শিরোনাম

 বাংলাদেশে গুমের ঘটনায় ভারতের সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে কমিশন

Views: 7

বাংলাদেশে গুমের ঘটনা নিয়ে তদন্ত করতে গিয়ে ভারতের সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে একটি কমিশন। দুই দেশের বন্দি বিনিময়ের কার্যক্রম এবং আটক ব্যক্তিদের পরিণতি নিয়ে গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহকারী কমিশন তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে যে, বাংলাদেশে গুমের ঘটনায় ভারতের ভূমিকা একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সাবেক বিচারপতি মাইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে গঠিত পাঁচ সদস্যের কমিশন সম্প্রতি ‘সত্য উদঘাটন’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে হস্তান্তর করেছে। কমিশন জানায়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে জোরালো ইঙ্গিত রয়েছে যে কিছু বন্দি এখনও ভারতের জেলে থাকতে পারে।

কমিশন আরও জানায়, তারা পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে, যেন তারা ভারতের জেলে থাকা কোনো বাংলাদেশি নাগরিককে খুঁজে বের করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়। তবে, বাংলাদেশে এই বিষয়টি তদন্ত করার এখতিয়ার কমিশনের নেই।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে অপহৃত হয়ে ভারতীয় কারাগারে পৌঁছানো সুখরঞ্জন বালি এবং বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদের ঘটনা দুইটি বড় প্রমাণ সরবরাহ করছে যে, গুমের কার্যক্রম কীভাবে পরিচালিত হয়েছিল।

সালাহউদ্দিন আহমেদের বিষয়ে কমিশন জানায়, তাকে ২০১৫ সালে উত্তরায় লুকিয়ে থাকার সময় আটক করা হয় এবং তাকে একটি পরিত্যক্ত সেলে আটক রাখা হয়েছিল, যেখানে একটি গর্ত ছিল যা টয়লেট হিসেবে ব্যবহৃত হতো। তার দেওয়া কম্বলে ‘টিএফআই’ অক্ষরগুলো লেখা ছিল, যা ‘টাস্ক ফোর্স ফর ইন্টারোগেশন’-এর ইঙ্গিত বহন করে।

কমিশন পরিদর্শন করে নিশ্চিত করেছে যে, র‍‍্যাব গোয়েন্দা শাখা এখনও ওই স্থাপনার প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ করে এবং এর চাবি নিজেদের হাতে রাখে। তবে, ওই স্থাপনার অভ্যন্তরীণ অবকাঠামো সম্প্রতি ধ্বংস করা হয়েছে। কমিশন জানায়, ২০১০-১১ সালের দিকে এই কেন্দ্র পরিদর্শনকারী সেনা সদস্যদের সাক্ষাৎকার থেকে জানা গেছে, এক সময় এই স্থাপনায় অতিরিক্ত একটি তলা ছিল, যা বর্তমানে আর প্রবেশ করা যায় না।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বন্দী হস্তান্তরের আনুষ্ঠানিক প্রকৃতি এবং এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি ইঙ্গিত দেয় যে, দুই দেশের সরকারের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের সমন্বয়ের মাধ্যমে এই ঘটনা ঘটেছে।

কমিশন এই বিষয়ে আরও তথ্য সংগ্রহের অপেক্ষায় রয়েছে, তবে প্রাথমিকভাবে এটি সন্দেহ করা হচ্ছে যে, সালাহউদ্দিন আহমেদ বর্তমানে নষ্ট করে ফেলা সেলগুলোর একটিতে আটক ছিলেন। তাদের মতে, দুই দেশের মধ্যে বন্দী বিনিময় কার্যক্রমের মাধ্যমে গুমের ঘটনাগুলো আন্তর্জাতিকভাবে সংগঠিত এবং প্রাতিষ্ঠানিক প্রকৃতির।

মো: তুহিন হোসেন,
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *