পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: গত ৩ বছর ঝুঁকিপূর্ণ আয়রন সেতু দিয়ে চলাচল করছেন পথচারী ও শিক্ষার্থীরা। যেকোনো মুহূর্তে ধসে পড়ে ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনা এড়াতে এলাকাবাসীর উদ্যোগে আয়রন ব্রিজে প্রবেশের দুই মাথায় দেওয়া হয়েছে বেড়া। যাতে ভুলেও কোনো যানবাহন উঠতে না পারে ওই ব্রিজে। ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটি অপসারণ করে নতুন একটি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর।
সরেজমিন পটুয়াখালীর মহিপুর থানার লতাচাপলী ইউনিয়নের তাহেরপুর ও আজিমপুর গ্রামের মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত লক্ষ্মীরখালের ওপর ২০০১ সালে নির্মিত হয় একটি আয়রন ব্রিজ। দুই যুগের ব্যবধানে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে এটি। ব্রিজের মূল অংশের অবকাঠামো ধসে পড়েছে। মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে গেছে নিচের লোহার অ্যাঙ্গেলগুলো। কাঠের তত্ত্ব দ্বারা কোনোমতে জোড়াতালি দিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা পারাপার করছেন। তাহেরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আজিমপুর একে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন। চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন দু পাড়ের ১০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। এছাড়াও চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এখানকার কৃষকেরা। দ্রুত সময়ের মধ্যে কৃষকদের উৎপাদিত ফসল নিতে পারছেন না বাজার-ঘাটে। দুর্ভোগ পোহাতে হয় জরুরি প্রয়োজনে অসুস্থ রোগীদের।
তাহেরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবুল বাশার হাওলাদার বলেন, ‘কয়েক বছর ধরে ব্রিজটি চলাচলের অনুপযোগী। এলাকাবাসী এবং শিক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলেও এটি অপসারণ কিংবা নতুন ব্রিজ নির্মাণের কোনো উদ্যোগ দেখছি না। আমিও প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে এই সেতু পার হয়ে বিদ্যালয় আসছি।’
আজিমপুর একে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে আমাদের। এই ব্রিজে উঠলেই ভয় করে। কখন বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটে বলা যায় না।’
স্থানীয়রা জানান, ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এর দু পাশে বেড়া দিয়ে আটকে দেওয়া হয়েছে, যাতে লোকজন হেঁটে পার হলেও গাড়ি চলাচল করতে না পারে। গাড়ি পারাপার বন্ধ না থাকলে এতদিনে ধসে যেত বলে মনে করছেন তারা। তবে এভাবে বেশিদিন থাকলে হয়তো আকস্মিক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এটি অপসারণ করে শিগগিরই একটি গার্ডার সেতু নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর।
স্থানীয় বাসিন্দা আল-আমিন হোসেন নীরব বলেন, ‘আমরা দুর্ঘটনায় এড়াতে দু পাশে গাছের বেড়া দিয়ে রেখেছি। গাড়ি চলাচল করলে এতদিনে ধসে পড়ত। কাঠের তক্তা দিয়ে কয়েকবার জোড়াতালি দিয়েছি। এখন আর জোড়াতালি দেওয়াও সম্ভব হচ্ছে না।’
কলাপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) কাজী ফয়সাল বারী পূর্ণ অচিরেই নতুন ব্রিজ নির্মাণের আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ থাকা এ সেতুটির বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।’
এ ব্যাপারে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘ব্রিজটি নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে নতুন ব্রিজ নির্মাণ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।