বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি তারুয়া সমুদ্র সৈকত। লাল কাঁকড়ার বিচরণ এবং পাখিদের অভয়ারণ্য খ্যাত চরফ্যাশন উপজেলার ঢালচরের এই সৈকতটি বর্তমানে পর্যটকদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে পর্যটকদের বাড়তি ভিড় এবং নির্বিচারে তাদের যাতায়াতের কারণে এই সৈকতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ছে।
এই সৈকতটি প্রকৃতির এক অপূর্ব সৃষ্টি, যেখানে রয়েছে প্রশস্ত বালির সৈকত, সাগরের কোলাহল, এবং বিভিন্ন প্রজাতির পাখি ও লাল কাঁকড়া। তবে পর্যটকরা এখানে এসে শুধুমাত্র সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি লাল কাঁকড়া ধরার জন্য ধাওয়া করছেন, যা তাদের স্বাভাবিক বিচরণ ও প্রজননকে বাধাগ্রস্ত করছে। একইভাবে, পাখিরাও আর আগের মতো নির্বিঘ্নে বিচরণ করতে পারছে না। এতে করে প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে, এবং ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এই অঞ্চলটির জীববৈচিত্র্য।
এছাড়া, পর্যটকদের জন্য কোনো সরকারি বিধি-নিষেধ বা নির্দেশনা না থাকায়, তারা নির্বিঘ্নে এখানে ভ্রমণ করছেন এবং অনেকেই এখানে রাত্রী যাপনও করছেন। এতে করে সৈকতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অদূর ভবিষ্যতে আরও হুমকির মুখে পড়তে পারে। পরিবেশবিদদের মতে, এই ধরনের নির্ধারিত পরিকল্পনা ও নির্দেশনা না থাকলে, স্থানটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য হারিয়ে যেতে পারে।
তবে কিছু স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তারা কিছু ব্যবস্থা নিয়েছেন। ইউনিয়ন পরিষদের সহযোগিতায় সেখানে একটি ঘর স্থাপন করা হয়েছে, যেখানে পর্যটকরা নিরাপদে অবস্থান করতে পারেন। তবুও, সরকারি কোনো পরিকল্পনা বা পর্যটন এলাকাকে ঘোষণা না করলে দীর্ঘমেয়াদীভাবে এই সৈকতটির সৌন্দর্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হবে।
তারুয়া সমুদ্র সৈকত প্রকৃতির এক বিরল সৃষ্টি। তবে সরকারিভাবে এটিকে টুরিস্ট স্পট হিসেবে ঘোষণা করা হলে, এটি দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। তবে, এখনই এটি প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়ে পড়েছে এবং পর্যটকদের নিরাপত্তা ও প্রকৃতির সংরক্ষণে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন।
মো: তুহিন হোসেন,
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম