বরিশাল অফিস: প্রেমের সম্পর্কে দুই মাস পূর্বে প্রেমিক নয়ন সরদারের হাত ধরে পালিয়ে বিয়ে করেছিলো ১৮ বছরের মুমু আক্তার। পরবর্তীতে উভয় পরিবার তাদের বিয়ে মেনেও নিয়েছিলেন। কিন্তু দিন দিন বেপরোয়া হয়ে ওঠে নয়ন সরদার।
যৌতুকের দাবিতে নববধূ মুমু আক্তারকে চাঁপ প্রয়োগ করে আসছিলো নয়ন। বিভিন্ন সময় মুমু আক্তার তার দিনমজুর বাবার কাছ থেকে বেশ কিছু টাকা এনে দিয়েছিলেন স্বামী নয়নের হাতে। সর্বশেষ নয়নের দাবিকৃত যৌতুকের এক লাখ টাকা বাবার বাড়ি থেকে আনতে অপারগতা প্রকাশ করায় মুমু আক্তারকে শারিরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে মুমু আক্তারকে হত্যা করে বাথরুমের আড়ার সাথে লাশ ঝুলিয়ে রেখে এলাকায় আত্মহত্যার অপপ্রচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নিহত মুমু আক্তারের বাবা ও তার স্বজনরা। ঘটনাটি ঘটেছে জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার রতনপুর গ্রামে।
সোমবার দুপুরে নিহত মুমু আক্তারের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানিয়েছেন মুমু আক্তারের দিনমজুর বাবা তাহের শেখ।
তিনি বলেন, তার মেয়ে মুমু আক্তার প্রেমের সম্পর্কে গত দুই মাস পূর্বে একই গ্রামের মৃত খোকন খানের ছেলে নয়ন সরদারের হাত ধরে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয় ইউপি সদস্যর মধ্যস্থতায় তারা এ বিয়ের সম্পর্ক মেনে নিয়েছিলেন। কিন্তু বিয়ের পর বিভিন্ন সময় নয়ন তার কাছ থেকে বেশ কিছু টাকা নিয়েছে। সর্বশেষ এক লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। ওই টাকার জন্য প্রায়ই তার মেয়েকে শারিরিকভাবে নির্যাতন করা হতো। তাহের শেখ অভিযোগ করেন, গত ১৭ সেপ্টেম্বর সকালে তার মেয়ে মুমু আক্তারকে হত্যা করে নয়ন ও তার পরিবারের সদস্যরা লাশ বাথরুমের আড়ার সাথে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যার কথা রটিয়ে দেয়।
অভিযোগ অস্বীকার করে নয়ন সরদারের স্বজনরা জানিয়েছেন, দাম্পত্য কলহের কারণে অভিমান করে মুমু বাথরুমের আড়ার সাথে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। আগৈলঝাড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ মাজহারুল ইসলাম জানিয়েছেন, বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।
এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই মামলায় নিহতের স্বামী নয়ন সরদারকে গ্রেপ্তার করে সোমবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। ওসি (তদন্ত) আরও বলেন, ময়নাতদন্তের রির্পোট হাতে পাওয়ার পর বিষয়টি হত্যা না আত্মহত্যা তার আসল রহস্য জানা যাবে।