পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলা সদরে অবস্থিত ছোটবাইশদিয়া ও রাঙ্গাবালী ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া জনগুরুত্বপূর্ণ গহীনখালী খালটি এক সময়ে তীব্র খরস্রোতা ছিল। সুপ্রশস্ত এ খালটির গভীরতাও ছিল অনেক। তখন এ খালের মধ্যে দিয়ে নির্বিঘ্নে যাতায়াত করত যাত্রীবাহী বড় লঞ্চ। আজকাল বড় লঞ্চ তো দূরের কথা, ছোট ট্রলারই যেতে পারে না। ভাটার সময় জেগে ওঠে খালের তলদেশ। হেঁটে পার হওয়া যায় এপার-ওপার। দিনদিন পলি জমে নাব্য সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে খালটি নিজস্ব রূপরেখা হারাতে বসেছে।
এলাকাবাসীর দাবি অচিরেই খালটি খনন করা হোক। ফিরিয়ে আনা হোক আগের সেই বড় লঞ্চ চলার মতো অবস্থা। ‘গহীনখালী’ খালের নাব্য সংকটের প্রভাব নানাভাবে পড়ছে উপজেলায় জীবনধারায়, ব্যবসা-বাণিজ্যে। ব্যবসায়ীদের মালামাল পরিবহনে ভোগান্তি সৃষ্টি হচ্ছে। নাব্য সংকটের ফলে ব্যাহত হচ্ছে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল। রাঙ্গাবালী উপজেলা খাদ্যগুদামের খাদ্যশস্য পরিবহনেও সমস্যা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পশ্চিমে দারছিড়া নদী আর পূর্বে বুড়াগৌরাঙ্গ নদীর সঙ্গে গিয়ে মিলিত হয়েছে খালটি। দেড় যুগ আগেও ঢাকা-রাঙ্গাবালী নৌরুটে এমভি সালাউদ্দিন, এমভি বেলায়েত ও গ্লোরী অব শ্রীনগর নামের যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল করত। খালের দুই পাশে ম্যানগ্রোভ বনায়নের সৃষ্টি হয়ে খালের প্রস্থ কমে যাওয়ার ফলে পলি জমে খালের নাব্য সৃষ্টি হয়। এরপরে কয়েক বছর ছোট লঞ্চ চলাচল করলেও সেগুলো পর্যায়ক্রমে বন্ধ হয়ে যায়। এখানকার ব্যবসায়ীদের মালামাল আনা নেওয়ার পাশাপাশি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলোর মালামাল পরিবহনের ঘণ্টার পর ঘণ্টা ভরা জোয়ারের অপেক্ষা করতে হয় বড় নদীতে।
বাহেরচর বাজার ব্যবসায়ী সোহেল বলেন, ‘আমাদের উপজেলাটি চারদিকে নদী আর সাগর বেষ্টিত হওয়ায় সারা দেশের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন। উপজেলার মানুষের চলাচল নৌপথ-নির্ভরশীল। রাঙ্গাবালী উপজেলা সদরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত বাহেরচর বাজার। মালামাল পরিবহনের জন্য জোয়ার-ভাটার জন্য অপেক্ষায় থাকতে হয়।
রাঙ্গাবালী খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রতি অর্থবছরে রাঙ্গাবালী উপজেলায় প্রায় ৫ হাজার মেট্রিক ট্রন খাদ্যশস্য সরবরাহ করা হয়ে থাকে। খালটির নাব্য সংকট দেখা দেওয়ায় শুকনো মৌসুমে পণ্যবাহী জাহাজ আসা ও যাওয়ার ক্ষেত্রে ভীষণ দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
তিনি আরো বলেন, দ্রুত খালটি পুনঃখনন করা প্রয়োজন।’
এ বিষয়ে রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ‘খালটি যদি জনগুরুত্বপূর্ণ হয় তাহলে অবশ্যই খননের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। সেক্ষেত্রে খালটি খনন করার জন্য আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা বলব।’
পাটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী বলেন, ‘৬৪ জেলার অভ্যন্তরস্থ ছোট নদীখাল এবং জলাশয় পুনখনন প্রকেল্পর আওতায় দ্বিতীয় পর্যায়ে গহীনখালী খালটি পুনখননের প্রস্তাব রয়েছে।