পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার স্থানীয় বাসিন্দারা প্লাস্টিক রিসাইক্লিং কারখানার বিষাক্ত পানি ও শব্দ দূষণের বিষয়ে অভিযোগ করেছেন। স্থানীয় শাকিল, সুলতান মৃধা, জব্বার, ইউসূফ, শেফালি, কোহিনুর ও আখিনুরসহ একাধিক বাসিন্দা জানান, রান্নার পানি, গোসলের কাজে ব্যবহৃত খালে কেমিক্যাল যুক্ত বিষাক্ত পানি মিশে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এছাড়া বিভিন্ন রোগবালাই ছড়িয়ে পড়ছে গ্রামে।
বিষাক্ত পানির কারণে ফসলের জমির উর্বরতা কমে গেছে। দিনে রাতে প্লাস্টিক কুচি করার মেশিনের বিকট শব্দে ঘুম ও পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটছে। কোনো দুর্ঘটনার সংবাদ বা বিপদে পরে একজন অন্যজনকে ডাকলেও কিছু শোনা যায় না। শব্দে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে যাওয়ার অবস্থা শিশু ও বৃদ্ধদের মধ্যে। প্লাস্টিকের বর্জ্য পোড়ানোর কালো ধোঁয়া পরিবেশ ও বায়ু দূষণ করছে। এলাকায় বেড়ে গেছে হাঁপানি, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগবালাই। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণে মশা মাছির উপদ্রব বেড়ে গেছে। ডেঙ্গুজ্বর সহ বিভিন্ন অসুখে ভুগছেন অনেকে।
স্থানীয় বাসিন্দারা আবাসিক এলাকায় প্লাস্টিক রিসাইক্লিং কারখানা বন্ধ করে নির্দিষ্ট জায়গা বরাদ্দ দিয়ে জনস্বাস্থ্য, প্রকৃতি, পরিবেশ ও ফসল রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে এলাকাবাসী গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে মেসার্স লিমন প্লাস্টিক কারখানার মালিক আলা আমিন বলেন, “পরিবেশ অধিদপ্তরে ছাড়পত্র ও ট্রেড লাইসেন্স সবকিছু ওকে করে আমি ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান চালিয়ে যাচ্ছি। মানুষের ভালো মন্দ মিলিয়ে কারখানা চালাতে হয়।” তার পরিবেশ ছাড়পত্র ও ট্রেড লাইসেন্সে দেখা যায়, ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য লাইসেন্স আনা হয়েছে, কিন্তু বর্তমানে সেখানে কারখানা খুলে বসেছে আল আমিন।
স্থানীয়দের অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার পরে বিষয়টি তদন্ত করার জন্য একজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমি নিজেও সরেজমিনে কারখানাটি পরিদর্শন করে দেখবো। মানুষের ক্ষয়ক্ষতি ও পরিবেশ রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো”। তিনি দ্রুত বিষয়টি সমাধান করবেন বলেও জানান।
পরিবেশ অধিদপ্তর পটুয়াখালীর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আসাদুজ্জামান মুঠোফোনে বলেন, “পরিবেশগত ছাড়পত্র পাওয়ার পরে কোন কারখানা যদি পরিবেশ দূষণ করে, তাদের দ্বারা মানুষের ক্ষতি হয়, তাহলে পরিবেশ অধিদপ্তর ব্যবস্থা নিবে”।