শিরোনাম

২৩৫ বছরেও কোন নারী মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়নি, কেন

Views: 12

চন্দ্রদ্বীপ নিউজ::১৭৭৬ সালে যুক্তরাজ্যের কবল থেকে স্বাধীনতা অর্জন করে যুক্তরাষ্ট্র। সেই থেকে আজ প্রায় আড়াইশো বছর পার হয়েছে। কিন্তু এখনো কোনো নারী প্রেসিডেন্টের মুখ আমেরিকা দেখতে পায় নি। অর্থ, ক্ষমতায় বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর রাষ্ট্র হয়েও কেন দেশটির নারীরা পিছিয়ে আছে তা অনেককেই বিস্মিত করে।

নারীর ক্ষমতায়ন ও লিঙ্গসমতা নিয়ে ব্যাপক সরব যুক্তরাষ্ট্রে এখনও কোনো নারী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হননি। অথচ ইউরোপের অনেক দেশেই নারী হয়েছেন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান। এত প্রগতিশীল হয়েও মার্কিনদের কেন রক্ষণশীল মনোভাব, প্রশ্ন বিশ্বজুড়েই।

মার্কিন নির্বাচনে নারীদের এই পিছিয়ে পড়ার কারণ হিসেবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, এখনও নারীর নেতৃত্ব মেনে নেওয়ার অবস্থায় আসেনি আমেরিকার জনগণ। তবে আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে নারী নেতৃত্বকে মেনে নেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। তার প্রমাণ, এরই মধ্যে ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে রেকর্ড করেছেন কমলা হ্যারিস।

২০২৪ সালের বহুল প্রতীক্ষিত মার্কিন প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করছেন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির মনোনীত প্রার্থী কমলা হ্যারিস।

মূলত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আমেরিকায় নারীদের কাজ করার তেমন সুযোগ ছিল না। ষাটের দশকে নারী আন্দোলনের পর থেকে পরিস্থিতির পরিবর্তন শুরু হয়। তবে তখনও যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে নারী উপস্থিতি বাড়েনি।

১৯৭৭ সালে করা এক মার্কিন জরিপ অনুযায়ী, ৫০ শতাংশ জনগণ মনে করেন নারীরা আবেগি সিদ্ধান্ত নেয় দেখে তাদের রাষ্ট্রপরিচালনায় না আসাই ভালো।
এরপর মার্কিন রাজনীতিতে নিজেদের অবস্থান জানান দিতে মার্কিনি নারীদের লড়াই চলতে থাকে। তবে বড় পরিবর্তন আসে ২০০৮ সালে। ওই বছর ডেমোক্রেটিক হিলারি ক্লিনটন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়াইয়ের ঘোষণা দেন। তিনি পুরুষদের মতো প্রচার চালাতে থাকেন। বিশ্লেষকেরা বলছেন, সব যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও কেবল নারী হওয়ায় বিদ্বেষের শিকার হন হিলারি।

হিলারির পর এবার নারী নেতৃত্বের অগ্নিশিখা হয়ে হাজির হয়েছেন কমলা হ্যারিস। জুলাইয়ে নির্বাচনি বিতর্কে ট্রাম্পের কাছে জো বাইডেনের হেরে যাওয়ার পর আমেরিকান জনগণের ভোট পেতে মাঠে নামেন কমলা। তার বিশ্বাস, এবার একজন নারী প্রেসিডেন্টকেই বেছে নেবে মার্কিনিরা। আর এমনটা হলে, কমলা হবেন দেশটির ইতিহাসে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট।

তবে এখনো পর্যন্ত পুরুষদের কাছে ভোটে এগিয়ে আছে ট্রাম্প। তবে আমেরিকার রাজনীতিতে রক্ষণশীল মনোভাবের কারণে পুরুষদের তুলনায় নারীদের ক্ষমতা এবং দক্ষতা সম্পর্কে জনসাধারণ, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও গণমাধ্যমের কাছ থেকে নেতিবাচক ধারণার মুখোমুখি হতে হয়। লিঙ্গবৈষম্য, রাজনীতিতে সীমিত অংশগ্রহণ এবং তাদের যোগ্যতার অবমূল্যায়নের কারণে পুরুষদের তুলনায় নারীদের প্রেসিডেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, আমেরিকার রাজনৈতিক ব্যবস্থায় অন্যান্য দেশের তুলনায় জনপ্রিয়তার প্রতিযোগিতা বেশি, যা নারীদের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করে।মূলত দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে ভোট গণনা নারীদের ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে ওঠে। জার্মানি, যুক্তরাজ্যের মতো সংসদীয় ব্যবস্থা থাকলে যুক্তরাষ্ট্রেও নারী নেতৃত্ব এগিয়ে যেতো।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *