ভোলার স্বাস্থ্যসেবা এখন এক ভয়ানক সিন্ডিকেটের কবলে। বিশেষ করে ২৫০ শয্যার ভোলা জেনারেল হাসপাতালকে কেন্দ্র করে অ্যাম্বুলেন্স মালিক-চালকদের দৌরাত্ম্য ক্রমেই বাড়ছে, যার ফলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং রোগীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, সরকারি হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালকরা নিজেদের ব্যক্তিগত অ্যাম্বুলেন্স পরিচালনা করছেন এবং এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তারা রোগীদের কাছ থেকে অস্বাভাবিক ভাড়া আদায় করছে।
সম্প্রতি একটি সড়ক দুর্ঘটনায় আহত বোরহানউদ্দিন উপজেলার মুমূর্ষু রোগী জসিম বিশ্বাসকে ভোলা জেনারেল হাসপাতালে আনা হয়। চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন। তবে, অ্যাম্বুলেন্স চালকরা রোগীটির স্বজনদের ১৮ হাজার টাকা দাবি করেন। প্রথমে ১২ হাজার টাকায় অ্যাম্বুলেন্স ঠিক করা হলেও, সিন্ডিকেটের চাপে সে গাড়িটি ফিরে যায় এবং শেষ পর্যন্ত ১৮ হাজার টাকায় রোগীকে ঢাকায় নিয়ে যেতে বাধ্য হন। তবে সেখানে গিয়ে অ্যাম্বুলেন্স চালক আরও ১০ হাজার টাকা দাবি করেন।
জসিমের চাচা অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী অভিযোগ করেন, অ্যাম্বুলেন্স চালক সাজিদ রোগীর স্বজনদের জিম্মি করে ১৯ হাজার টাকা আদায় করেছেন এবং আরও টাকা না দেওয়ায় মাকসুদ নামে আরেক চালক তাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ভোলার সরকারি হাসপাতালের কয়েকজন চালক জানান, তারা প্রায় সবাই ব্যক্তিগতভাবে অ্যাম্বুলেন্স পরিচালনা করেন এবং এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত। তারা বিপদগ্রস্ত রোগীদের দুরবস্থার সুযোগ নিয়ে অল্প সময়ে অনেক টাকা আদায় করছে।
এ বিষয়ে ভোলা সদর হাসপাতালের চালক মিলন জানান, অ্যাম্বুলেন্স চালকদের খরচের কথা বিবেচনা করে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়, তবে তা কখনোই অতিরিক্ত হওয়া উচিত নয়। তিনি আরও বলেন, বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে এবং যদি কিছু অনিয়ম পাওয়া যায়, তবে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভোলার সিভিল সার্জন ডা. মু. মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য প্রতিরোধে শিগগিরই পদক্ষেপ নেওয়া হবে এবং সাধারণ মানুষকে এই ভোগান্তি থেকে মুক্ত করা হবে।
মো: তুহিন হোসেন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম