দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ জীবনের কোনো না কোনো সময়ে কোমর ব্যথায় ভুগে থাকেন। এটি হতে পারে স্বল্পমেয়াদি বা দীর্ঘমেয়াদি। সঠিক চিকিৎসা ও নিয়ম মেনে চললে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই ব্যথা দ্রুত উপশম হয়। তবে অবহেলা করলে সমস্যা জটিল আকার ধারণ করতে পারে।
কোমর ব্যথার কারণ
কোমরের ব্যথা সাধারণত বয়স, বংশগত সমস্যা, বা আঘাতের কারণে হতে পারে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি কারণ হলো লাম্বার স্পনডোলাইসিস। এটি বয়সের কারণে কোমরের হাড় ক্ষয়ে যাওয়ার ফল। এছাড়া পিএলআইডি (পোস্টারিওর লম্বার ইন্টারভেন্ট্রাল ডিস্ক) নামের সমস্যাটি ২৫-৪০ বছর বয়সীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। ডিস্ক সরে গিয়ে স্নায়ুর ওপর চাপ ফেললে এটি কোমর থেকে পায়ে ব্যথা ছড়িয়ে দিতে পারে।
সতর্ক সংকেত
কোমর ব্যথার সঙ্গে যদি নিচের লক্ষণগুলো দেখা দেয়, তবে তা অবহেলা করা উচিত নয়:
কোমর ব্যথার পাশাপাশি জ্বর, ওজন হ্রাস বা অতিরিক্ত ঘাম।
ব্যথা পায়ের দিকে ছড়িয়ে পড়া।
প্রস্রাব বা পায়খানার সমস্যা।
মলদ্বারের আশপাশে বোধশক্তি কমে যাওয়া।
পায়ে অবশ ভাব বা মাংসপেশির দুর্বলতা।
করণীয়
প্রাথমিক পর্যায়ে কোমর ব্যথা নিয়ন্ত্রণে রাখতে যা করবেন:
শক্ত ও সমান বিছানায় ঘুমান।
ফোমের বিছানা ও নরম সোফায় দীর্ঘক্ষণ বসা এড়িয়ে চলুন।
ভারী জিনিস তোলার সময় কোমরে চাপ না দিয়ে সঠিক ভঙ্গিতে তুলুন।
নিয়মিত হাঁটাহাঁটি বা হালকা ব্যায়াম করুন।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
ঘুম থেকে ওঠার সময় সোজা হয়ে ওঠার পরিবর্তে কাত হয়ে উঠুন।
চিকিৎসা ও ফিজিওথেরাপি
হালকা ব্যথা হলে প্রাথমিক চিকিৎসায় গরম ভাপ বা মলম ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে মালিশ করবেন না। ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হলে অর্থোপেডিকস বা ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। ব্যথার জন্য ফিজিওথেরাপি কার্যকর হলেও সঠিক নির্দেশনা মেনে নেওয়া জরুরি।
ওষুধের সঠিক ব্যবহার
ব্যথানাশক ওষুধ সেবনের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন কোনো ওষুধ নেই যা মাংসপেশি শক্তিশালী করতে পারে। সুতরাং, ওষুধের পরিবর্তে সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করাই শ্রেয়।
লেখক- অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুস সালাম, অর্থো সার্জন, নিটোর, ঢাকা।
“মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম”