অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের নতুন উপদেষ্টাদের কাজ দেখে জনগণকে বিচার করার আহ্বান জানিয়েছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।
বুধবার বিকেলে টাঙ্গাইলের সন্তোষে ‘মওলানা ভাসানী ও নতুন বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তৃতাকালে তিনি বলেন, “নতুন যাদের উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, আশা করি বাংলাদেশের জনগণ তাদের কাজ দেখে মূল্যায়ন করবেন। যদি কোনো অভিযোগ ওঠে, আমরা তা খতিয়ে দেখবো। আমরা বিশ্বাস করি, নতুন উপদেষ্টারা জনগণের পাশে থাকবেন এবং কাজের মাধ্যমে তাদের যোগ্যতা প্রমাণ করবেন।”
তিনি আরও বলেন, “মওলানা ভাসানী আমাদের অনুপ্রেরণা। তার দেখানো পথ অনুসরণ করেই আমরা এগিয়ে যেতে চাই। তার স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য আমাদের সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।”
সভায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, “দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই আমরা একাধিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছি। দেশে দীর্ঘদিন ধরে একটি ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যা মানুষের মননে গভীরভাবে প্রোথিত। এটি একদিনে বা দশ বছরেও নির্মূল করা সম্ভব নয়। পুরো একটি প্রজন্মকে এই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “১৯৭২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা এতটাই গভীরে শিকড় গেড়েছে যে আমরা কেবলমাত্র উপরের অংশটুকু কেটে ফেলতে পেরেছি, শেকড় এখনও রয়ে গেছে। মওলানা ভাসানী আমাদের সেই শিক্ষা দিয়েছেন যে, কীভাবে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।”
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, “এদেশের ইতিহাসকে বারবার বিকৃত করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু আমরা সেই মিথ্যা ইতিহাসের দেয়ালে প্রথম আঘাত করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা বলেছি, এই দেশে কোনো একক জাতির পিতা নেই; বরং আমাদের অনেক ফাউন্ডিং ফাদার্স রয়েছে। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী। আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সামনে বাংলাদেশের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরতে চাই।”
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন কবি ও লেখক ফরহাদ মজহার। সভায় প্রবন্ধ পাঠ করেন ভাসানী পরিষদের সদস্য সচিব আজাদ খান ভাসানী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আনোয়ারুল আজীম আখন্দ। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ভাসানী ফাউন্ডেশনের মহাসচিব মাহমুদুল হক সানু, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সরোয়ার তুষার, অলিক মৃ, এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সংগঠকরা।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন মাসুদুর রহমান। সভায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ঘোষণা দেন, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিজয় মিছিলে গুলিতে নিহত স্কুলছাত্র মারুফের নামে টাঙ্গাইল স্টেডিয়ামের নামকরণ করা হবে।
মো: তুহিন হোসেন,
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম,