চন্দ্রদ্বীপ নিউজ :: চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীকে ছাত্র আন্দোলন নিহতসহ পৃথক তিনটি মামলায় ৮ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাঁকে আরও ৫ মামলায় শোন অ্যারেস্ট (গ্রেফতার) দেখান আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে চট্টগ্রাম জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারদিন মুস্তাকিম তাসিম ও অতিরিক্ত চিফ চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ার ভার্চুয়াল আদালত শুনানি শেষে এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে ফজলে করিমকে নিরাপত্তাজনিত কারণে সশরীরে আদালতে হাজির করা হয়নি। আদালতে তাকে হাজির না করায় ক্ষোভ জানিয়ে বিক্ষোভ করেছেন বিক্ষুব্দ লোকজন। ওই সময় তারা ফজলে করিমের ফাঁসি দাবি করে নানা স্লোগানও দেন।
আদালত সূত্র জানায়, ফজলে করিমকে রাউজান থানার মামলায় চট্টগ্রাম জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারদিন মুস্তাকিম তাসিম ৩ দিনের রিমান্ড এবং অতিরিক্ত চিফ চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ার আদালত নগরের চান্দগাঁও থানায় ৩ দিন এবং পাঁচলাইশ থানার মামলায় ২ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এছাড়াও ফজলে করিমকে নগর ও জেলার আরও পাঁচ মামলায় শুনানি শেষে গ্রেফতার দেখান আদালত।
চট্টগ্রাম জেলা কোর্ট পরিদর্শক জাকের হোসাইন জানান, ফজলে করিমকে নিরাপত্তাজনিত কারণে আদালতে হাজির করা হয়নি। ভার্চুয়ালি শুনানি শেষে আদালত তার রিমান্ড মঞ্জুর ও নতুন মামলায় গ্রেফতার দেখান।
ফজলে করিমের আইনজীবী এএইচএম জিয়া উদ্দিন জানান, ফজলে করিমকে অসুস্থতা ও নিরাপত্তাজনিত কারণে আদালতে হাজির করা হয়নি। আদালতে হাজির না করে ভার্চুয়ালি শুনানি করা যায় আদালতে আবেদন করা হয়েছে।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হারুন আদালত ২ দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। গত ২৪ সেপ্টেম্বর কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হয়।
রাউজানে মুনিরীয়া যুব তবলিগ কমিটির ইবাদতখানা ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের দুই মামলা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ব্যক্তিদের ঘটনায় পাঁচলাইশ ও চান্দগাঁও থানার দুই মামলা এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহসম্পাদক নুরুল আলম হত্যার ঘটনায় চকবাজার থানার মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
পরে ফজলে করিমকে প্রিজন ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়ার সময় বিক্ষুব্ধ লোকজন ডিম ছুড়ে মারেন। এ সময় তার ফাঁসির দাবিতে তাঁরা স্লোগান দিতে থাকেন।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙে দিলে সংসদ সদস্য পদ হারান ফজলে করিম চৌধুরী। হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। এরপর গত ১২ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে গ্রেফতার করা হয় তাকে।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীকে একটি হেলিকপ্টারে করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কারাগার থেকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়।