শিরোনাম

বরিশালে সাবেক ছাত্রলীগ নেতার নির্দেশে বন্ধ হাসপাতালের সংস্কারকাজ

Views: 37

বরিশাল অফিস ::  বরিশাল নগরীর ১০০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের সংস্কারকাজ বন্ধ করে দিয়েছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আরিফুর রহমান অপু। ছাদ ভাঙার পর তিনি কাজ বন্ধ করে দেন। এতে হাসপাতালের ভেতর বৃষ্টির পানি জমে গেছে। শিশু ওয়ার্ডে গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে রোগী ভর্তি করা হচ্ছে না।

হাসপাতালের একটি সূত্র জানায়, অপু হাসপাতাল সংস্কারের কাজটি করতে চেয়েছিলেন। অন্য ঠিকাদার কাজ পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে ১২ জুন দলবলসহ এসে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ বন্ধের নির্দেশ দেন। পরদিন হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনে দুটি এবং প্রধান ফটকে ঈদ শুভেচ্ছার ব্যানার টানিয়ে দেন।

দুটি ব্যানারের একটিতে হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম এমপি এবং অপরটিতে সিটি মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহর ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। ব্যানারে অপু নিজের পরিচয় লেখেন, ‘আওয়ামী যুবলীগ বরিশাল মহানগর, সাবেক ছাত্রনেতা, আবদুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল আইন মহাবিদ্যালয়, সাবেক ম্যাগাজিন সম্পাদক বাকসু (বিএম কলেজ ছাত্র সংসদ)।’ তবে মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক নিজামুল ইসলাম নিজাম বলেন, ‘আরিফুর রহমান অপু যুবলীগের কেউ নন। সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা নিজেদের যুবলীগ নেতা দাবি করছেন।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অপু প্রতিমন্ত্রী ও সিটি মেয়রের অনুসারী। হাসপাতালের অদূরে শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল আইন মহাবিদ্যালয় সংলগ্ন তাঁর বাসা। গত ৯ জানুয়ারি রাতে আইন মহাবিদ্যালয়ে ক্লাস চলাকালে শ্রেণিকক্ষে ঢুকে পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন ও অধ্যক্ষ মোস্তফা জামানকে মারধর করে আলোচনায় আসেন অপু।

জেনারেল হাসপাতালের ‘লাল বিল্ডিং’ নামে পরিচিতি শতবর্ষী ভবন ও আন্তঃবিভাগ হাসপাতাল ভবনের ছাদের সংস্কারকাজ শুরু হয়েছে মাসখানেক আগে। প্রশাসনিক ভবনের কাজ গণপূর্ত অধিদপ্তর ও হাসপাতাল ভবনের কাজ ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের অধীনে বাস্তবায়ন হচ্ছে।

হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ক জেলা সিভিল সার্জন ডা. মারিয়া হাসান জানান, ঈদের দু’দিন আগে অপু এসে ঠিকাদারকে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। তাঁর দাবি, দরপত্রের বিধি অনুযায়ী কাজ হচ্ছে না। অপুর চাপে ঠিকাদার মো. শফিক ও আ. মান্নান কাজ বন্ধ করে দেন। এর আগে হাসপাতাল ভবনের ছাদের একাংশ ভেঙে ফেলা হয়। এখন বৃষ্টির পানি ভবনের ভেতরে যাচ্ছে।’ গতকাল থেকে শিশু ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মলয় কৃষ্ণ বড়াল বলেন, ‘কেউ একজন সংস্কারকাজ বন্ধ রাখতে বলেছেন। এতে রোগী ভর্তি ব্যাহত হচ্ছে। বর্তমানে ৬০-৭০ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন।’

প্রশাসনিক ভবনের কাজের ঠিকাদার আব্দুল মান্নান বলেন, ‘লোকজন এসে শ্রমিকদের কাজ করতে নিষেধ করে গেছে। তাই কাজ বন্ধ।’ গণপূর্তের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. ওবায়েদুল হক জানান, জরুরি মেরামত হিসেবে সংস্কারকাজ চলছিল। কাজ শেষে মন্ত্রণালয়ে বিল পাঠানো হবে।

এ বিষয়ে আরিফুর রহমান অপু বলেন, ‘এলাকার ছেলে হয়েও কাজটি পাইনি। কাজ পাওয়া ঠিকাদার নিম্নমানের রড-সিমেন্ট ব্যবহার করছেন। তাই কাজ বন্ধ রেখে নির্বাহী প্রকৌশলীকে ঘটনাস্থলে আসতে বলেছি। কিন্তু নির্বাহী প্রকৌশলী আসছেন না।’ ব্যানার ঝুলানো প্রসঙ্গে বলেন, ‘ছোট ভাইয়েরা লাগিয়েছে। ব্যানার খুলে ফেলব।’

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *