শিরোনাম

পটুয়াখালীতে সাপের খামার করে বিপাকে রাজ্জাক

Views: 80

পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: সাপের খামার করে বিপাকে পটুয়াখালীর রাজ্জাক। ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে পটুয়াখালীর আব্দুল রাজ্জাকের বাংলাদেশ স্নেকস ভেনম (Bangladesh snakes venom) নামের বিষধর সাপের খামারটি।

এই খামারের প্রায় ২৫০টি বিষধর সাপের মৃত্যু হয়েছে। তবে খামারটির সরকারি অনুমোদন না থাকায় সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার সহযোগিতার সুযোগ নেই বলে জানা গেছে।

আব্দুল রাজ্জাক বিশ্বাস ২০০০ সালে পটুয়াখালী জেলার সদর উপজেলার মাদারবুনিয়া ইউনিয়নের নন্দিপাড়া গ্রামে তার নিজ বাড়ির পাশে একটি কিং কোবরা সাপ এবং ২৪টি ডিম নিয়ে গড়ে তোলেন বিষধর সাপের খামার। পরিকল্পনা ছিল সরকারি অনুমোদন পেলে সাপের বিষ সংগ্রহ করে তা বিক্রি করে হবেন দেশ সেরা উদ্যোক্তা। কিন্তু সেই স্বপ্ন এখন অধরাই রয়ে গেল।

বর্তমানে কিং কোবরা, পাইথন, পঙ্খীরাজ, কালকুলিন, সাদা গোমা, কেউটে, দাঁড়াশ, বাসুয়া, পদ্ম গোমা, বিষঝুড়ি ও গোঁড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় দেড় শতাধিক বিষধর সাপ রয়েছে রাজ্জাক বিশ্বাসের খামারে।

আরো পড়ুন : দুমকী জনতা কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে সংঘর্ষ – আহত-৫

নন্দিপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম বলেন, রাজ্জাক বিশ্বাস ভাই ২৩ থেকে ২৪ বছর পর্যন্ত সাপের খামার লইয়া কষ্ট করতে আছে। এই বইন্নায় আমাগো এলাকায় কোমর পর্যন্ত পানি উঠছিল, আর এই পানিতে ভাইয়ের কয়েকশ সাপ মারা গেছে। ভাই খুব কষ্ট পাইছে।

একই এলাকার হায়দার বিশ্বাস বলেন, রাজ্জাক ভাই এই সাপের খামার কইরা নিজের আর বাপের টাহা পয়সা সব শেষ করছে। এহন বাপের থুইয়া যাওয়া জমি বন্ধক দিছে। সরকার যদি এই মুহূর্তে তারে একটু সাহায্য করতো তাহলে হয়তো রাজ্জাক বিশ্বাস আবারও ঘুইরা দাঁড়াইতে পারতো।

এ বিষয়ে রাজ্জাক বিশ্বাস বলেন, অনেক স্বপ্ন নিয়ে এই সাপের খামারটি এই পর্যন্ত নিয়ে এসেছি। সাপের খামারটি টিকিয়ে রাখতে গিয়ে আজ আমি নিঃস্ব। কিছুদিন আগে আমার একমাত্র ছেলেটা মারা যায়, ছেলের মৃত্যু কথা শুনে আমার আব্বাও মৃত্যুবরণ করলেন। ছেলে আর বাবার মৃত্যুর এক মাস পর আমার মা মারা গেলেন। স্বজনদের হারানো শোক কাটিয়ে ওঠার আগেই রেমালের কারণে পানি উঠে আমার খামারের প্রায় আড়াইশ সাপ মরে গেল। আমি শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখেছি, কিছুই করতে পারিনি।

পটুয়াখালী উপকূলীয় বনবিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক তারিকুল ইসলাম বলেন, যেহেতু রাজ্জাক বিশ্বাস অবৈধভাবে সাপের খামারটি পরিচালনা করছে, তাই তাকে সরকারি সহযোগিতার কোনো সুযোগ নেই। গত বছরের ১১ এপ্রিল বন্যপ্রাণি অপরাধ দমন ইউনিট ও উপকূলীয় বন বিভাগের কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত হয়ে খামারটি বন্ধ করে সাপ বনে ছেড়ে দেওয়ার জন্য একটি নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। যেহেতু খামারটি এখনও চলমান আছে তাই এটিকে বন্ধের জন্য আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *