শিরোনাম

সংস্কারের অভাবে বরগুনার ইকোপার্কের বেহাল দশা

Views: 25

রক্ষণাবেক্ষণ আর সংস্কারের অভাবে বরগুনার তালতলী উপজেলার সংরক্ষিত বনে প্রতিষ্ঠিত সোনাকাটা ইকোপার্কটি বেহাল হয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে ভাঙা রাস্তা ও নির্মাণাধীন সেতু ফেলছে ভোগান্তিতে। এতে আগ্রহ হারাচ্ছেন দর্শনার্থীরা।

বন বিভাগ সূত্র জানা যায়, ইকো-ট্যুরিজম সুযোগ বৃদ্ধি শীর্ষক কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশ সরকারের বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অধীনে টেংরাগিরি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের সখিনা বিটে ২০১০-১১ ও ২০১১-১২ অর্থবছরে ২ কোটি ৬৩ লাখ ১৩ হাজার টাকা ব্যয়ে ৬৩৪ একর জমির ওপর ৯৬ হাজার ৬০০ টাকা ব্যয়ে একটি ইকোপার্ক প্রতিষ্ঠা করা হয়।

এ সময় বনের ভেতরে পর্যটকদের জন্য বনভোজনের স্থান, চলাচলে বনের ভেতরে ছোট ছোট খালের ওপর ১৬টি কাঠের সেতু, ৪টি গভীর নলকূপ, ৪টি শৌচাগার, ৪টি বিশ্রামাগারসহ ইটের সাড়ে ৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে সড়ক নির্মাণ করা হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠার ১২ বছর পার হলেও এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের দৃশ্যমান সংস্কার করা হয়নি।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, টেংরাগিরি ইকোপার্কের প্রবেশদ্বারে দীর্ঘদিন ধরে সেতুর নির্মাণকাজ বন্ধ থাকায় ঘুরতে আসা পর্যটকরা পড়ছেন ভোগান্তিতে। কিছু পর্যটক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ডিঙি নৌকায় পারাপার হলেও কেউ কেউ ফিরে যাচ্ছেন। পার্কে চলাচলের সুবিধার্থে ছোট ছোট খালের ওপর নির্মিত সেতুগুলো পারাপারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কের ইট উঠে যাওয়ায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

গভীর নলকূপ অকেজো, শৌচাগারের দরজা-জানালা ও বেসিন ভেঙে পরিত্যক্ত পড়ে আছে। বন্যপ্রাণীদের থাকার স্থানের চারপাশে নির্মিত লোহার গ্রিলে মরিচা ধরে ভেঙে পড়ে রয়েছে। দেয়ালের পলেস্তারাও খসে পড়েছে। ইকোপার্কের ভেতরে কুমির প্রজনন কেন্দ্রের অবস্থাও ঝুঁকিপূর্ণ। এ ছাড়া বনের ভেতরে চিতা বাঘ, হরিণ, শূকর, অজগর, কুমির, কাঠবিড়ালী, বানরসহ বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী হুমকিতে রয়েছে।

ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা পর্যটক শামীম হোসেন বলেন, এ ইকোপার্কে আসতে হলে একটি বড় খাল ডিঙি নৌকায় পারাপার হতে হয়। এতে ঝুঁকি রয়েছে। এ ছাড়া বন্যপ্রাণীদের জন্য নির্মিত বেষ্টনী নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি বেষ্টনী দেয়াল হেলে পড়েছে। এ কারণে এই পার্কে পযর্টকদের সংখ্যা কমছে।

ওয়াটার কিপার্স বাংলাদেশের (তালতলী-আমতলী) সমন্বয়ক ও পরিবেশকর্মী আরিফ রহমান বলেন, ইকোপার্কটিতে একসময় বিপুলসংখ্যক পর্যটক ঘুরতে আসত। কিন্তু অব্যবস্থাপনা ও অবহেলার কারণে পর্যটনকেন্দ্রটি পর্যটকদের আগ্রহ হারাচ্ছে। এতে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। তাই বর্তমান সরকারের এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

ভোলা থেকে ঘুরতে আসা পর্যটক সাজ্জাদ মিয়া বলেন, পার্কের ভেতরে পরিবেশ খুবই বেহাল। হাঁটার সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় খুব কষ্ট করতে হয় পর্যটকদের। খাবার পানির ব্যবস্থা নেই, শৌচাগার বেহাল। এসব কারণে পর্যটকদের আগ্রহ হারাচ্ছে।

এ বিষয়ে বন বিভাগের তালতলী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মতিয়ার রহমান বলেন, ইকোপার্ক সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করি দ্রুত বাস্তবায়ন হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালমা বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি, ইকোপার্কটি পরিদর্শন করে পর্যটনবান্ধব করার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

মো: তুহিন হোসেন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *