পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: আত্মশুদ্ধি ও অশুভকে বর্জন করে সত্য ও সুন্দরকে বরণে পটুয়াখালীতে নানা ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বৌদ্ধধর্মাবলম্বীরা পালন করছেন অন্যতম ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) ভোরে পঞ্চশীল ও অষ্টশীল প্রার্থনা এবং বুদ্ধপূজার মধ্যে দিয়ে দিনটির সূচনা করা হয়। পরে বুদ্ধের স্মরণে বিভিন্ন ফল ও হরেক রকমের পিঠাপুলি বৌদ্ধ ভিক্ষুকে প্রদান করেন বৌদ্ধ ধর্মের বয়স্ক নারী-পুরুষরা। উৎসবটি ঘিরে রাখাইন পাড়ায় সাজ সাজ রব বিরাজ করছে। ঘরে ঘরে তৈরি করা হচ্ছে নিজস্ব সংস্কৃতিতে নানান পিঠাপুলি আর হরেক রকমের খাবার। দেশের নানা প্রান্ত থেকে বৌদ্ধ ধর্মের লোকেরা জমায়েত হয়েছে বৌদ্ধ বিহারে। পাড়ায় পাড়ায় নানা বয়সের রাখাইন নারী-পুরুষরা নতুন পোশাক পরিধান করে বৌদ্ধ বিহারে এ উৎসবে অংশ নিয়েছে।
কুয়াকাটার শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহারের উপাধাক্ষ্য ইন্দ্র বংশ ভান্তে জানান, প্রবারণা উৎসবকে ঘিরে তারা ২৮ বুদ্ধের আসন পরিষ্কার ও নতুন সাজে রূপ দিয়েছেন। কঠিন চীবর দান ও সন্ধ্যায় শতাধিক ফানুস উড়িয়ে ধর্মীয় আচারের মাধ্যমে এবারের প্রবারণা উৎসবের সমাপ্তি হবে।
মিশ্রীপাড়া সিমা বৌদ্ধ বিহারের সভাপতি মংলাচি তালুকদার বলেন, “এটা আমাদের প্রধান উৎসবের মধ্যে অন্যতম। এ উৎসবকে ঘিরে নানা বয়সি মানুষের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করছে। জগতের সবার মঙ্গল কামনা করছি। আজ আলোর ঝলকানিতে ফানুস উড়ানো হবে। আজকের এ উৎসবে চাওয়া হলো জাগতিক সবাই ভালো থাকুক। কারো অমঙ্গল না হোক। আমাদের সামাজিক অবস্থা অবনতি হচ্ছে। দিনে দিনে আমরা কোনঠাসা হয়ে পড়ছি। এখান থেকে মুক্তি চাই।”
উল্লেখ্য, আড়াই হাজার বছর আগে গৌতম বুদ্ধ বুদ্ধত্ব লাভের পর আষাঢ়ি পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী তিথি পর্যন্ত তিন মাস বর্ষাবাস পালন শেষে প্রবারণা উৎসব পালিত হয়। প্রবারণা পূর্ণিমার পরদিন থেকে এক মাস প্রতিটি বৌদ্ধবিহারে শুরু হবে কঠিন চীবর দান উৎসব।