শিরোনাম

পটুয়াখালীতে অসহায় বিধবা নারীর করুন আর্তনাদ

Views: 73

পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: পটুয়াখালীর গলাচিপায় সহায় সম্বলহীন এক অসহায় বিধবা নারীর করুন আর্তনাদ একটু আশ্রয়ের জন্য। বিধবা নারী আলো বেগম (৪৮) হচ্ছেন উপজেলা গোলখালী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড হরিদেবপুর ফেরিঘাট এলাকার মৃত. মানিক মাদবর এর মেয়ে এবং মৃত. হানিফ মোল্লার স্ত্রী।

আলো বেগম ছোট বেলায় বাবাকে হারিয়েছেন। পরে তার মা তাকে বিবাহ দিয়েছেন। কিন্তু কিছু দিন যেতে না যেতেই মা আনোয়ারা বেগমও চলে যান না ফেরার দেশে। পরে স্বামীর সাথে হরিদেবপুর ফেরিঘাট সংলগ্ন সরকারি খাস জায়গায় জীবনের তাগিদে একটি চায়ের দোকান দিয়েছিলেন।

কিন্তু এক সময় তার স্বামীও তাকে একা করে মারা যান। ফলে বাধ্য হয়ে তিনি সন্তানদের মুখে দুমুঠো অন্ন জোগাড় করতে নিজেই চালাতে থাকেন সেই দোকান। এখন সরকার সরকারি জায়গায় ডিসিআর দিচ্ছেন। কিন্তু আলো বেগম তার শেষ সম্বল দোকানের ঐ জায়গাটুকু ডিসিআর পাওয়ার জন্য ঘুরে বেড়াচ্ছেন সকলের দ্বারে দ্বারে।

এ বিষয়ে বিধবা নারী আলো বেগম বলেন, বাবা মারা যাওয়ার পরে একটু শান্তি ও আশ্রয়ের জন্য স্বামীর সংসারে আসি। আমার স্বামী হরিদেবপুর ফেরিঘাট সংলগ্ন সরকারি খাস জায়গায় একটা চায়ের দোকান দেন। দোকানটির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ হচ্ছে ১২ দ্ধ ১০ = ১২০ বর্গফুট।

দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর পর্যন্ত টিনের একচালা ঘর তুলে দোকান করে আসছি আমরা। এক সময় আমার স্বামী ইউপি সদস্য নির্বাচিত হন। মানুষের উপকারে তাদের পাশে ছিলেন। ভালই চলছিল আমাদের সংসার। কিন্তু আমার স্বামী মারা যাওয়ায় শুরু হয় আমার করুন কাহিনী।

আমার জীবনে নেমে আসে অন্ধকারের ছায়া। এক সময় আমার স্বামী মানুষের উপকার করত এখন স্বামী মারা যাওয়ার পরে আমি মানুষের কাছে হাত পাতি। সংসারে ছেলেমেয়েদের কথা চিন্তা করে নিজেই সেই জায়গায় দোকান করা শুরু করি।

আরো পড়ুন : পটুয়াখালীতে পরেশ বিশ্বাসের খুনিদের গ্রেপ্তার দাবিতে মানববন্ধন

বিভিন্ন সময় ঘূর্ণিঝড়ে দোকান ঘরটি নষ্ট হয়ে গেলেও ঠিক করার মত অর্থ ছিল না আমার। গত ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে আমার দোকানের চালা উড়ে যায় এবং একটি অংশ ভেঙ্গে যায়। এরই মধ্যে মাইকে ঘোষণা শুনেছি সরকারি জায়গার ডিসিআর কাটানোর জন্য।

আমার আর কোন পৈত্রিক জায়গা নাই। বর্তমানে ঐ দোকানটি হচ্ছে উপর্জনের একমাত্র আশ্রয়স্থল। এই জায়গাটি আমি ডিসিআর পেলে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে চলে যেত আমার সংসার। কিন্তু ডিসিআর না পেলে আমাকে পথে বসে যেতে হবে।

আমি ডিসি মহোদয়, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) স্যারের সদয় দৃষ্টি কামনা করছি যাতে আমি ডিসিআর পেয়ে সুন্দরভাবে চায়ের দোকান করে সংসার চালাতে পারি। এ জন্য আমি ডিসিআর পাওয়ার জন্য লিখিত আবেদন করেছি।

এ বিষয়ে গোলখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নাসির উদ্দিন হাওলাদার বলেন, দীর্ঘ বছর পর্যন্ত হরিদেবপুর ফেরিঘাটে হানিফ মোল্লার চায়ের দোকানটি আছে। এখন তার স্ত্রী আলো বেগম ঐ দোকান চালাচ্ছেন।

ঘূর্ণিঝড় রিমেলে দোকানটির ছাউনি উড়ে যাওয়ায় পরিবারটি আজ দিশেহারা। যেহেতু সরকারি খাস জায়গা সেহেতু ডিসিআর পেলে আলো বেগমের সংসারটা ভালমত চলত। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিউদ্দিন আল হেলাল বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি, দেখব।

এ বিষয়ে ১১৩ পটুয়াখালী-৩ গলাচিপা-দশমিনা আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য এস.এম শাহজাদা (এমপি) বলেন, এ বিষয়ে আলো বেগম আমার কাছে এসেছিল। আমি ইউএনওর কাছে পাঠিয়েছি। তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে জানান।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *