ঢাকাই চলচ্চিত্রের ইতিহাসে শক্তিমান অভিনেতা খলিল উল্লাহ খান এক অনন্য নাম। দীর্ঘ পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে খল চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকদের মুগ্ধ করে গেছেন তিনি। ছোট ও বড়পর্দায় তার অভূতপূর্ব উপস্থিতি, আট শতাধিক সিনেমায় অভিনয়, ও বিভিন্ন সম্মাননা অর্জন তাকে এ দেশের চলচ্চিত্রের অন্যতম প্রধান নায়কে পরিণত করেছে।
২০১৪ সালের ৭ ডিসেম্বর এই মহান অভিনেতা চিরবিদায় নেন। জীবদ্দশায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। মৃত্যুর পরও তার স্মৃতিচিহ্ন জীবন্ত করে রাখতে পরিবারের পক্ষ থেকে প্রতি বছর আয়োজন করা হয় দোয়া মাহফিল।
খলিল উল্লাহ খানের মেজ ছেলে মুসা খান জানান, “আমাদের বাবার পরিশ্রম ছিল অসাধারণ। প্রতিদিন সকালে অফিসে যেতেন এবং সন্ধ্যায় টিভির শুটিংয়ে। পরিবারের জন্য তার এই নিবেদন কখনো ভোলার নয়। কিন্তু তার মৃত্যুর পর চলচ্চিত্র জগত থেকে কেউ আমাদের খোঁজ নেয়নি। শুধু আলমগীর আঙ্কেলের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে।”
১৯৩৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ভারতের মেদিনীপুরে জন্ম নেওয়া খলিল উল্লাহ খান একাধারে ছিলেন টিভি ও চলচ্চিত্রাভিনেতা। ১৯৫৯ সালে কলিম শরাফী ও জহির রায়হান পরিচালিত ‘সোনার কাজল’ সিনেমার মাধ্যমে তিনি চলচ্চিত্রে পা রাখেন। এরপর একের পর এক সফল সিনেমায় তার প্রতিভার ছাপ রেখে গেছেন। আলমগীর কুমকুম পরিচালিত ‘গুন্ডা’ সিনেমায় তার অভিনয়ের জন্য তিনি প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
চলচ্চিত্রের পাশাপাশি খলিলের টিভি নাটকেও ছিল অবিস্মরণীয় অবদান। আব্দুল্লাহ আল মামুন পরিচালিত ধারাবাহিক নাটক ‘সংশপ্তক’-এ ‘মিয়ার ব্যাটা’ চরিত্রে অভিনয় করে তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।
শক্তিমান এই অভিনেতার মৃত্যু বাংলাদেশের সংস্কৃতি অঙ্গনের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। তার অবদান চিরকাল শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে বাঙালি জাতি।
মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম