শিরোনাম

বরিশালে ব্যস্ততা বেড়েছে লেপ-তোশক কারিগরদের

Views: 21

শীতের আগমনে বরিশালে লেপ, তোশক এবং জাজিম তৈরির কাজ বেড়ে গেছে। শীতের সঙ্গে সঙ্গে এই পণ্যগুলোর কদর বেড়ে যাওয়ায় কারিগররা ব্যস্ত সময় পার করছেন। নগরীজুড়ে লেপ-তোশকের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় জমেছে। কেউ তৈরি হওয়া লেপ-তোশক কিনছেন, কেউ অর্ডার দিয়ে যাচ্ছেন, আবার অনেকে পুরনো লেপ-তোশক মেরামতও করাচ্ছেন।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বরিশালের বিভিন্ন এলাকায়—পদ্মাপতি, রূপাতলী, বাংলা বাজার, নতুন বাজার, মরখোলা পোল, বটতলা, বাবুগঞ্জসহ বিভিন্ন বাজারের লেপ-তোশকের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় দেখা যাচ্ছে। দোকানিরা ক্রেতাদের বিভিন্ন মানের কাপড় ও তুলা দেখাচ্ছেন এবং অর্ডার নিচ্ছেন। কারিগররা তাদের নিপুণ হাতে সুই-সুতো নিয়ে বিভিন্ন সাইজের লেপ, তোশক ও জাজিম তৈরি করছেন। এসব দোকানে কর্মযজ্ঞ চলছে সকাল ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। তবে, নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লেপ-তোশক তৈরির উপকরণের দামও বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবারের শীতে লেপ, তোশক ও জাজিম তৈরির জন্য কাপড় এবং তুলার দাম বেশ বেড়েছে। প্রতি গজ লেপ তৈরির কাপড়ের দাম ৪৫-৫০ টাকা, তোশকের প্রতি গজ কাপড়ের দাম ৪৬-৪৮ টাকা এবং জাজিম তৈরির কাপড়ের দাম ১৫০-১৮০ টাকা পর্যন্ত রাখা হচ্ছে। এছাড়া, প্রতি কেজি কার্পাস তুলার দাম ১৮০-২০০ টাকা, পোলি তুলার দাম ১২০-১৩০ টাকা, উলের দাম ৫৫-৬০ টাকা এবং প্রতি কেজি জুটের দাম ৩৫-৪০ টাকা। এ বছর এক পিস রেডিমেট লেপ বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ থেকে ২৭০০ টাকার মধ্যে, তোশক বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ থেকে ২৫০০ টাকার মধ্যে এবং জাজিম বিক্রি হচ্ছে ৩৫০০ টাকা থেকে ৪২০০ টাকার মধ্যে। এছাড়া, বালিশ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে।

নগরীর পদ্মাপতি এলাকার কারিগর সাকিব বলেন, “আমি ১০ বছর ধরে এ কাজ করে আসছি। প্রতিবছরের মতো এবারও শীতের আগে আমাদের ব্যস্ততা বেড়েছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ক্রেতাদের লেপ-তোশক তৈরির কাজ চলে।”

বাবুগঞ্জের আমিরগঞ্জ বাজারের আনোয়ার বেডিং স্টোরের কারিগর আনোয়ার গাজী বলেন, “আমি প্রায় ১৫ বছর ধরে এই বাজারে লেপ-তোশক তৈরির কাজ করি। আমরা দুই জন মিলে প্রতিদিন গড়ে ১০টি লেপ-তোশক তৈরির অর্ডার শেষ করতে পারি।”

কারিগররা জানান, একটি লেপ তৈরি করতে আকারভেদে ১২০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা এবং তোশক তৈরি করতে প্রতিজন ১৫০-৩০০ টাকা মজুরি পান।

ক্রেতা আব্দুর রহিম বলেন, “এবার বেশি শীত হতে পারে। তাই আগে লেপ তৈরির জন্য দোকানে গিয়ে অর্ডার দিচ্ছি। আমরা গরিব মানুষ। কম্বলের যে দাম, সেটা কেনার সামর্থ্য নেই। এ কারণে অল্প টাকা দিয়ে লেপ বানিয়ে নিচ্ছি।”

আরেক ক্রেতা মো. ইউসুফ বলেন, “দিনের বেলায় শীত অনুভূত না হলেও রাতে শীতের তীব্রতা বাড়ে। কাঁথা দিয়ে শীত নিবারণ হয় না। এ জন্য পরিবারের সদস্যদের জন্য ২টি লেপ বানিয়ে নিচ্ছি। এতে মোট খরচ পড়েছে ৫ হাজার ২০০ টাকা।”

এ ব্যাপারে নগরীর রূপাতলী এলাকার আর এস ট্রেডার্সের মালিক মো. রনি হোসেন বলেন, “শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কাজের চাপ বাড়ছে। আমাদের দোকানে নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত বেশ কাজের চাপ থাকে। এ সময়টায় ক্রেতারা লেপ-তোশকের অর্ডার দেন, আর আমরা যত্নসহকারে তা সরবরাহ করি।”

মো: তুহিন হোসেন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *