শিরোনাম

খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষ, বাড়িঘরে আগুন

Views: 29

চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ::মোটরসাইকেল চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়িতে এক বাঙালি যুবককে হত্যার ঘটনার জের ধরে সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে জেলার দীঘিনালা উপজেলায় পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে লারমা স্কয়ার এলাকায় সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এতে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন। আগুন দেওয়া হয় ৩৭টি ঘরবাড়ি ও দোকানপাটে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে খাগড়াছড়ি জেলা শহরের শালবন এলাকা থেকে মোহাম্মদ মামুন (৩৪) নামের এক ব্যক্তিকে গত মঙ্গলবার রাত ১২টার পর নোয়াপাড়া এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করেন কয়েকজন পাহাড়ি যুবক।

নির্যাতনের পর হাত-পা বাঁধা অবস্থায় মামুনকে শহরের স্লুইস গেট এলাকায় ফেলে রাখা হয়। ভোরে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা ও পুলিশের সহযোগিতায় মামুনকে উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মামুনের মাথা ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল।

এ ঘটনায় গত বুধবার বিকেলে খাগড়াছড়ি সদরে বিক্ষোভ করেন বাঙালিরা। গতকাল বিকেলে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে দীঘিনালা উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল বের করেন বাঙালি ছাত্ররা। মিছিল নিয়ে তারা লারমা স্কয়ারের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে পাহাড়িরা তাদের বাধা দেন। একপর্যায়ে তা রূপ নেয় সংঘাতে।

এতে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন। সংঘর্ষ চলাকালে লারমা স্কয়ার ও দীঘিনালা কলেজের আশপাশের প্রায় ৩৭টি ঘরবাড়ি ও দোকানপাট জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।

তবে সংঘাত ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পাহাড়ি-বাঙালি উভয় পক্ষ পাল্টাপাল্টি দোষারোপ করছে। স্থানীয় পাহাড়িরা বলছেন, মিছিলে পাহাড়িরা কেউ বাধা দেননি, বরং বিনা উসকানিতে মিছিল থেকেই অতর্কিতভাবে পাহাড়িদের ওপর হামলা চালিয়ে আগুন দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে বাঙালি শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধাতেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলা চালিয়ে পরে নিজেদের বাড়িঘরে আগুন দিয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করছেন পাহাড়িরা।

এদিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে মাঠে নেমেছে যৌথ বাহিনী। পুরো জেলার নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বলেন, ‘সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবিসহ জেলা প্রশাসন যৌথভাবে কাজ করছে। উসকানির ফাঁদে পা না দিয়ে সবাইকে সহনশীল হতে হবে।’

খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল বাতেন মৃধা জানান, এ বিষয়ে নিহত মামুনের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা প্রক্রিয়াধীন। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে ওই ব্যক্তির মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *