শিরোনাম

 বরিশালে রাতের আঁধারে অবৈধ বালু উত্তোলন, ‘ওপেন সিক্রেট’ বলছেন ব্যবসায়ীরা

Views: 8

বরিশাল শহরের কীর্তনখোলা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে ড্রেজারের মাধ্যমে, যা রাতের আঁধারে আরও বাড়ছে। এ কারণে নদী ভাঙনের আশঙ্কায় ভুগছেন স্থানীয়রা। অভিযোগ রয়েছে যে, এই বালু উত্তোলন কার্যক্রম এক প্রভাবশালী চক্রের হাতেই চলছে, যারা দিনের আলোতে নয়, বরং রাতের অন্ধকারে নদী থেকে বালু উত্তোলন করছে। তবে এই চক্রটি সম্পর্কে স্থানীয়দের বক্তব্য, এটি একটি ‘ওপেন সিক্রেট’, অর্থাৎ সবার জানা হলেও কিছু করা যাচ্ছে না।

২০২২ সালে জেলা প্রশাসন কীর্তনখোলা নদীর বালু মহাল বন্ধ করে দিয়েছিল, তবে গত ৫ আগস্টের পর আবারও বালু উত্তোলন শুরু হয়েছে। স্থানীয়রা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন, যদি এই অবৈধ বালু উত্তোলন কার্যক্রম বন্ধ না হয়, তাহলে নদী ভাঙন বাড়বে এবং অনেক বাড়িঘর নদী গর্ভে চলে যাবে।

চরকাউয়া এলাকার বাসিন্দা রহিমা বেগম বলেন, “নদীতে রাতের আঁধারে বালু উত্তোলন করায় আমাদের বাড়িঘর নদীতে বিলীন হতে চলেছে। এই চক্রের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কিছু বললে তারা মারধরও করে।”

আরেক বাসিন্দা রবিউল ইসলাম জানান, “বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে যতই বাঁধ দেয়া হোক, তা কার্যকর হবে না। নদী ভাঙন নিয়ে আমরা খুবই আতঙ্কিত।”

এদিকে, বালু ব্যবসা এখন জমজমাট হয়ে উঠেছে নদীর দুই পাড়ে, যেখানে প্রতিটি ফুট বালু বিক্রি হচ্ছে বাজার দরের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি দামে। যদিও ব্যবসায়ীরা ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি নয়, কিন্তু তারা জানান, বিষয়টি একটি ‘ওপেন সিক্রেট’ হয়ে উঠেছে। একাধিক বালু ব্যবসায়ী জানান, “আমরা বালু কিনে ব্যবসা করি, তবে যারা বালু উত্তোলন করছেন, তারা অত্যন্ত শক্তিশালী।”

ড্রেজার শ্রমিকরা বলেছেন, “যদি বালু উত্তোলনের বিষয়ে মুখ খুলি, তবে আমাদের সমস্যায় পড়তে হবে।” তবে সজল সিকদার, বাংলাদেশ কার্গো-ট্রলার-বাল্কহেড শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক, বলেন, “যারা বালু উত্তোলন করছে তাদের অধিকাংশের কাগজপত্র নেই এবং তারা রাতের আঁধারে বালু উত্তোলন করছে। প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।”

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের কেউ ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হয়নি, তবে বরিশাল সদর নৌথানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সনাতন চন্দ্র সরকার আশ্বাস দিয়েছেন, শিগগিরই বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বরিশাল জেলার ১০টি উপজেলায় বর্তমানে তিনটি এলাকায় বালু মহাল ইজারা দেয়া হয়েছে, বাকেরগঞ্জ, বানারীপাড়া ও বাবুগঞ্জে।

মো: তুহিন হোসেন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *