শিরোনাম

বরিশালের চিকিৎসা সমস্যা হাসপাতালকে দালাল ও সিন্ডিকেট মুক্ত করার ঘোষণা প্রতিমন্ত্রীর

Views: 61
বরিশাল অফিস  :: বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে দালাল ও সিন্ডিকেট মুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন বরিশাল ৫ আসনের সংসদ সদস্য পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কর্ণেল অবঃ জাহিদ ফারুক শামীম। ২৮ জুন শুক্রবার রাতে  জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত নাগরিক মতবিনিময় সভায় তিনি এই ঘোষণা দেয়ার পাশাপাশি হাসপাতালের বিদ্যমান চিকিৎসা সমস্যা নিয়ে নাগরিকদের দেয়া বিভিন্ন পরামর্শ  অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণেরও প্রতিশ্রুতি দেন। এ সময় আগামী তিনমাসের মধ্যে পুনরায় মতবিনিময় সভার মাধ্যমে কাজের অগ্রগতি ও ছয়মাসের মধ্যে তা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেন প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক।
গত ১৩ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জেনারেল হাসপাতালের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করেছেন। দায়িত্ব পাওয়া মাত্রই তিনি দুটি হাসপাতালের বিদ্যমান চিকিৎসা সমস্যা নিয়ে নাগরিক মতবিনিময় সভার আহ্বান জানান। তার এই আহ্বানে মুগ্ধ ও বিস্মিত বরিশালবাসী দলমত নির্বিশেষে ছুটে আসেন শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে। শুধু বরিশাল নয়, বিভাগের ছয় জেলা থেকেই সাধারণ মানুষ ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের কাছে  আলোচিত হয়ে ওঠে জাহিদ ফারুকের এই আহ্বান। কেননা এরকম কিছু বরিশালের জন্য এটাই প্রথম ঘটনা । ১৯৬৪ সালে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রতিষ্ঠার পর অসংখ্য সভাপতি দায়িত্ব পালন করছেন এই হাসপাতালে। কোনোদিন কেউ এমন কিছু করেননি বলে স্পষ্ট মুগ্ধতা প্রকাশ করেন আগত ব্যক্তিবর্গের অনেকেই। যে কারণে  শুক্রবার বরিশাল জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত নাগরিক মতবিনিময় সভায় সাধারণ জনগণ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের উপচে পরা ভিড় চোখে পড়ে।  এমনকি মিলনায়তনে স্থানসংকুলানের অভাব দেখা দেয়। শেষ পর্যন্ত জায়গা না পেয়ে বাহিরে অপেক্ষমান ছিলেন অনেকে।
শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ সাইফুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে এ সময় দুটি হাসপাতালের বিদ্যমান চিকিৎসা সমস্যা নিয়ে মতবিনিময় করেন বরিশালের আইনজীবী, রাজনৈতিক, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দ। ব্যবসায়ী সমাজ ছাড়াও হাসপাতালের নার্স ও ডাক্তাররাও তুলে ধরেন তাদের সমস্যা। আলোচনায় উঠে আসে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও এম্বুলেন্সসহ নানাবিধ সমস্যা। গুরুত্ব পায় দালাল চক্রের দৌরাত্ম এবং এম্বুলেন্স সিন্ডিকেট।  আলোচনায় অংশ নেন জাসদ নেতা সাইফুর রহমান মিরন সিনিয়র আইনজীবী তপন কুমার চক্রবর্তী,  নগর চিন্তাবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক কাজী মিজানুর রহমান, বাসদ নেত্রী ডাঃ মনীষা চক্রবর্তী, উন্নয়ন সংস্থার প্রধান  কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন, মহিলা পরিষদের সভাপতি পুষ্পা চক্রবর্তী, চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান মুন্না, সাংবাদিক নেতা এসএম জাকির,  সাংবাদিক সোহাগ হাসান সহ আরো অনেকে মতবিনিময় করছেন।
এ সময় ডাঃ মনীষা হাসপাতালের বিভিন্ন সমস্যার পাশাপাশি রেডিওথেরাপি মেশিন, এমআরআই মেশিন এবং অভিজ্ঞ চিকিৎসক না থাকা নিয়ে কথা বলেন।
কাজী মিজানুর রহমান পুরো হাসপাতালের অভ্যন্তরে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, কর্মীদের ইউনিফর্ম ব্যবহার এবং পরিচালকের দায়িত্বে সামরিক বাহিনীর লোক নিয়োগের প্রস্তাব করেন।  হাসপাতালে নিরাপত্তা প্রহরী ও দর্শনার্থীদের সাউন্ড সিস্টেম ও ইন্টারকমের আওতায় আনার প্রস্তাব করেন হাসপাতালের একজন চিকিৎসক ডাঃ সৌরভ। সাংবাদিক নেতা এসএম জাকির ডায়ালাইসিস ও আইসিইউ সমস্যা নিয়ে কথা বলেন। তুলে ধরেন এম্বুলেন্স সিন্ডিকেট ও হাসপাতালের ৩০০ গজের ভিতর কোনো ডায়াগনস্টিক সেন্টার না থাকার বিষয়টি।
সকলের বক্তব্য শোনার পাশাপাশি সমস্যাগুলো লিখিত নোট গ্রহন করেন দুটি হাসপাতালের নতুন সভাপতি এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম এমপি।
তিনি সবাইকে আশ্বস্ত করেন এবং বলেন, আগামী তিন মাসের মধ্যে বরিশালের দুটি হাসপাতালের চিকিৎসা ও সেবার মানে অনেক পরিবর্তন ঘটবে। আমি মনে করি বরিশালের  মানুষের সেবা করার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থান এই হাসপাতাল। তাই এই দুটি হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে আমার অন্যতম দায়িত্ব। আমি এখানে কথা দিলাম, আগামী তিনমাসের মধ্যে আপনারা এই পরিবর্তন দেখতে পাবেন।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, প্রতি তিনমাস পর পর আমাদের এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে এবং ছয়মাসের মধ্যে কাজের উন্নতি দৃশ্যমান হবে ইনশাআল্লাহ।
সভাপতি ডাঃ সাইফুল ইসলাম ছাড়াও এসময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান তমাল পারভেজ, সিভিল সার্জন  ডাঃ মারিয়া হাসান, উপপুলিশ কমিশনার আলী আশরাফ ভুইয়াসহ আরো অনেকে।
image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *