ভোলার চরফ্যাসন উপজেলার দুলারহাট থানার নুরাবাদ ইউনিয়নে এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। চার বছর বয়সী শিশু আবদুর রহমানের নিখোঁজ হওয়ার দুই দিন পর, তার লাশ বাড়ির পাশের পরিত্যক্ত পুকুরে ভেসে ওঠে। ছেলে হারিয়ে মা আছিয়া বেগমের বুকফাটা কান্না আর বিলাপ শোনার পর উপস্থিত সবাই শোকাবহ হয়ে পড়েন।
আছিয়া বেগম বলেন, “আল্লায় আমার বুকের ধনরে কাইড়া নিছে। আমি এহন কি নিয়া বাঁচমু, পোলাডারে কাইড়া নিয়া আল্লা কি সাজা দিল আমারে…” কান্নায় ভেঙে পড়া আছিয়া তার ছেলের লাশ উদ্ধার করার পর আর কিছু বলতে পারেননি। ঘটনাটি হৃদয়বিদারক ছিল, বিশেষত তার ছোট্ট ছেলে আবদুর রহমানের মৃত্যুর পর মায়ের কষ্ট ছিল অপুরণীয়।
আবদুর রহমানের বাবা আমির হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে তার স্ত্রী আছিয়া বেগমকে নিয়ে ছেলেকে একটি অসুস্থ আত্মীয়কে দেখতে নিয়ে যান। তবে কিছুক্ষণ পরই আবদুর রহমান নিখোঁজ হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে পরিবারের সদস্যরা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন, এবং শনিবার তার লাশ পুকুরে ভেসে ওঠে। ধারণা করা হচ্ছে, খেলার সময় শিশুটি পুকুরে পড়ে গিয়ে মৃত্যু বরণ করেছে।
আবদুর রহমানের লাশ বাড়িতে আনার পর আছিয়া তার হারানো সন্তানের কবরের কাছে বিলাপ করতে থাকেন, “তোরা আমার বুকের ধনরে আইন্না দে। কে আমারে মা কইয়া ডাকব। পোলাডা কোলে উঠতে চাইছিল, লই নাই। এক্কেবারে চইলা গেল পোলাডা আমারে ছাইড়া।”
বাবা আমির হোসেন জানান, “ওইদিন সকালে পোলাডারে কোলে নিয়া আদর কইরা কামে যাই। কাম থেইক্কা আইসা আর পোলাডারে পাইলাম না। পোলাডারে কাইড়া নিয়া আল্লা কি সাজা দিল আমারে?” বলেই তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। দ্রুত তাকে সেবা দিতে তার স্বজনরা ছুটে আসেন।
দুলারহাট থানার ওসি আরিফ ইফতেখার জানান, পুকুর থেকে লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ তদন্ত করেছে এবং শিশুর শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পানিতে পড়ে মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
মো: তুহিন হোসেন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম