শিরোনাম

ভোলায় অস্থির নিত্যপণ্যের বাজার, হতাশ ক্রেতারা

Views: 28

বরিশাল অফিস :: ভোলায় প্রতিদিনই বাড়ছে সবজি, মাছসহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। ক্রেতাদের অভিযোগ সিন্ডিকেটের কারসাজি আর বিক্রেতারা বলছেন চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম।

গত ১ সপ্তাহের ভোলার বিভিন্ন বাজারের নিত্যপণ্যের দাম বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে ভোলার বাজারে বেশিরভাগ সবজির দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত। তবে নিম্নগামী পেঁপের দাম। লাগামহীন কাঁচামরিচ। এছাড়া চালসহ বেড়েছে ভোজ্যতেলের দাম।

বাজারে প্রতি কেজি বরবটি ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কাচাঁমরিচ ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহের তুলনায় বরবটিতে বেড়েছে ৩০ টাকা আর কাচাঁমরিচে বেড়েছে প্রায় ৮০ টাকা।

কাকরোল, পটল, মুলা, করলা, ঝিঙ্গা ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকার ভেতর। তবে টমেটো ও গাঁজর বিক্রি হচ্ছে ১৫০ ও ১৬০ টাকায়, যা গত সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে ৩০ টাকা। কেজিতে ৫০ থেকে ৫৫ টাকার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে আলু দাম।

এদিকে পেঁয়াজ, রসুনের দাম স্থিতিশীল থাকলেও বেড়েছে চায়না আদার দাম, বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ২৫০ টাকায়। যা সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে ৩০ টাকা।

একই চিত্র চাল ও মাছের বাজারে। প্রকারভেদে প্রতিকেজি মোটা চাল ৫৪ থেকে ৫৭ টাকা ও মাঝারি চাল (আটাশ) বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকায়।
খোলা সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ৬ থেকে ৮ টাকা। কোয়ালিটি খুচরা ১৬৫ টাকা ও সুপার সয়াবিন বিক্রি করা হচ্ছে ১৭৩ থেকে ১৭৫ টাকা লিটার।

সপ্তাহের ব্যবধানে ইলিশের দাম না বাড়লেও কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে সব প্রকার নদী ও সামুদ্রিক মাছের দাম। বাড়েনি পুকুরে চাষ করা মাছসহ গরু ও খাসির মাংসের দাম।

বাজার করতে আসা ক্রেতা বাদল, মো. জিলানি, ওমর ফারুক জানান, বাজারের নিত্যপণ্যের দাম মধ্যবিত্তদের সাধ্যের বাইরে চলে গেছে। কাচাঁবাজারসহ দিন দিন সব পণ্যের দাম বাড়ছে, ক্রয় করতে আমাদের কষ্ট হচ্ছে।

ক্রেতারা আরও জানান, ভোলার নিত্যপণ্যের বাজারে অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে বাজারে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যদি প্রশাসন নিয়মিত মনিটরিং করতো তাহলে বাজার নিয়ন্ত্রণে আসতো বলেও জানান তারা।

সবজি বিক্রেতা রাশেদ, হুমায়ুন ও ইকরাম জানান, সব মালের দাম মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও টমেটো গাজর ও কাঁচা মরিচের দাম নিয়ন্ত্রণে বাইরে। বাজারে মালের কম সরবরাহ কারণে চাহিদা বেশি। যার কারণে দামও বেশি।

বিক্রেতারা আরও বলেন, আড়ত থেকে যে দামে কিনে আনি সে দামেও বিক্রি করি, তারপরও কাস্টমারের সঙ্গে আমাদের মনোমালিন্য হয়। তবে আমরা খুচরা বিক্রেতারা কোনো সিন্ডিকেট করি না। আড়ত থেকে কেনা দামের ওপর নির্ভর করে খুচরা বাজারে বিক্রি করি। সিন্ডিকেটের কারসাজির বিষয়ে আড়তদাররা জানেন, আমরা জানি না।

সিন্ডিকেটের কারসাজির বিষয়টি অস্বীকার করে পরিবহন খরচ বৃদ্বি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ওপর দোষ চাপিয়ে আড়তদাররা বলছেন, বৃষ্টিতে ভোলায় উৎপাদিত অনেক সবজি নষ্ট হওয়ায় ভোলার বাজারে কাঁচামালের সংকট দেখা দিয়েছে। সংকট নিরসনে যশোর চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আমরা কাঁচামাল মাল কিনে এনে ভোলার বাজারের খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করি। তাদের দাবি, ভোলার বাজারে স্থানীয় পণ্যের যোগান বাড়লে সংকট কেটে যাবে, একইসঙ্গে দামও কমবে।

তবে ভোলা জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মো. মোস্তফা সোহেল বার্তা ২৪.কম কে জানান, আমাদের নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বাজার মনিটরিং চলমান রয়েছে। এরপরও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে যদি কোনো ব্যবসায়ী নিত্যপণ্যের অতিরিক্ত মুনাফা আদায়ের চেষ্টা করেন তাহলে কৃষি বিপণন আইনে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *