পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: পটুয়াখালীর সাবেক এমপি শাহজাহান খান হত্যাকান্ডের ঘটনায় জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সহ ৩৬ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলাপটুয়াখালী প্রতিনিধি :: পটুয়াখালীর জননন্দিত বিএনপি নেতা গলাচিপা-দশমিনা থেকে নির্বাচীত সাবেক এমপি শাহজাহান খান হত্যাকান্ডের ঘটনায় জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি কাজী আলমগীর সহ ৩৬ জনের নাম উল্লেখ করে পটুয়াখালী সদর থানায় থানায় মামলা দায়ের করেছেন ঘটনার প্রায় ২ বছর পর নিহত শাহজাখানের ছেলে জেলা যুবদলের সাধারন সম্পাদক শিপলু খান।
মামলায় জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক তানভির আহম্মেদ আরিফ,শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ: গনি সহ ৩৪ জনের নাম উল্লেখ সহ এবং অজ্ঞাতনামা ১ থেকে দেড়শো জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামালার বিবরনে প্রকাশ ,পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা -দশমিনা থেকে নির্বাচীত সাবেক সংসদ সদস্য ,বর্তমান জেলা আহবায়ক কমিটির ১ নং সদস্য শাহজাহান খান ২০২২ সালের ৫ নভেম্বরের বিএনপির বরিশাল বিভাগীয় সমাবেশে যোগদানের উদ্দেশ্যে ৪ নভেম্বর বিকেলে নেতাকর্মীদের নিয়ে ৭/৮টি মটর সাইকেল যোগে পটুয়াখালী-বরিশাল মহসড়কের শিয়ালী এলাকায় পৌছলে মহসমাবেশ বানচালকরার পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মহসমাবেশে যোগদানকারীদরে পথে বাধা দেয়ার অংশ হিসেবে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি কাজী আলমগীর সহ জেলা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা মোতাবেক খুন করার পরিকল্পনায় আসামীরা বে-আইনীভাবে জনতাবদ্ধভাবে শাহজাহান খান সহ সাথে থাকা নেতা-কর্মীদের উপর দা,রামদা, রোহার রড জিআইপাইপ, লাঠিসোটা নিয়ে হামলাচালায় । এসময় মামলায় উল্লেখিত আসামাদীরে বেশ কয়েকজন শাহজাহান খানের মাথায় রামদার কোপ, জিআইপাইপ দিয়ে পিটিয়ে শরীরেরে বিভিন্ন অংশ জখম সহ ডানপাশের কোমড়ে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে মারাতœক রকম জখম করে। এ সময় বহরের ৪ টি মটর সাইকেল ভাংচুর সহ প্রত্যেককে পিটিয়ে জখম সহ পকেটে থাকা নগদ টাকা এবং মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। পরে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা শাহজাহান খানকে কেউ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করালে মেরে ফেলার হুমকী দিয়ে তাদের চিকিৎসা কিবাং হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাদের মেরে ফেলার হুমকী দিয়ে চলে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন গুরুতর জখম অবস্থায় শাহজাহান খানকে শহরের সবুজবাগের বাসায় নিয়ে যায় । স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের ভয়ে শহজাহানখানকে পরিবারের লোকজন হাসপাতালে ভর্তি করতে না পেরে বাসায় বসে চিকিৎসা চালান। পরবর্তীতে শাহজাহান খানের অবস্থা অবনতি ঘটতে থাকলে আসামীদের লোক চক্ষুর আড়ালে তাকে ঢাকায় নিয়ে ২২ নভেম্বর ঢাকায় পপুলার হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ২৫ নভেম্বর ঢাকার ধানমন্ডি ল্যাব এইড হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৪ নভেম্বর হামলার ঘটনায় কিডনীতে আঘাত জনিত জটিলতায় ২৮ নভেম্বর শাহজাহান খান মারা যান। পরবর্তীতে ঢাকায় পল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিসে নামাজে জানাযা শেষে পটুয়াখালী বড় মসজিদ মাঠে, গলাচিপা এবং পরে নিজ বাড়ী গলাচিপার সুতাবাড়িয়ায় জানাযা শেষে দাফন করা হয়।
মামলার সত্যতার কথা স্বীকার করে পটুয়াখালী সদর থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: জসিম জানান, এ বিষয়ে পটুয়াখালী সদর থানায় একটি হত্যা মামলা মামলা দায়ের হয়েছে মামলা নং ৩৯ ,তারিখ ২৬.৯ ২০২৪ । এ বিষয়ে পরবর্তী প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা করা হবে।
শাহাজাহন খান হত্যাকান্ডের ঘটনায় হত্যা মামলা দায়েরের বিষয়েএ প্রতিবেদকের সাথে কথা বলতে গিয়ে জেলা যুবদলের সাধারন সম্পাদক শিপলু খান বলেন,আওয়ামীলীগের আমলে কোন মানুষই গুম, হত্যার কোন সঠিক বিচার পায়নি। আমার পিতা ছিলেন বিএনপির একজন সাবেক এমপি, জেলা- উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা। সুতরাং তার হত্যার মামলা দায়ের করা ছিল আমার জন বিরাট হুমকী স্বরুপ। আমি যাতে আমার পিতার মৃত্যুর পোর্স্ট মর্টেম না করতে পারি, মামলা না করতে পারি সে জন্য আমার উপর আওয়ামীলীগের জেলা পর্যায়ের দায়িত্বশীল হত্যাকান্ডের জড়িত নেতারা প্রচন্ড ভাবে থ্রেট করে। আমি যদি মামলা করতাম তাহলে তারা মামলাটা শেষ করে ফেলতো প্রশাসনের সহায়তায়। তাই আমি আমার পিতার হত্যাকান্ডের পর পল্টনের বিএনপির কেন্দ্রী অফিসের সামনে নামাযে জানায, এবং পটুয়াখালীর জানাযায় বলেছিলাম এ সরকারের কাছে আমি বিচার চাইনা। যখন দেশে সুষ্ঠু বিচার পাওয়া সম্ভব হবে তখন আমি আমার পিতার হত্যাকান্ডের বিচার চাইবো।এখন দেশ আওয়ামী স্বৈরশাসন থেকে মুক্তি পেয়েছে , তাই আমি এ হত্যা মামলা দায়ের করেছি, আমার পিতার হত্যাকান্ডের সঠিক বিচার চাইতে।