শিরোনাম

পটুয়াখালীতে স্বামীর নির্যাতনে তিন সন্তানের মায়ের অসহায় জীবন

Views: 11

এক যুগের বৈবাহিক সম্পর্কের পর তিন সন্তানসহ স্ত্রীকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার বাসিন্দা বশির খান। এই নির্যাতিত নারীর নাম সুলতানা সুরমা। তার দুই মেয়ে—মরিয়ম জান্নাতি (চতুর্থ শ্রেণি) ও জামিলা আক্তার (প্রথম শ্রেণি), এবং ছোট ছেলে জুবায়ের। বর্তমানে সুরমা বাবার বাড়িতে আশ্রিত হয়ে অসহায় জীবনযাপন করছেন। সন্তানদের শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

সুরমার অভিযোগ, স্বামীর পরকীয়ার কারণে তাদের সংসারে অশান্তি শুরু হয়। প্রবাস থেকে ফিরে আসার পর বশির খান তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালান। যৌতুকের জন্য চাপ প্রয়োগের পাশাপাশি একাধিকবার মারধরের শিকার হন তিনি। কয়েক মাস আগে গুরুতর আহত হয়ে তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। এই সুযোগে বশির তার প্রেমিকাকে ঘরে তোলে এবং সুরমাকে তালা মেরে বাড়ি থেকে বের করে দেন।

২০১২ সালে উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের খাজুরা গ্রামের রত্তন খানের ছেলে বশির খানের সঙ্গে বিয়ে হয় সুলতানা সুরমার। শুরুতে তাদের সংসার ভালোই চলছিল। ২০১৯ সালে বশির উপার্জনের জন্য বিদেশে পাড়ি জমান। প্রবাসে থাকাকালীন সুরমা জানতে পারেন, বশির পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েছেন। দেশে ফেরার পর এ বিষয়ে প্রতিবাদ করলে বশির তাকে মারধর করতে শুরু করেন। শ্বশুরবাড়ির কাছে বিষয়টি জানালে তারা কোনো সমাধান দেননি।

নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সুরমা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। এছাড়া, বশির খান পাল্টা অভিযোগ এনে সুরমার বিরুদ্ধে চুরির মামলা করেন। তবে পুলিশের তদন্তে এ অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।

নীলগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান শহীদ মাতুব্বর বলেন, “আমরা এ বিষয়ে মীমাংসার চেষ্টা করেছি। কিন্তু বশির বা তার পরিবার থেকে কোনো সঠিক কারণ জানানো হয়নি। শেষ পর্যন্ত তাকে আইনের সহায়তা নিতে বলেছি।”

সুরমা তার সন্তানদের নিয়ে বাবার বাড়িতে আশ্রিত। কিন্তু সন্তানদের ভবিষ্যত নিয়ে তিনি চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। তাদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেছে। তিনি সমাজ ও প্রশাসনের কাছে ন্যায়বিচার কামনা করেছেন।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম

 

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *