শিরোনাম

বরগুনার সম্ভাবনাময় শুঁটকি শিল্পে বাধার মুখে উন্নয়ন

Views: 9

বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলা দেশের অন্যতম প্রধান শুঁটকি উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। প্রতি বছর নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত শুঁটকি মৌসুম চলাকালীন, এখানে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা শ্রমিকরা ও স্থানীয় নারী-পুরুষরা পল্লিতে এসে কাজ করে থাকেন। কিন্তু, অবকাঠামোগত নানা সমস্যার কারণে শুঁটকি শিল্পের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষ করে অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে উৎপাদন খরচ বাড়ছে, যা ব্যবসায়ীদের আগ্রহ কমিয়ে দিচ্ছে।

বিভিন্ন জেলা থেকে আসা শ্রমিকরা প্রতিবছর তালতলীতে কাজ করতে আসেন এবং উপজেলা এলাকার আশারচর, সোনাকাটা, জয়ালভাঙ্গা ও ফকিরহাটসহ আরও কয়েকটি এলাকায় শুঁটকি তৈরির কাজ করেন। তবে, এখানে অবস্থানের জন্য যেভাবে অস্থায়ী ঘর নির্মাণ করা হয়, সেখানে পয়ঃনিষ্কাশনের সমস্যা ও টয়লেটের অভাব বড় এক সমস্যা হিসেবে দাঁড়িয়ে রয়েছে। বিশেষ করে, নারী শ্রমিকরা স্থায়ী টয়লেটের ব্যবস্থা না থাকায় বিপাকে পড়ছেন।

বরগুনার শুঁটকি বাজারে স্থানীয় পণ্যের চাহিদা ভালো, কারণ এতে কোনও কীটনাশক বা অতিরিক্ত লবণ ব্যবহার করা হয় না। এই মৌসুমে পুঁটি, শোল, ট্যাংরা, খলিশা, পাবদা, কই, শিং, মাগুর, মেনি, বৈরাগী এবং ফলি মাছের শুঁটকি জনপ্রিয়।

বর্তমানে, এখানে প্রতিকেজি শুঁটকি দাম ৪০০-১৫০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়, তবে প্রতিটি শুঁটকি পল্লি থেকে প্রতি সপ্তাহে ১০০-১৫০ মণ শুঁটকি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানো হয়। তদুপরি, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হলে শুঁটকি উৎপাদন এবং সরবরাহ আরো বাড়বে বলে জানান স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।

শ্রমিকরা জানান, বিশেষ করে নারীদের জন্য টয়লেটের ব্যবস্থা না থাকার কারণে তাদের প্রচুর অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। পিয়ারা বেগম, একজন মহিলা শ্রমিক, বলেন, ‘আমরা নারী-পুরুষ সমানভাবে কাজ করি, কিন্তু নারী শ্রমিকদের জন্য টয়লেটের ব্যবস্থা না থাকায় সমস্যা হচ্ছে।’

ওদিকে, পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন। মো. দুলাল নামের এক ব্যবসায়ী জানান, ‘খারাপ রাস্তার কারণে আমাদের আরও বেশি খরচ হয়। দু-তিন বছর ধরে আমাদের লোকসান হচ্ছে।’ তবে তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে সালমা আশ্বাস দেন, ‘এটা সমাধান করতে আমরা কাজ করছি, নারীদের জন্য পাবলিক টয়লেট এবং সুপেয় পানির ব্যবস্থা করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

বরগুনা জেলার মৎস্য কর্মকর্তা মো. মহসীন বলেন, ‘শুঁটকি পল্লির সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা কাজ করছি এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে।’

মো: তুহিন হোসেন,
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *