চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক :: লেবাননে ইসরায়েলের স্থল বাহিনীর অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে গত ৬ দিনে সেখানে নিহত হয়েছেন ৪৪০ জন হিজবুল্লাহ যোদ্ধা। নিহত এই সেনাদের মধ্যে ৩০ জন গোষ্ঠীটির বিভিন্ন পর্যায়ের কমান্ডার ছিলেন।
শনিবার রাজধানী জেরুজালেমে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি।
সংবাদ সম্মেলনে হাগারি বলেন, “আমরা হিজবুল্লাহ’র সন্ত্রাসীদের লেবাননের উত্তর দিকে ঠেলছি। সন্ত্রাসীদের একটি অংশ এলাকা থেকে পালিয়েছে, বাকিরা আমাদের সেনাসদস্যদের কাছে পরাজিত ও নিহত হয়েছে।”
একই দিন এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হারজি হালেভি বলেন, “প্রতিরক্ষা বাহিনী হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখবে। লক্ষ্যপূরণ হওয়ার আগ পর্যন্ত অভিযানে কোনো বিরাম আসবে না, হিজবুল্লাহকেও কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না।
ইরানের সমর্থন ও মদতপুষ্ট হিজবুল্লাহ বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী। লেবাননভিত্তিক এই গোষ্ঠীটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮৫ সালে। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই এই গোষ্ঠীটি ইসরায়েল রাষ্ট্রকে ধ্বংসের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তের অপর পারে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল। এই অঞ্চলটি হিজবুল্লাহর প্রধান ঘাঁটি এবং গোষ্ঠীটির অধিকাংশ সামরিক স্থাপনার অবস্থান এখানে। গত ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরুর পর হামাসের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া শুরু করে হিজবুল্লাহ। পাল্টা জবাব দেওয়া শুরু করে ইসরায়েলও। গত এক বছরে উভয় পক্ষের সংঘর্ষে লেবাননে প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজারেরও বেশি মানুষ। এই নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা ৫ শতাধিক।
গত ২০ সেপ্টেম্বর থেকে লেবাননে অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের বিমানবাহিনী। প্রায় ১০ দিনের সেই অভিযানে নিহত হয়েছেন হিজবুল্লাহর প্রধান নেতা ও সেক্রেটারি জেনারেল হাসান নাসরুল্লাহসহ বেশ কয়েক জন শীর্ষ কমান্ডার। এতে গোষ্ঠীটির চেইন অব কমান্ডের সর্বোচ্চ স্তর প্রায় ভেঙে পড়েছে।
বিমান অভিযান পর্বের পর গত ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে দক্ষিণ লেবাননে অভিযান শুরু করেছে আইডিএফের স্থল বাহিনী।
এর আগে এক বিজ্ঞপ্তিতে আইডিএফ বলেছিল, ইসরায়েলের সীমান্তবর্তী দক্ষিণ লেবাননের গ্রামগুলোতে সীমিত ও স্থানীয় পর্যায়ে অভিযান চালানো হবে। তবে কতদিন এ অভিযান চলবে, সে সম্পর্কিত কোনো তথ্য বা ইঙ্গিত এখনও দেয়নি আইডিএফ।