বরিশাল অফিস : গত কয়েকদিন থেকে বরিশালের ফিলিং স্টেশনগুলোতে কালো রংয়ের ডিজেল বিক্রি করা হচ্ছে। এতে ডিজেলে ভেজাল করার অভিযোগ করেছেন বাস ও ট্রাকের চালকরা। তবে ডিলার ও ডিপো সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, রংয়ের তারতম্য ঘটলেও তেলে কোনো সমস্যা নেই।
বাস ও ট্রাক চালকদের অভিযোগ, অতিরিক্ত কালো রংয়ের ডিজেল বিক্রি করা হচ্ছে বরিশালের বেশ কয়েকটি ফিলিং স্টেশনে। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন তুর্য্য ফিলিং স্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্তরা জানিয়েছেন, গত চারদিন পূর্বে পদ্মা অয়েল কোম্পানির ডিজেল পুরোটাই কালো রংয়ের ছিলো। তাই তারা আর পদ্মা থেকে তেল না এনে মেঘনা ডিপো থেকে ডিজেল এনেছেন। নগরীর রূপাতলী হাউজিং সংলগ্ন ডোস্ট ফিলিং স্টেশনও গত দুইদিন পর্যন্ত পদ্মার তেল গ্রহণ করেনি। তারপরেও তাদের ডিজেলের রং হালকা কালো দেখা গেছে। ডোস্ট ফিলিং স্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্তরা জানিয়েছেন, এই হালকা কালোটাই ডিজেলের রং করা হয়েছে।
নগরীর অধিকাংশ ফিলিং স্টেশনের মালিকদের অভিযোগ, পদ্মা ডিপোর ডিজেলে প্রায়ই এ জাতীয় সমস্যা হয়। কখনো লালচে, কখনো সাদা, কখনো গভীর কালো হচ্ছে ডিজেলের রং। সেই সাথে মাপেও কম দেয়া হয়। অভিযোগে আরও জানা গেছে, একটি ট্যাংক লড়িতে নয় হাজার লিটার তেল থাকার কথা। যা সাধারণ ফিলিং স্টেশনের জন্য যথেষ্ট। কিন্তু অনেক সময়ই পরিমাপে কম পাওয়া যায়। একই অভিযোগ ফিলিং স্টেশনের বিরুদ্ধে গাড়ির চালকদের। ইতোমধ্যে মাপে কম দেয়ার কারণে বরিশালের বেশ কয়েকটি ফিলিং স্টেশনকে জরিমানা করেছে বিএসটিআইয়ের ভ্রাম্যমাণ আদালত। ফিলিং স্টেশনের মালিকদের দাবি, আমরা ডিপো থেকে ওজনে কম তেল পেলেও গ্রাহকদের কখনো কম দেইনা।
ডিজেলের রং কালো হলেও তেলে কোন সমস্যা নেই জানিয়ে পদ্মা অয়েল কোম্পানির বরিশাল ডিপোর ম্যানেজার মোহাম্মদ লোকমান হোসেন বলেন, গত ১৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম থেকে আসা বার্জটির তেলের কালার কালো রংয়ের ছিলো। তবে এটা কেন হয়েছে তা আমরা জানিনা। তিনি আরও বলেন, এখানে শুধু উত্তোলন ও সরবরাহ করা হয়। প্রতিদিন গড়ে দুই থেকে আড়াই লাখ লিটার ডিজেল সরবরাহ করা হয়। বুধবার তা কমে ৭৫ হাজার লিটার হয়েছে। এটা অবশ্য গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির কারণে হয়েছে।
লোকমান হোসেন আরও বলেন, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন বিপিসি সরাসরি বিদেশ থেকে এই তেল আমদানি করে। চট্টগ্রাম থেকে এটি তিনটি কোম্পানি রিফাইন করে পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা নামের কোম্পানিকে তা সরবরাহ করে। পদ্মা শুধু ডিজেল সরবরাহ করে। মেঘনা ও যমুনা সবগুলোই সরবরাহ করে। কালার পরিবর্তন হলেও তেলের মানে কোনো সমস্যা নেই জানিয়ে তিনি আরও বলেন, মাপে কমবেশি বিষয়টির জন্য আমরা কখনোই দায়ী না। এটা ট্যাঙ্ক লড়ির চালকদের কারসাজি হতে পারে। ডিজেলে ভেজাল করার কিছু নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ডিজেলে নয়; অকটেন বা পেট্রোলে ভেজাল করা সম্ভব।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন বিপিসি’র বিপণন বিভাগের পরিচালক অনুপম বড়-য়া বলেন, বরিশাল পদ্মা অয়েল কোম্পানি সম্পর্কে আগেও আমরা অভিযোগ পেয়েছি। এবার ডিজেলের রং পরিবর্তনের অভিযোগ বরিশাল সেনাবাহিনী থেকেও আমাদের কাছে এসেছে। এটা পদ্মা অয়েল কোম্পানির সমস্যা, নাকি এটি রিফাইন করে যে প্রতিষ্ঠান তাদের সমস্যা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।