেঙ্গে যাওয়া সেতুর সিমেন্টের ঢালাই দেওয়া স্লিপারগুলো খুলে নিচের দিকে ঝুলে গেছে। ক্রস অ্যাঙ্গেলগুলো মরিচা ধরে ভেঙে গিয়ে সেতুটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা চলাচলের জন্য সিমেন্টের ঢালাই দেওয়া স্লিপার না থাকায় লোহার অ্যাঙ্গেলগুলোর সঙ্গে সুপারি গাছ ও বাঁশের মাচা তৈরি করে পারাপার হচ্ছে। সেতুর সিমেন্টের স্লিপারের বিভিন্ন স্থানে ফাঁকা হয়ে ঝুলে আছে। সেতুর ক্রস অ্যাঙ্গেলগুলো বেঁকে গিয়েছে, আবার কোথাও মরিচা ধরে বিভিন্ন স্থান ভেঙে গেছে। মানুষ নিরুপায় হয়ে সেতু দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। স্থানীয় কৃষকরা তাদের মাথায় করে ধান, চাল ভাঙা সেতুর ওপর দিয়ে পারাপার করছেন। বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে নিয়ামতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির জানান, হাজারী খালের উপর অবস্থিত সেতুটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সেতুর মাঝখানের সিমেন্টের স্লিপার খুলে ক্রস অ্যাঙ্গেলগুলো বেঁকে নড়বড়ে হয়ে গেছে। যে কোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। আর এ দুর্ঘটনা এড়াতে অতিদ্রুত সেতুটি নতুন করে নির্মাণ করা প্রয়োজন। এ ছাড়া আর কোনো উপায় দেখি না।
বাকেরগঞ্জ উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী আবুল খায়ের মিয়া জানান, সেতুটি কোনো প্রকল্পের আওতাধীন এলজিইডির না গ্রামীণ সড়কের এবং কাবিখা প্রকল্পের সেটা ভালো করে জানতে হবে। না জেনে কিছু বলা যাবে না।