শিরোনাম

ভোলায় হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য ঢেঁকি

Views: 19

বরিশাল অফিস :: কালের বিবর্তন আর আধুনিক প্রযুক্তির ফলে দ্বীপ জেলা ভোলা থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ঢেঁকি শিল্প। আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া এখন দেশের প্রতিটা অঞ্চলে পৌঁছে গেছে । বদলে যেতে বসেছে শহর থেকে গ্রামাঞ্চলের মানুষের জীবন যাত্রার মান। মানুষের জীবনযাত্রাকে সহজ করতে তৈরি করা হয়েছে নানা আধুনিক যন্ত্রপাতি, ব্যবহার হচ্ছে নানা রকম প্রযুক্তি।

বিভিন্ন ধরনের যন্ত্র আবিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গে সেসব পুরোনো ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে। কালের বিবর্তনে ঢেঁকি এখন শুধু ঐতিহ্যের স্মৃতিবহন করে। দিন দিন ঢেঁকি শিল্প বিলুপ্ত হলেও একে সংরক্ষণের কোন উদ্যোগ নেই।

প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে হারিয়ে যেতে বসেছে এক সময়ের গ্রাম-বাংলার এই ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি শিল্প। পাল্টে যেতে বসেছে গ্রামের সেই নিত্য দিনের চিত্র।

জেলার বিভিন্ন গ্রামে এখন আর ঢেঁকিতে ধান ভাঙার দৃশ্য চোখে পড়ে না, তেমনি শোনা যায় না ঢেঁকির ধুপধাপ শব্দ। শহরে তো বটেই আজকাল অনেক গ্রামের ছেলে মেয়েরাও ঢেঁকি শব্দটির সঙ্গে পরিচিত হলেও বাস্তবে দেখেনি।

আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি এখন আর চোখে পড়ে না। ঢেঁকিই ছিল এক সময়ের গ্রামীণ জনপদে চাল, চালের গুঁড়া ও আটা তৈরির একমাত্র মাধ্যম। বিভিন্ন ধরনের যন্ত্র আবিষ্কারের ফলে ঢেঁকি এখন শুধু ঐতিহ্যের স্মৃতি বহন করে। দিন দিন ঢেঁকি শিল্প বিলুপ্ত হলেও একে সংরক্ষণের আর কোনো উদ্যোগ নেই বললেই চলে। এখন ঢেঁকির আর দেখাই মেলে না। আধুনিক যুগে সেই ঢেঁকির জায়গা দখল করে নিয়ে বিদ্যুৎচালিত মেশিন, যার মাধ্যমে মানুষ এখন অতি সহজেই অল্প সময়ে ধান থেকে চাল পাচ্ছে। গ্রামে গ্রামে বসছে চাল তৈরির কল। হাতের কাছে বিভিন্ন যন্ত্র আর প্রযুক্তি সহজলভ্য হওয়ায় ঢেঁকির মতো ঐতিহ্যবাহী অনেক কিছুই এখন হারিয়ে যাচ্ছে।

ভোলা সদর পূর্ব ইলিশার স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, আগে প্রায় সবার বাড়িতে ঢেঁকি ছিল। সেই ঢেঁকিছাঁটা চাল ও চালের পিঠার গন্ধ এখন আর নেই। পিঠার স্বাদ ও গন্ধ এখনো মনে পড়ে। আধুনিক প্রযুক্তির ফলে গ্রামবাংলায় ঢেঁকির ব্যবহার কমে গেছে।

ভোলা সদর উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের গুলুনুর বেগন বলেন, আগে আমরা ঢেঁকি দিয়ে বিভিন্ন খাদ্যদ্রবাদী মাড়াই করেছি। আগে প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন ঢেঁকিতে চালের আটা তৈরি করতে আসত। কিন্তু এখন আর তেমন কেউ আসে না। এখন সবাই মেশিনে চাল মাড়াই করে।

মনপুরা উপজেলার সাকুচিয়া গ্রামের সাফিয়া খাতুন বলেন, ঢেঁকি চাটা চাল খুবই সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যসম্মত। এখন ডাক্তাররা আমাদের এ চালের ভাত খাওয়ার পরামর্শ দেন। ঢেঁকি চাটা চালের গুঁড়ো দিয়ে তৈরি পিঠা অনেক সুস্বাদু হতো। যদিও এখন আর আগের মতো প্রতি বাড়িতে কাঠের ঢেঁকি পাওয়া যায় না, যার কারণে একটু কষ্ট করে হলেও কয়েক বাড়ি পেরিয়ে নিজেদের ইচ্ছে মত প্রয়োজনের সময় আমাদের ঢেঁকিতে চাল ও পিঠার গুঁড়ো ভানতে হয়।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে আগামী প্রজন্ম যাতে বাংলার এসব সংস্কৃতির সঙ্গে নিজেদের মেলবন্ধন স্থাপন করতে পারে, সে জন্য সরকারি বা বেসরকারিভাবে উদ্যোগ নিতে হবে।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *