শিরোনাম

বরিশালে যে কারণে ২০২৪ ছিলো আলোচনার বছর

Views: 6

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতন, ভারসাম্যহীন বাজারদর, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, নৌ ও সড়ক পথের দুর্ঘটনা নিয়ে ২০২৪ সাল ছিলো বরিশালের আলোচনার বছর।

সরকার পতনের আগে জুলাই মাসে শুরু হওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দক্ষিণাঞ্চল তথা বরিশালে সবচেয়ে বেশি সরব ছিল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তবে সময়ের সাথে সাথে যৌক্তিক এ আন্দোলনে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও বরিশালের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা রাজপথে নামে, যাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছিলেন শিক্ষক ও অভিভাবকরা।

যদিও প্রকাশ্যে অস্ত্রধারীদের মহড়া ও একাধিক হামলার ঘটনা রাজপথে আন্দোলনকারীদের মধ্যে কিছুটা আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিলো। তবে শিক্ষার্থীদের কার্যক্রম কোনোভাবেই দমাতে পারেনি। কৌশলী আন্দোলনে পুলিশের বুলেট, টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেডের বিস্ফোরণ, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হামলার মধ্য দিয়ে বরিশালে কোনো নিহত হওয়ার ঘটনা না ঘটলেও আহত হয়েছেন অনেকেই।

সব মিলিয়ে ঐক্যবদ্ধ থেকে আন্দোলন অব্যাহত রেখে ৫ আগস্ট বরিশালের রাজপথসহ সর্বত্র বিজয় উল্লাসে মেতে ওঠেন ছাত্র-জনতা।

এরইমধ্যে গত ৩ সেপ্টেম্বর রাতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি ব্রজমোহন কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষে নগরবাসী কিছুটা আতঙ্কিত হয়ে পরেছিলেন।

রাজনৈতিক মামলা :
বছরের শুরুতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট বর্জন নিয়ে বিএনপির বরিশালের নেতাকর্মীরা যেমন মামলার শিকার হয়েছেন, তেমনি ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পাশে থাকায় হামলার শিকার হওয়ার পাশাপাশি জুলাইয়ে মামলার শিকার হন বিএনপির নেতাকর্মীরা।

অন্তর্র্বতী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হামলার ঘটনায় ২২ আগস্ট প্রথম মামলা দায়ের করেন মহানগর বিএনপির আহবায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক।

যে মামলায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী, দুইজন সাবেক সিটি মেয়র, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, এফবিসিআই’র পরিচালকসহ ১ হাজার ৮১ জনকে আসামি করা হয়।

এছাড়াও জেলার প্রতিটি উপজেলার সাবেক সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি এবং ওয়াকার্স পার্টির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওইসব মামলার অধিকাংশ আসামিদের গ্রেপ্তারের পর জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

যারমধ্যে বরিশাল-২, বরিশাল-৩, বরিশাল-৪, বরিশাল-৫ ও বরিশাল-৬ আসনে নিজ দলীয় বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থীদের হিমশিম খেতে হয় নির্বাচন নিয়ে।

বিদ্রোহীদের দমাতে বরিশাল সদর আসনে ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও তার কর্মী সমর্থকদের ওপর হামলা, বরিশাল-২ আসনে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও তার কর্মী সমর্থকদের ওপর হামলা, ১২টি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে ফেলার মতো ঘটনা ঘটিয়ে আলোচনার সৃষ্টি করেন নৌকার কর্মী-সমর্থকরা।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর উপজেলা ও পৌরসভার উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের ব্যাপক ভরাডুবির ঘটনাও ছিলো বরিশালজুড়ে আলোচিত।

এছাড়াও বছরজুড়ে আলোচনার মধ্যে ছিলো-বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে বা গোপনে রাজনৈতিক কর্মকান্ড না চালানো এবং বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের ঘোষণা ছিল উল্লেখযোগ্য।

“মো: তুহিন হোসেন,
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম”

 

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *