পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: পটুয়াখালীর বাউফলে বিয়ের দাবিতে প্রেমিক সাইফুল মোল্লা (২৫) নামের এক যুবকের বাড়িতে অনশন করছে এক কিশোরী।
শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টার দিকে ওই কিশোরী সাইফুলের বাড়িতে অনশন শুরু করে। এদিকে অভিযুক্ত প্রেমিক সাইফুল কিশোরীর গয়না নিয়ে পালিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সাইফুল মোল্লা উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের সৌলা গ্রামের তারের পোল সংলগ্ন মোল্লা বাড়ির আহম্মেদ মোল্লার ছেলে।
ভুক্তভোগী কিশোরী বলে, সাইফুল মোল্লার সঙ্গে দীর্ঘদিন আমার প্রেমের সম্পর্ক। বিষয়টা জানাজানি হলে আমার মামা সাইফুলকে মারধর করে। পরে সে আমাকে কিছু টাকা ম্যানেজ করতে বলে এবং পালিয়ে বিয়ে করার আশ্বাস দেয়। কিছুদিন আগে আমি মায়ের শেষ সম্বল সামান্য গয়না সাইফুলের হাতে তুলে দেই এবং শুক্রবার দুপুরে আমরা পালিয়ে যাওয়ার জন্য মোটরসাইকেল করে রওনা দেই। পথে মামার হাতে ধরা পড়ি। এর মধ্যে বিষয়টি স্থানীয়দের মধ্যে জানাজানি হয়ে যায়। পরবর্তীতে লোকলজ্জার ভয়ে সাইফুলের নানা আমাকে ঘরে তুলতে অস্বীকৃতি জানায়। তখন স্থানীয় ইউপি সদস্য আমাকে চৌকিদারের বাসায় রাখতে বলেন।
কিশোরী আরও বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে বিষয়টা সমাধানের কথা ছিল। কিন্তু দুপুর ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত আমি চৌকিদারের বাড়িতে থাকলেও কোনো সমাধান হয়নি। রাত বেশি হওয়ায় পরে চৌকিদার আর আমাকে ঘরে রাখতে চায় না। সাইফুলের নানা আমাকে ঘরে তুলবে না, তাই আমি ওর বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশন করছি। ঘরের মধ্যে তারা কেউ নেই। আমার মায়ের গয়না তার কাছে। তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমার যাওয়ারও কোনো জায়গা নেই।
এ বিষয়ে চৌকিদার বাবুল বলেন, মেম্বার (জালাল মোল্লা) তাকে বলেছেন কিশোরীকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বাসায় রাখতে, এর মধ্যে সে সমাধানের ব্যবস্থা করবে। ৭টার পরে মেম্বার আমাকে বলেন, ইউএনও স্যার তাকে পরামর্শ দিছেন, মেয়েকে পরিবারের কাছে পৌঁছে দিতে। কারণ মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক না। আমি মেয়েকে নেওয়ার জন্য তার পরিবারকে বিষয়টি জানিয়েছি। ছেলের পরিবারের কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারা যায়নি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জালাল মোল্লা বলেন, সাইফুল আমার ভাতিজা হলেও তার পরিবারের সঙ্গে আমার দীর্ঘদিন কোনো সম্পর্ক নেই। মেয়ে যেহেতু প্রাপ্তবয়স্ক হয়নি এখানে তাই প্রশাসনকে না জানিয়ে বিয়ে দেওয়া অসম্ভব। আমরা চেয়েছিলাম স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বসে প্রাথমিক সমাধান করে, প্রাপ্তবয়স্ক হলে বিয়ের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে। কিন্তু বসার জন্য ছেলেসহ তার পরিবারের কাউকেই খুঁজে পাচ্ছি না। গ্রামের কেউ দায়িত্ব নিচ্ছে না, আমি কিভাবে সমাধান করব।
বাউফল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।