শিরোনাম

কোটা আন্দোলনে নিহত গলাচিপার সাগর এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ

Views: 19

পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েও ফলাফল দেখার সুযোগ হলো না কোটা আন্দোলনে নিহত সাগর গাজীর (২০)। তার এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল জিপিএ ৩ দশমিক ৯২।

গত ৫ আগস্ট ঢাকার উত্তরার জসিম উদ্দিন ফ্লাইওভার এলাকায় এলোপাথারি গুলিতে নিহত হয় সাগর। তিনি পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার ডাকুয়া ইউনিয়নের পূর্ব পাড় ডাকুয়া গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে।

সাগরের ফলাফল শুনে বাবা ও পরিবারের সদস্যরা আবেগ-আপ্লুত হয়ে পড়েন। তার মা কবরের পাশে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। জানা যায়, সাগরের বাবা সিরাজুল ইসলাম গাজী পেশায় রাজমিস্ত্রি এবং মা সাহিদা বেগম গৃহিণী। সাগর তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট। ২০২১ সালে এসএসসি পরীক্ষায় উলানিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের মানবিক বিভাগ থেকে উত্তীর্ণ হয়। ২০২৩ সালে একই কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একটি বিষয়ে ফেল করে, কিন্তু এবারের পরীক্ষায় সেই বিষয়ে উত্তীর্ণ হন। নিহতের দুই মাস আগে সিটি অনলাইন কোম্পানিতে চাকরিতে যোগদান করে।

সাগর কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় কর্মী ছিলেন। মৃত্যুর একদিন আগে তার ফেসবুক প্রোফাইলে পোস্ট দিয়েছিলেন, “আজ যদি আমি মারা যাই, বিজয়ের পর আমার কবরে একটা পতাকা দিয়েন।” তার শেষ ইচ্ছে অনুযায়ী, তার কবরের সামনে জাতীয় পতাকা টানানো হয়েছিল।

জানা যায়, ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়লে ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে উৎসুক জনতা রাস্তায় নেমে আসে। এ সময় সাগরসহ তার সহকর্মীরা উত্তরার জসীম উদ্দিন ফ্লাইওভার এলাকায় বের হন। উৎসুক জনতা র‌্যাব-১ দফতরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে র‌্যাব এলোপাথারি গুলি করে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে সাগরের মাথায় আঘাত লাগে। স্থানীয়রা সাগরকে ক্রিসেন্ট হাসপাতালে নিলেও তাকে বাঁচানো যায়নি। তার লাশ ৬ আগস্ট ভোরে গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায়। একই দিন সকাল সোয়া ১০টায় উলানিয়া বন্দরের মাসজিদুল আয়শা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গনে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেয়। পরে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

কোটা আন্দোলনে নিহত সাগর গাজীর এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল নিশ্চিত করেছেন উলানিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো: এমদাদ হোসেন।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *