শিরোনাম

দশমিনায় লুটপাট দুর্নীতির আখড়া বন বিভাগ

Views: 37

পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাটের আখড়ায় পরিণত হয়েছে পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলা বন বিভাগ। বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতির দাপটের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের অভিযোগের শেষ নেই। বন ও অর্থখেকো কর্তাদের জুলুম-নির্যাতনে অসহায় সাধারণ মানুষ। কিন্তু বন কর্তাদের অত্যাচার-অনাচার আর দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার এই দেশে যেন কেউ নেই-এমনটাই মনে করেন সাধারণ মানুষ।

২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি চরহাদীতে এক বিট কর্মকর্তার চাহিদামতো ১২ হাজার টাকা ঘুস দিয়ে ছয়টি মহিষকে আটকাবস্থা থেকে মুক্ত করতে না পেরে আত্মহত্যা করেন সুমন হাওলাদার নামে এক রাখাল। আলোচিত সেই ঘটনার পরও কর্মকর্তাদের মনের বনে রয়ে গেছে দুর্নীতির শেকড়।

সংশ্লিষ্ট অফিস সূত্র বলছে, আজাদুল কবির উপেজলা রেঞ্জ কর্মকর্তা, রওসান হাছান বিট কর্মকর্তা, মো. জাহাঙ্গীর, বেল্লাল ও জালাল ফরেস্টগার্ড, হারুন অর রসিদ গ্রিজার, সহিদ, দলিল উদ্দিন এবং ফোরকান বোর্ডম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপকূলীয় এ উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলে দায়িত্বপ্রাপ্ত বন কর্মকর্তা বনরক্ষীরা গরু-মহিষের ঘাস, পাটি তৈরির পাতা, খালে ও নদীতে ঝাউ এবং তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদীর শাখা খালগুলোতে বাঁধ দিয়ে মাছ শিকারের লিখিত-অলিখিত অনুমোদন দিয়ে চরের মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এছাড়াও গাছ ও খালে ঝাড় দেওয়ার জন্য গাছের ডালপালা ও গাছের ডাব বিক্রি করে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে নগদ টাকা। এসব লুটপাটের মধ্যস্বত্বভোগী হয়ে উঠেছেন ওই চরগুলোর স্থানীয় কিছু দালাল। দশমিনা উপজেলার চরহায়দর এবং চরহাদির দুটি বিটের মাধ্যমে পুরো চরাঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করে উপজেলা বন বিভাগ। প্রতি বছর ফাল্গুন-চৈত্র মাসে পরবর্তী বছরের জন্য ভিন্ন ভিন্নভাবে লাখ লাখ টাকায় লিখিত-অলিখিত বিট দেওয়া হয় চরাঞ্চল।

দলিল উদ্দিন নামে একজন জানান, আমি বন বিভাগের চারটি মামলা খেয়ে প্রায় ফকির হয়ে গেছি। তিনি বলেন, বনরক্ষীদের টাকা দিয়ে গরু-মহিষকে ঘাস খাওয়াতে হয়। টাকা না দিলে কোনো কাজ হয় না। বন বিভাগের লোকজন টাকা নিয়ে খালে বাঁধ দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়।

চরবোরহান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজির সরদার বলেন, চরবোরহানের চরাঞ্চলের নারিকেল গাছ টাকা নিয়ে বিট দেয় বন বিভাগ। এরপর ডাব কেটে বিক্রি করা হয়। তিনি জানান, টাকা নিয়ে বন বিভাগ খালে বাঁধ দেওয়ার অনুমতি দেয়। কার্তিক মাসে মাছ ধরে বিক্রি করা হয়। টাকা দিয়ে গরু মহিষকে ঘাস খাওয়াতে হয়। না হলে মহিষ আটকে রাখা হয়। এছাড়াও বন বিভাগের লোকজনের বিরুদ্ধে মাছ বিক্রির অভিযোগ দীর্ঘদিনের।

এ বিষয় উপজেলা রেঞ্জ কর্মকর্তা আজাদুল কবির বলেন, আমি এসব অনিয়মের সঙ্গে জড়িত না। আমার দপ্তরের কেউ জড়িত আছেন কি না তা জানা নেই। আমি বিট অফিসারের সঙ্গে কথা বলেন।

পটুয়াখালী জেলা বন কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম বলেন, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *