শিরোনাম

পানিবন্দী ফেনীর লাখো মানুষ

Views: 18

চন্দ্রদ্বীপ নিউজ :: টানা ভারী বর্ষণ এবং ভারত থেকে আসা পানিতে ডুবে গেছে ফেনীর সব উপজেলা। এতে পানিবন্দি হয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন লাখ লাখ মানুষ। এ অবস্থায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), ফায়ার সার্ভিস ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো উদ্ধার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

আজ শুক্রবার ফেনীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অথৈ পানিতে ডুবে আছে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, চাষের জমি, সবকিছুই। অনেক গ্রামে বাড়ির পর বাড়ি পড়ে আছে খালি। আবার কিছু এলাকায় আটকে আছেন বাসিন্দারা। যতই সময় গড়াচ্ছে ততই তীব্র হচ্ছে সুপেয় পানির সংকট।

এ ছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনী অংশে কোথাও হাঁটু সমান, কোথাও বুকসমান পানি। এ কারণে যান চলাচল করতে পারছে না।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সদর ও দাগনভূঞা উপজেলার ৮০ শতাংশ এলাকার মানুষ বর্তমানে পানিবন্দি। সোনাগাজী উপজেলার সব ইউনিয়নেও বন্যার পানি ঢুকেছে। প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মানুষ দুর্ভোগে আছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন গ্রামে প্রায় এক লাখ মানুষ এখনো পানিবন্দি অবস্থায় আছেন।

আরও জানা যায়, বন্যাকবলিত প্রায় সব এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। বেশির ভাগ মোবাইল টাওয়ার অকেজো হয়ে পড়ায় যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে।

এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের টিম কাজ করছে। ফেনীতে অন্তত এক লাখ মানুষ এখনো পানিবন্দি।’

টানা বর্ষণ ও ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে মঙ্গলবার থেকে ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম এলাকা প্লাবিত হয়। এতে বেশির ভাগ এলাকার ঘর-বাড়ি প্লাবিত হয়। গত বুধবার থেকে ফেনী শহরের নিম্নাঞ্চলের বাড়িঘরের নিচতলায় পানি ঢুকে যায়। বৃহস্পতিবার শহরের বেশির ভাগ বাড়ির নিচতলা ডুবে যায়। ফেনীর সোনাগাজী, দাগনভূঞা এলাকার নতুন নতুন এলাকা বন্যায় প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আজ সকালে শহরে ঢুকতে চাইলেও পারা যায়নি। শহরের প্রধান সড়ক শহীদুল্লাহ কায়সার সড়ক, ট্যাংক রোডসহ প্রধান প্রধান সড়কের কোথাও কোমর পানি, কোথাও গলা পরিমাণ পানি। শুক্রবার সকালে অনেকে পরিবার নিয়ে ফেনী শহর ছাড়তে দেখা গেছে।

এদিকে ফেনীর লালপোল এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পানি ওঠায় গতকাল থেকে চট্টগ্রামের সঙ্গে কক্সবাজার, রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ছাড়া সারা দেশের সঙ্গে সড়ক পথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে ফেনীর লেমুয়া পর্যন্ত এ সড়কে চট্টগ্রাম অভিমুখে গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ কারণে চট্টগ্রামমুখী অনেক যাত্রী বিশেষ করে নারী, শিশুরা অসহনীয় কষ্টে আছে।

গতকাল থেকে অনেকেই ফেনীর মহিপাল এলাকার বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে উঠেছেন। আবার কেউ কেউ রুম না পেয়ে হোটেলের বারান্দা, সিঁড়িতেও আশ্রয় নিয়েছেন। তবে গতকাল থেকে এসব হোটেলের পানির সংকট শুরু হয়েছে। এদিকে ফেনীতে সুপেয় পানির সংকটের আশঙ্কা করা হচ্ছে। শুক্রবার মহিপালের বেশির ভাগ দোকানেই পানির সংকট দেখা গেছে। অন্যদিকে পানির কারণে শহরের দোকানপাট বন্ধ রয়েছে।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *