অবশেষে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. বশির গাজীকে বদলি করা হয়েছে। তার স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন বরগুনার বেতাগী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফারুক আহমেদ। বুধবার (১৩ নভেম্বর) রাতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ তথ্য গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করা হয়।
বরিশাল বিভাগীয় কমিশনের কার্যালয়ের সংস্থাপন শাখা থেকে ইউএনও মো. বশির গাজীর বদলির আদেশ জারি করা হয়েছে। এর আগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে দুইবার তাকে ঢাকার বিভাগীয় কমিশনের কার্যালয় ও ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনের কার্যালয়ে ন্যস্ত করা হলেও অদৃশ্য কারণে সেই আদেশ স্থগিত হয়েছিল।
সম্প্রতি বাউফল উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরা এক সংবাদ সম্মেলনে মো. বশির গাজীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ধরেন। সংবাদ সম্মেলনে ১৩ দফা দাবি উপস্থাপন করেন তারা, যেখানে ইউএনওর বিরুদ্ধে বাজার মনিটরিং না করা, চাঁদাবাজি বন্ধে নিরব ভূমিকা পালন করা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বাণিজ্য, এবং জেলেদের চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ করা হয়েছে।
আব্দুর রশিদ সরদার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক সেলিম রাজা অভিযোগ করেন, “মাউশির দুই দফা তদন্তে আমার প্রতিষ্ঠান প্রধানের নিয়োগ অবৈধ প্রমাণিত হওয়া সত্ত্বেও ইউএনও বশির গাজী তাকে পদে বহাল রাখেন। প্রতিবাদ করলে আমাকে চাকরিচ্যুত করার হুমকি দেন।”
বাউফল রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান মিলন অভিযোগ করেন, “ইউএনও মো. বশির গাজী বিভিন্ন সরকারি বিজ্ঞাপনের বরাদ্দ নিয়ে পক্ষপাতিত্ব করেছেন। এতে স্থানীয় সাংবাদিকদের মধ্যে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।”
বাউফল উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক মুনতাসীর তাসরিপ বলেন, “অবশেষে তার বদলি হওয়ায় এলাকাবাসীর মাঝে স্বস্তি ফিরেছে। তার মতো দুর্নীতিগ্রস্ত নির্বাহী অফিসার বাউফলে আগে কখনো আসেনি।”
৩৫তম বিসিএস ক্যাডারের মো. বশির গাজী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৬-০৭ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন। ছাত্রজীবনে তিনি অমর একুশে হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত।
বদলির আদেশ সম্পর্কে জানতে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও সদ্য বিদায়ী ইউএনও মো. বশির গাজী কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।