পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: দেশ পুনর্গঠনের লক্ষ্যে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের দেশব্যাপী সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়সভার অংশ হিসেবে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আগমন করেন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ ও একটি প্রতিনিধি দল।
গতকাল মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) বেলা ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সভাকক্ষে মতবিনিময়সভা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে ক্যাম্পাসে উপস্থিত হতে পারেননি সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদসহ প্রতিনিধি দল।
অভিযোগ পাওয়া যায়, স্থানীয় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাদের ক্যাম্পাসে আসতে বাধা প্রদান করে।
জানা গেছে, নির্ধারিত সময়ের দেড় ঘণ্টা পর সভা শুরু হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলপন্থী কিছু শিক্ষার্থী অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্নের মাধ্যমে আব্দুল হান্নান মাসুদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে।এক পর্যায়ে তারা উত্তেজিত হয়ে হান্নানের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে এবং অনুষ্ঠানের ব্যানার ছিঁড়ে অনুষ্ঠানটি পণ্ড করে দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসসি অনুষদের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী তানভির আহমেদ এবং একই সেশনের শিক্ষার্থী সালমান রহমান ফিয়াদের নেতৃত্বে কিছু শিক্ষার্থী এই বিশৃঙ্খলা করে। ওই সময়ে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে স্থানীয় বিএনপিপন্থী কিছু নেতাকর্মীকে জড়ো হতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী নুর নবী সোহান বলেন, ‘ক্যাম্পাসের কিছু শিক্ষার্থী পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মতবিনিমিয়সভাকে পণ্ড করার লক্ষ্যে অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করে সমন্বয়কদের উত্তপ্ত করতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে অনুষ্ঠানের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন এবং সমন্বয়কদের অপমান করেন।’
কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী খালিদ হাসান মিলু বলেন, ‘এই বিশৃঙ্খলা পূর্ব পরিকল্পিত, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে আগামীর নতুন বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে ষড়যন্ত্রের অংশ। এ ছাড়াও ক্যাম্পাসের ভেতরে বহিরাগতদের শোডাউন দুঃখজনক। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা ঐক্যবদ্ধভাবে এই ষড়যন্ত্রকে রুখে দেব।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, ‘আমরা অনেক জায়গায় গিয়েছি কিন্তু কোথাও এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হয়নি। ক্যাম্পাসে ঢোকার আগে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা আসতে বাধা প্রদান করেছে। এবং ক্যাম্পাসের ভেতরে বিএনপিপন্থী শিক্ষার্থীরা হেনস্তা করেছে।’ এ সময় তিনি সাধারণ শিক্ষার্থীদেরকে হতাশ না হয়ে আগামীর নতুন বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে মনোনিবেশ করার আহ্বান জানান।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর জিল্লুর রহমান, প্রক্টর আবুল বাশার ও ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. মুজাহিদুল ইসলাম, কৃষি অনুষদের প্রফেসর এবিএম সাইফুল ইসলামসহ শিক্ষকদের একটা টিম আলোচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূলধারার সংগঠন ব্যতীত সবধরনের সংগঠন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন।
পাশাপাশি নতুন কোনো সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনা করতে না করেন। এবং অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা উক্ত ঘটনার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষমা প্রার্থনা করবেন।