বরিশাল অফিস :: সরকার পরিবর্তন হলেও নৈরাজ্য কমেনি বলে অভিযোগ দক্ষিণাঞ্চলের পরিবহন মালিক শ্রমিকদের। বছরের পর বছর ধরে শ্রমিক কল্যাণের নামে চাঁদা তোলা হলেও তা জোটেনি শ্রমিকের ভাগ্যে। গত ১৬ বছরে বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে কোটি কোটি টাকার কোনো হদিস নেই বলে অভিযোগ উঠেছে। শ্রমিক কল্যাণ বাদে, লুটপাট হয়েছে অন্যসব ফান্ডের টাকাও।
পদ্মাসেতু চালুর পর, ঢাকা-বরিশাল রুটে যান চলাচল বেড়েছে কয়েকগুণ। সেইসঙ্গে বেড়েছে চাঁদাবাজির ধরনও। শ্রমিকদের কল্যাণের অজুহাতে দূরপাল্লার বাস থেকে সাড়ে ৩০০ টাকা ও অভ্যন্তরীণ পরিবহনের বাস থেকে প্রতিদিন ১২০ টাকা হারে মাসে কয়েক লাখ টাকার চাঁদা তোলা হতো বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে এসব টাকা কোন খাতে ব্যয় হয়েছে তা জানেন না চালক ও সুপার ভাইজাররা।
বাস চালকরা অভিযোগ করেন, প্রতিদিন ১২০ টাকা করে দিচ্ছি। প্রায় ১৪০০ থেকে ১৫০০ শ্রমিক আছে। বাস প্রতি আলাদা চাঁদা আছে। ইউনিয়ন বলছে, শ্রমিকদের মৃত্যু পর এককালীন টাকা পাবে। এমন অনেক মৃত শ্রমিকের পরিবার টাকার জন্য সমিতিতে ধরনা দিচ্ছে, কিন্তু কোনো সুফল মিলেনি। তাহলে শ্রমিকদের কল্যাণে তোলা টাকা যাচ্ছে কোথায়?
গত ১৬ বছর টার্মিনালের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন তো হয়নি, বরং বহিরাগতদের এনে, দখল করে অর্থ লোপাটের রাজ্য গড়ে ছিল বলে অভিযোগ শ্রমিক নেতাদের। এমনকি, শ্রমিক কল্যাণের নামে কেনা পাঁচটি বাস বিক্রি করে লুটপাট করা হয়েছে বলেও অভিযোগ তাদের।
বরিশাল বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘যদি প্রকৃত বাস চালকরা শ্রমিকদের নেতা হয়, তাহলে শ্রমিকদের কল্যাণ হবে। কিন্তু রাজনৈতিকভাবে আসা বহিরাগতরা নেতা হলে শ্রমিকের জন্য ভালো কিছু আসা করা যায় না।’
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চিফ হুইপ আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর বদৌলতে ২০১২ থেকে ২০১৯ এবং ২০২৩ সালের জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বরিশাল বাস মালিক সমিতির সভাপতি পদের দায়িত্ব পালন করেন তৎকালীন জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি আফতাব হোসেন। ২০২২ সালের মার্চ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত গোলাম মাশরেক এবং ২০২৩ সালের নভেম্বরে সাবেক সিটি মেয়র খোকন আব্দুল্লাহর সহযোগিতায় এ দায়িত্ব নেন মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অসীম দেওয়ান।