পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলা থেকে প্রত্যন্ত এলাকার ১১৮ নম্বর মধ্য দক্ষিণ কলাগাছিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। রানিপুর-দেউলী-কলাগাছিয়া-কাউনিয়া সড়কের মধ্যে ভাগে অবস্থান এ বিদ্যালটি।
বিদ্যালয়টিতে নানা রঙে সেজেছে। দেওয়ালে শোভা পাচ্ছে দেশ-প্রকৃতিসহ নানা চিত্র। শুধু এ বিদ্যালয়টি নয় উপজেলার বেশিরভাগ বিদ্যালয়ই নতুন সাজে সেজেছে। এতে শিক্ষার্থীরা যেমন ছোটবেলা থেকেই শিল্পমনা মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবে ও জানবে দেশ-প্রকৃতি সম্পর্কে, তেমনি শিশুমনে শ্রেণিপাঠ সহজবোধ্য হচ্ছে। এমনটাই মনে করছেন শিক্ষানুরাগীরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিদ্যালয়গুলোর প্রবেশ মুখ থেকে দেওয়ালে শোভা পাচ্ছে বাংলা-ইংরেজি বর্ণ ও বিভিন্ন দিবসের তারিখ। শ্রেণিকক্ষ ও ভবনের চারপাশে ফলমূল, দেশ-প্রকৃতি, কার্টুনসহ নানা মনীষীদের ছবি ও বাণী। লেখা আছে শিক্ষামূলক নানা নীতিবাক্য। দৃষ্টিনন্দন শ্রেণিকক্ষগুলো কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, শিশু শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করতে সরকারি অর্থায়নে স্কুল সুসজ্জিত করা ও শিশুবান্ধব শিক্ষা উপকরণ ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছে। ১৪২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এরই মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন ও সব শ্রেণিকক্ষ সজ্জিতকরণ শেষ হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এ উপজেলার সব বিদ্যালয় ভবন ও শ্রেণিকক্ষ সুসজ্জিত করা হবে।
বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও দক্ষিণ কলাগাছিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. নাসির উদ্দিন মল্লিক বলেন, বিদ্যালয়ের বিভিন্ন দেয়ালে মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে রঙিন চিত্রে। বিদ্যালয়গুলোতে রয়েছে শিশুদের ওজন ও উচ্চতা মাপার যন্ত্র। বয়সের সঙ্গে তাদের শারীরিক বৃদ্ধি ও ওজন ঠিক আছে কী না তা পরীক্ষা করে দেখেন শিক্ষকরা। এতে শিক্ষার হার বৃদ্ধি পায় এবং ঝরে পড়ার হার কমে যায়। দৃষ্টিনন্দন করে নিজেই সাজিয়ে অন্যদের উৎসাহী করা হয়। এতে শিক্ষার্থীরা উৎসাহিত হচ্ছে ও প্রতিনিয়ত তারা স্কুলে আসছে। এ প্রেক্ষিতে উপজেলার প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই সুসজ্জিত হচ্ছে। শিশুরা আনন্দের সঙ্গে স্কুলে আসে। তারা বিদ্যালয়ে এসে আনন্দের সঙ্গে পাঠ নিতে পারছে। অতীতের চেয়ে এখন শিক্ষার মান অনেক ভালো।
মির্জাগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রিয়াজুর হক বলেন, উপজেলার প্রাক-প্রাথমিকের ২০-২৫টি স্কুল সুসজ্জিত করায় বিদ্যালয়ের পরিবেশ শিশুবান্ধব হয়েছে। রঙিন ছবি, মুক্তিযুদ্ধ কর্নার স্থাপন করায় শিশুদের জানার পরিধি বাড়ছে। সরকারিভাবে প্রাপ্ত বরাদ্দ দ্বারা বিদ্যালয়গুলোকে স্মার্ট ও দৃষ্টিনন্দন বিদ্যালয়ে পরিণত করার চেষ্টা চলছে। বিদ্যালয়গুলোকে দৃষ্টিনন্দন করতে দেওয়ালে নানা রঙের ছবি ও কার্টুন আঁকা হয়েছে। যাতে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়মুখী হয়। স্কুলগুলো হয়ে উঠেছে শিশুদের জন্য আনন্দমুখর।