পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: পটুয়াখালীর কলাপাড়ায়, ” সড়কের বেহাল দশা – পর্যটক হারাচ্ছে কুয়াকাটা ” শিরোনামে চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডটকম সংবাদ প্রকাশের পর পর্যটক ও স্থানীয়দের চলাচলের জন্য সাময়িকভাবে সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
রবিবার দুপুরে উপজেলা প্রশাসন সড়ক সংস্কার কাজ শুরু করেন। এতে পর্যটকসহ জনসাধারণের মাঝে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে।
কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পাখিমারা বাজার থেকে আলীপুর শেখ রাসেল সেতু পর্যন্ত দীর্ঘ ১১ কিলোমিটার সড়ক খানাখন্দে ভরা। সামান্য বৃষ্টিতেই পাখি মারা বাজারের মূল কেন্দ্রসহ মৎস্য বন্দর আলিপুর থ্রি পয়েন্টে বড় বড় গর্তে কয়েক ফুট পানি জমে থাকে। এতে করে কুয়াকাটাগামী বিভিন্ন পরিবহনকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় পটুয়াখালী-কুয়াকাটা সড়কের পাখিমারা বাজার এবং আলিপুর থ্রি পয়েন্ট এলাকায়। এ নিয়ে গত ২৯ জুন চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডটকম এ ” সড়কের বেহাল দশা – পর্যটক হারাচ্ছে কুয়াকাটা ” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি স্থানীয় সাংসদের নজরে এলে সড়কটির বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে সাময়িক সংস্কারে উদ্যোগ নেওয়া হয়। বিশেষ করে পাখিমারা বাজার এবং আলীপুর বাজারের থ্রি পয়েন্টে বড় বড় গর্তের ইট দিয়ে সাময়িক উপযোগী করায় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এতে পর্যটক ও এলাকাবাসীর দুর্ভোগ কিছুটা লাগব হবে বলে জানান স্থানীয়রা।
আরো পড়ুন : দুমকিতে রাস্তার বেহাল দশা – চলাচলের ভোগান্তি
তারা জানান, সংবাদ প্রকাশের দুই দিন পরই স্থানীয় সংসদ সদস্য মহিববুর রহমান মহিবের নির্দেশনায় সড়কটি সাময়িক সংস্কারের কাজ শুরু করেন কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসন।
তবে সাময়িক সংস্কার নয়, দ্রুত স্থায়ী সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এদিকে সড়কের সাময়িক সংস্কার কাজ শুরু হওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেসহ বিভিন্নভাবে প্রশংসায় ভাসছে উপজেলা প্রশাসন। কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম জানান, পাখিমারা বাজারসহ মহিপুর শেখ রাসেল সেতুর আলীপুর থ্রি পয়েন্টের বেশ কিছু বড় বড় গর্ত তৈরি হওয়ায় ভোগান্তি আমাদের নজরে আসে। এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে মাননীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশনায় ও উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে সড়কের সাময়িক সংস্কারের কাজ করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০০৯-২০১৪ অর্থ বছরে কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পাখিমারা বাজার থেকে মহিপুর মৎস্য বন্দরের শেখ রাসেল সেতু পর্যন্ত ১১ কি. মি. অংশের উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করে খুলনার দি রূপসা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তখন এর নির্মাণ ব্যয় ছিল ২০ কোটি টাকা। কাজটি মানসম্মত না হওয়ায় তখন ঠিকাদারের বিল আটকে দেয় পটুয়াখালী সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। এ নিয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে দুটি দল সরেজমিন তদন্তও করেন। তদন্তকারী দলের পক্ষ থেকেও কাজের গুণগত মান ভালো হয়নি বলে প্রতিবেদন দেওয়া হয়। নিম্নমানের কাজের কারণে তখন সড়ক ও জনপথ বিভাগ ৮ কোটি টাকার বিল আটকে দেয়। তবে এ কাজ বাবদ ১২ কোটি টাকার বিল পরিশোধ করা হয়। এ ঘটনার পর দি রূপসা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের প্রতিনিধি রাশেদুল ইসলাম চূড়ান্ত বিল দাবি করে ২০১৪ সালে আদালতে মামলা করেন। আদালত মামলার কারণে ১১ কি. মি. সড়কের ওপর সংস্কার কাজে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন। যার ফলে গত দশ বছর ধরে সংস্কারবিহীন অবস্থায় পড়ে থাকে পাখিমারা বাজার থেকে শেখ রাসেল সেতু পর্যন্ত এ অংশের সড়কটি। তবে কুয়াকাটা পর্যটন এলাকায় যাতায়াতের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হওয়ার কারণে সওজ কর্তৃপক্ষ এ অংশে জরুরি মেরামতের কাজ করে সচল রাখে সড়কটি।