পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: পটুয়াখালী সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের মুচির পুল বাজার ব্রিজ থেকে শারিকখালী মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংযোগ সড়ক ও বসাক বাজার মহাসড়কের সংযোগ সড়ক (Road code = 578955366, 578955269) পর্যন্ত অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ মাটির কাচা রাস্তাটি স্বাধীনতার ৫৩ বছর পার হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত পাকাকরণ করা হয়নি। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আউলিয়াপুর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দাসহ কালিকাপুর ইউনিয়নের জনসাধারণের।
সরেজমিনে দেখা যায়, মুচির পুল বাজার ব্রিজের দক্ষিণ পাশ দিয়ে শুক্রবারের হাট হয়ে আবদুল স্টান ও হাজী করিম রাইচ মিল এর সামনে দিয়ে জবান গাজী বাড়ি (শারিকখালী মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংযোগ সড়ক) পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তাটির বিভিন্ন স্থানে ছোট বড় অসংখ্য গর্তসহ চুঙ্গা ভেঙ্গে খালে বাধ সৃষ্টি হয়ে গেছে। জোয়ারের পানি রাস্তার ওপর দিয়ে গড়িয়ে ফসলের মাঠ ডুবে যায় ও বাড়িঘরে ঢুকে পড়ে। সাম্প্রতিক কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে রাস্তায় হাঁটু পরিমাণ পানি উঠে গেছে।
বিগত ৮-৯ বছর আগে জবান গাজী বাড়ি থেকে প্রায় মৃধা বাড়ি পর্যন্ত ৩০০ মিটার রাস্তায় ইটের সোলিং হয়েছিল। তাও মেরামত, সংস্কার ও সম্প্রসারণের অভাবে ভেঙে গেছে এবং মাঝে মাঝে পানির গর্ত হয়ে গেছে।
জনসাধারণের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম এ রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন গড়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষ চলাচল করে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ৩ ইউনিয়নের শিক্ষার্থীরা এই পথে শারীকখালী মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাতায়াত করে থাকে।
এছাড়া রাস্তাটি পাকাকরণ করা হলে মুচির পুল বাজার থেকে আবদুল স্টান হয়ে বসাক বাজার হয়ে পটুয়াখালী চৌরাস্তা, শারিকখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ও বিপরীত দিকে মুচির পুল হয়ে ২ নং বাধঘাট এবং মুচির পুল হয়ে বাদুরা বাজার যাতায়াতে সুবিধা হবে। এককথায় মহাসড়কের সঙ্গে বিকল্প সড়ক যোগাযোগ মাধ্যম হতে পারে।
জনগুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তাটি নিয়ে শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, “শারিকখালী মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়, বসাক বাজার ব্যতীত ইসলামিয়া হোসাইনিয়া ময়দান মাদ্রাসা, বড় আউলিয়াপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শারিকখালী নূরানী তালিমুল কুরআন মাদ্রাসাসহ উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এবং দক্ষিণাঞ্চলের বিদ্যাপীঠ পটুয়াখালী সরকারি কলেজের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের রাস্তাটি একমাত্র ভরসা। এই রাস্তাটি পাকাকরণ করা হলে এলাকার সর্বস্তরের মানুষের উপকার হবে। তাই জরুরি ভিত্তিতে রাস্তাটি পাকা করার জন্য জনপ্রতিনিধিসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জোর দাবি জানাচ্ছি।”
স্থানীয় ৮০ বছরের বয়স্ক একজন বলেন, “ইউনিয়নে সব থেকে ১ নং ওয়ার্ড পিছিয়ে আছে। ইচ্ছে করেই চেয়ারম্যান উওর আউলিয়াপুরের মানুষের সাথে এমন করছে। সাবেক চেয়ারম্যানের বাড়ি এই রাস্তায় তাই আমাদের কোনো উন্নতি নাই।”
এ বিষয়ে হানিফ মৃধা নামে একজন স্থানীয় বলেন, “এক যুগেও একটু করে মাটি দেয়া হয়নি, উন্নয়ন বঞ্চিত এ রাস্তাটি পাকাকরণ এখন গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। নির্বাচন এলে প্রার্থীরা ও রাজনৈতিক নেতারা রাস্তাটি পাকা করার প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে আর পাকা করার উদ্যোগ নেওয়া হয় না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।”
দিন ইসলাম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, “জন্মের পর রাস্তাটি মাটি দিতে দেখিনি, মেরামত, সংস্কার ও পাকা তো পরের কথা। মেম্বার-চেয়ারম্যানের বাড়ির ধারের লোক না হলে আমাদের রাস্তা হয় না। একটু বৃষ্টি হলেই পানি উঠে যায়, স্কুল কলেজে যাওয়ার মতো অবস্থা থাকে না।”
এ ব্যাপারে পটুয়াখালী এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ হোসেন আলী বলেন, “এই সংক্রান্ত সমস্যার কথা এখন পর্যন্ত স্থানীয় কোনো জনপ্রতিনিধি আমাদের জানায়নি। আপনার কাছ থেকেই প্রথম শুনলাম। খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে আমাদের কাছে স্থানীয়রা আবেদন করলে রাস্তাটি দ্রুত পাকা করার চেষ্টা করব। এর জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।”